ভোটার কার্ডই নাগরিকত্বের প্রমাণ জানাল নির্বাচন কমিশন
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ দেশজুড়ে করোনা মহামারীর প্রকোপ চলছে। এসবের মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলো কিন্তু তাদের মত করে ঘুঁটি সাজাচ্ছে। বছর ঘুরতেই একুশের বিধানসভা নির্বাচন। তাই তার প্রস্তুতি চলছে ভেতরে ভেতরে।
শাসক এবং বিরোধী দুই শিবির এই একুশের নির্বাচনে বড় ইস্যু হতে চলেছে নাগরিকত্ব। কিছুদিন আগে পর্যন্ত সাধারণ মানুষের মধ্যে নাগরিকত্বের প্রমাণ পত্র জোগাড় করা নিয়ে একটা তৎপরতা দেখা যাচ্ছিল।
কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি তো বলেই দিয়েছিল ভোটার কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। আর একে কেন্দ্র করে সাধারণ নাগরিকের মধ্যেও একটা ভয় তৈরি হয়েছিল। তাহলে কি আবার বাংলার বুকে ছিন্নমূল হওয়ার আতঙ্ক দেখা যাবে।
নাগরিকত্বের সন্ধানে সাধারণ মানুষের স্থান হবে ডিটেনশন ক্যাম্প! করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই জনগণকে স্বস্তি দেবে একটা তথ্য-যা উঠে এসেছে এক আর টি আইয়ের মাধ্যমে।
রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী করা এক আবেদনে দেশের নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, ভারতীয় নাগরিকের নাগরিকত্বের প্রমাণ ভোটার কার্ড। অবশেষে এই নিয়ে সমস্ত জল্পনার অবসান হল।
ঘটনা হল,তথ্য জানার অধিকার আইনের অধীনে ভােটার পরিচয়পত্র নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রশ্নের জবাব চেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাণজিৎ দে নামে এক ব্যক্তি তার প্রশ্নের মূল বিষয় ছিল, ভােটার পরিচয়পত্র কি নাগরিকত্বের প্রমাণ হতে পারে ?
জবাবে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভারতের নাগরিক না হলে কেউ ভােটার পরিচয়পত্র পেতে পারেন না। তার মানে, কারও হাতে ভােটার পরিচয়পত্র থাকা মানেই তিনি যে ভারতীয় নাগরিক সেটা প্রমাণিত হচ্ছে।
ওই ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চান, একমাত্র ভারতীয় নাগরিকই কি দেশের সংসদীয় নির্বাচনে ভােট দিতে পারেন তার কি তথ্যপ্রমাণ রয়েছে? একমাত্র ভারতের নাগরিকই যে ভােটার পরিচয়পত্র পাবে তারই বা কী তথ্যপ্রমাণ রয়েছে?
লকডাউনের অবসরে বিমানবন্দরের আদলে বদলে যাচ্ছে কলকাতা স্টেশন
উত্তরে কমিশন জানিয়েছে, ভারতের সংবিধানের ৩২৬ নং অনুচ্ছেদে একজন ভারতীয় নাগরিককে ভােটার হিসাবে পঞ্জিভুক্ত হওয়ার কর্তৃত্ব দিয়েছে । কোনও লোক তখনই ভােটার হবে যখন তিনি নিজের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারবেন।
১৯৫০ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১৬, ১৭, ১৮ এবং ১৯ নং ধারা অনুযায়ী কারও ভােটাধিকার পরিবর্তন করাও সম্ভব। এদিকে এতদিন ভোটার কার্ড থাকার পরেও দেশ থেকে বিতাড়িত সহ এনআরসি করা হবে বলেও দাবি করলেও নির্বাচন কমিশন ভোটার কার্ডেই ভারতীয় নাগরিকত্বের পরিচয় বহন করার কথা বলতেই কার্যত ফাঁপড়ে পড়েছেন তারা।
পাশাপাশি নিজের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করে যিনি ভােটাধিকার পেয়েছেন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি উন্নীতকরণের প্রক্রিয়ায় তাঁর নাগরিকত্ব কী করে সংশয়ের মুখে ফেলা যায় কিংবা সন্দেহজন বিদেশি অ্যাখ্যা দেওয়া যায়? তা নিয়েও কার্যত প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, অসমে ভােটার তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও অসংখ্য মানুষকে বিদেশি অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে কিন্তু একজন অবৈধ কিংবা বিদেশি নাগরিক কী করে ভারতের ভােটাধিকার কিংবা ভােটার কার্ড পান? সেটা নিয়ে অবশ্য নির্বাচন কমিশন কোনও কিছু বলেনি।