রাজ্যকমিটিতে বৈশাখী, শোভনের মান ভাঙাতে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত বদল বিজেপির !
সহেলী চক্রবর্তী
যতই নির্বাচন এগিয়ে আসছে ততই নতুন করে বিতর্ক মাথাচাড়া দিচ্ছে। এই মূহুর্তে বঙ্গ রাজনীতিতে সম্মুখ সমরে দুই যুযুধান রাজনৈতিক শিবির। তৃণমূল বনাম বিজেপি।
গরমাগরম রাজনৈতিক বক্তৃতা থেকে শুরু করে মাঠে নেমে কাজ তো আবার কখনও বাক যুদ্ধ থেকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়ই হোক। সবুজ বনাম গেরুয়া লড়াইয়ে ম্রিয়মান লাল শিবির।
এসবের মাঝেই আজ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা নবগঠিত বিজেপির রাজ্য কমিটি নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক সেরে ফেললেন। সেখানে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমন্ত্রিত ছিলেন বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। তবে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নাম স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য তালিকায় থাকলেও ছিল না বৈশাখী দেবীর নাম। রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা গেছে বৈশাখীদেবীকেও বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য করার কথা ভাবা হচ্ছে।
৮ সেপ্টেম্বর রাজ্য বিজেপির কর্মসমিতির তালিকা অনুমোদন করেছিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সাংবাদিক সম্মেলন করে সে কথা ঘোষণা করেছিলেন সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু।
তারপর থেকেই কাননের আকাশে বৈশাখীহীন কালো মেঘ জমতে শুরু করে। এমনকি সরাসরি শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন বিজেপির কর্মসমিতিতে তাঁর নাম রয়েছে একথা সংবাদমাধ্যম থেকে খবর পান। দলের তরফে কিছু জানানো হয়নি তাঁকে।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/rjd-leader-raghuvansh-prasad-singh-has-resigned-from-party-on-thursday/
সরাসরি তোপ দেগে বলেছিলেন সংবাদমাধ্যম দিয়ে একটা দল চলতে পারে না। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন সেদিন থেকেই উঠতে শুরু করে। তাহলে কী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না থাকায় খুশি হতে পারেননি শোভন বাবু। যদিও তার সদুত্তর মেলেনি।
তবে অতীতের কাহিনীর সঙ্গে যদি দৃশ্যপট মিলিয়ে দেখা যায় তাহলে ক্রমশ এই কারণটিই জোরাল হয়ে উঠছে। মুখ্যমন্ত্রীর সবথেকে আস্থাভাজন হয়েও বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের অপমানের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন শোভন বাবু।
শুধু তাই নয় এক নিমেষে রাজপাট ছেড়ে গুটিয়ে নিয়েছিলেন নিজেকে। একাধিকবার তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁর মানভঞ্জনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে।
অবশেষে বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। কিন্তু বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়েনি তাঁর।বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের একে অপরের সঙ্গে রঙ মিলিয়ে শাড়ি ও পাঞ্জাবি পড়া নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি কেউ।
দিলীপ ঘোষ সরাসরি তাদের ‘ডাল-ভাত’ বলে সম্বোধন করে বসেন। ব্যস। বান্ধবীর সম্মানে আঘাত লাগায় ফের নিজেকে অন্তরালে নিয়ে চলে যান শোভন চট্টোপাধ্যায়।
জলঘোলা হতে শুরু করে তাঁর রাজনৈতিক জীবন নিয়ে। তৃণমূলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় কোনো রকম শর্ত ছাড়াই শোভন বাবু দলে ফিরতে চাইলে তাঁকে স্বাগত। তবে একই সুর তুলেছিল বিজেপিও। তবে সেসব ভুলে কর্মসমিতিতে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম অন্তর্ভুক্তি কিন্তু অন্যরকম রাজনৈতিক সমীকরণ বাতলে দিচ্ছে।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/shovon-is-not-happy-to-get-a-seat-in-the-bjps-state-committee-what-exactly-is-he-looking-for/
ওয়াকিবহল মহলের মতে, ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে বিজেপি সাম্রাজ্যের আধিপত্য বিস্তার করতে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মত পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদের গুরুত্ব অপরিসীম। তা বুঝতে পেরেই রাজ্য বিজেপি তাই তড়িঘড়ি শোভন বাবুর মান ভাঙাতে নেমে পড়লেন। মুখে স্বীকার না করলেও তাদের কাজ অন্তত সেকথাই বলছে।
কারণ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বাজিমাত করতে প্রয়োজন শোভন বাবুর জনপ্রিয়তা এবং গ্রাসরুট লেভেল থেকে রাজনীতি করে উপরে ওঠা রাজনীতিবিদ। রাজ্য বিজেপিতে শোভন চট্টোপাধ্যায় ছাড়া আর কারও এই অভিজ্ঞতা নেই বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
তবে শেষ পর্যন্ত জল কোনদিকে গড়ায় বা বলা ভাল শোভন বাবুর মানভঞ্জনে বিজেপি সক্ষম নাকি তা উপযুক্ত সময় এলেই জানা যাবে।