অর্থনীতির সঙ্কোচনঃ রেকর্ড হারে পড়ল জিডিপি
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কোভিডের কারণে দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো যে ভেঙে পড়বে সেটা বোঝাই গিয়েছিল। কিন্তু তার পরিসংখ্যান কতটা হবে সেবিষয়ে আন্দাজ করা যাচ্ছিল না।
চলতি আর্থিক বর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন অবধি জিডিপি -২৩.৯ শতাংশ। গত চার দশকে যা সমস্ত রেকর্ড অতিক্রম করেছে।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন কয়েকদিন আগে এক বৈঠকে বলেই দিয়েছিলেন করোনার কারণে অর্থনীতির সংকোচন হতে পারে । আর সেটাই প্রমাণ পাওয়া গেল সোমবার।
সরকারের বক্তব্য দেশে টানা দীর্ঘ সময় ধরে কলকারখানা বন্ধ ছিল এবং লকডাউনের কারণে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকায় তার সরাসরি প্রভাব অর্থনীতির ওপর পড়েছে।
প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, ২০১৯-২০ সালে জিডিপি প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে। তিনি আরও বলেন, মোদি সরকারের উদাসিনতার জন্য গোটা দেশকে এর ফল ভুগতে হচ্ছে। অর্থমন্ত্রীর উচিত এই কঠিন সময়ে চাষীদের ধন্যবাদ জানানো।
অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা শুধুমাত্র জুন অবধি নয় আগামী দিনেও জিডিপি সঙ্কোচন হতে থাকবে৷ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে জিডিপি ১২ থেকে ১৫ শতাংশ কমবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সেপ্টেম্বরে পূর্ব ঘোষণা মতোই পূর্ণ লকডাউন রাজ্যে
যদিও অর্থমন্ত্রকের দাবী আনলক পর্বের পর সমস্ত কলকারখানা খুললে এবং ব্যবসা বাণিজ্য শুরু হলে অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে। পরিসংখ্যান মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এপ্রিল থেকে জুন মাস অবধি কৃষি ছাড়া সমস্ত ক্ষেত্রেই আর্থিক সংকোচন হয়েছে৷
কৃষিক্ষেত্রে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৩.৪ শতাংশ। বাকি উৎপাদন শিল্পে ২৩.৩ শতাংশ, নির্মাণ শিল্পে ৫০ শতাংশ, হোটেল ও পরিবহন ক্ষেত্রে জিডিপি ৪৭ শতাংশ সংকোচন হয়েছে।
অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, শুধুমাত্র জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর নয়, অক্টোবর এবং ডিসেম্বরেও জিডিপির সংকোচন জারি থাকবে। তবে অর্থনীতি কিছু হলেও মন্দা কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে আশাবাদী অনেকেই।
শুধুমাত্র চলতি বছরেই নয়, গত অর্থ বছরের শেষে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস অবধি আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল ৩.১ শতাংশ। যা ১৭ বছরে সর্বনিম্ন। একটানা অর্থনৈতিক ঝিমুনির ফলে চলতি বছরেও সেই প্রভাব অর্থনীতিতে পড়েছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।
তবে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলির যৌথ উদ্যোগে একশো দিনের কাজ, খাদ্য সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ অর্থ মানুষের জীবনে স্বস্তি এনেছে। নয়তো এর ব্যাপক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়তে পারত।
যদিও অর্থনীতির কঠিন সময়ে কেনাকাটা একেবারে কমে গিয়েছে। ফলে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে একটা বড়সড় ধাক্কা সরকারগুলিকে পেতে হয়েছে।
অর্থনীতির বেহাল অবস্থার কারণে চাকরি হারাতে বসেছেন অনেকেই। সংগঠিত এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রে বেকারত্বের হার আরও বাড়তে পারে। এমনটাই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।