এটিএম কার্ড থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা হাতানোর দায়ে গোয়েন্দাদের জালে পরিচারিকা ও তার দুই জামাই

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বৃদ্ধের অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে বেশ কয়েক মাস আগে এটিএম কার্ড হাতিয়ে নেয় বাড়ির এক পরিচারিকা। একইসঙ্গে বৃদ্ধের মোবাইল ফোন থেকে এটিএম কার্ডের পিন নম্বর জেনে ফেলে ওই পরিচারিকা।

আর সেই এটিএম কার্ড ব্যবহার করেই পরিচারিকার দুই জামাই হাতিয়ে নেয় ৩৫ লক্ষ টাকা। তবে প্রাথমিকপর্যায়ে এত বড় প্রতারণাকাণ্ডের কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি।

কিন্তু ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর পর তার ছেলে অনুরাগ আগরওয়াল বিষয়টি আঁচ করতে পারেন। এরপরেই কলকাতা পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন যাদবপুর থানায়।

প্রতারণা কাণ্ডটি টাকার অংকে অনেকটা বেশি থাকায় থানার পাশাপাশি প্রথম থেকেই ঘটনার সমান্তরাল তদন্ত শুরু করে দেয় লালবাজারের অ্যান্টি ব্যাংক ফ্রড শাখা।

তদন্তে নেমে পুলিশ অনুসন্ধান করে জানতে পারে অভিযোগকারী অনুরাগ আগরওয়ালের বাবার খোয়া যাওয়া এটিএম কার্ডটি কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, হুগলির গুপ্তিপাড়া এবং নদিয়ার করিমপুরের এটিএম কাউন্টারে ব্যবহার হয়েছে।

ওই এটিএম কাউন্টারগুলি থেকেই এটিএম কার্ড এবং সেই পিন নম্বর ব্যবহার করে ধাপে ধাপে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছে প্রতারকরা।

এর পরেই লালবাজারের গোয়েন্দারা কিছু সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে দেখেন প্রতারণাকাণ্ডের প্রমাণ লোপাট করতে এটিএম কাউন্টারে অভিযুক্তরা মাস্ক এবং টুপি পরে ঢুকেছিলো। যার জন্য তাদের চিহ্নিত করতে সমস্যায় পড়তে হয় পুলিশকে।

তবে গোয়েন্দাদের নজরদারির ও জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়ায় স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রঞ্জিত মল্লিক ও সৌমিত্র সরকার নামে দুজন বিভিন্ন সময় ওই এটিএমগুলি থেকে টাকা তুলেছে।

বক্তব্য পর্যালোচনা করুন, প্রশান্ত ভূষণকে আরও দু’দিন সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট

এরপর আর সময় নষ্ট না করে রঞ্জিত এবং সৌমিত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই ভেদ হয় গোটা এই প্রতারণা রহস্য।

অভিযুক্ত রঞ্জিত ও সৌমিত্র পুলিশকে তাদের দোষ কবুল করে জানায়, তার শাশুড়ি রিতা রায় তাদেরকে ওই এটিএম কার্ড টি হাতিয়ে এনে দেয় যাদবপুরের ওই বৃদ্ধ সত্যনারায়ণ আগরওয়ালের কাছ থেকে। যাকে দেখাশুনার কাজ করতেন রিতা রায়।

এতেই পুলিশের কাছে গোটা ঘটনাটি জলের মতো স্পষ্ট হয়ে যায়। যে রীতা রায় বৃদ্ধের দেখাশোনা করার সময় প্রথমে বৃদ্ধের মোবাইল থেকে এটিএমের পিন নম্বর জেনে ফেলে।

কারণ ঐ বৃদ্ধ মোবাইল ফোনে এটিএমের পিন নম্বর সেভ করে রেখেছিলেন। পড়ে সুযোগ বুঝে বৃদ্ধের এটিএম কার্ডটি চুরি করে নেয় ওই পরিচারিকা। পুলিশ অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উদ্ধার করে নগদ প্রায় ২৭ লক্ষ টাকা।

সম্পর্কিত পোস্ট