মেরুকরণের রাজনীতি নয়, মানুষের জন্য কাজ করে তৃণমূল: পার্থ

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল সভা থেকে রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ‘হিন্দুবিরোধী’ আখ্যা দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগত্প্রনকাশ নড্ডা।একগুচ্ছ ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে ২০২১-এ তৃণমূলের সরকারকে ‘উপড়ে’ ফেলার ডাক দেন তিনি।

জবাবে তৃণমূলের তরফেও পাল্টা আক্রমণ করা হয় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিকে। তাঁর যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে রাজ্যের শাসক দল অভিযোগ করে ঘৃণার রাজনীতির ছড়াচ্ছে বিজেপি। ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে পরিকল্পিত মিথ্যাচার করছে তারা।

এদিন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, তৃণমূল মেরুকরণের রাজনীতি করে না। বরং আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। তোষণ নয়, আমরা মানুষের পাশে থাকি।

তিনি আরও বলেন, যারা রাজনীতি করার মিথ্যাচার করছেন তাদেরকে আগে একুশের পরীক্ষায় পাশ হতে হবে। তার পরেই তারা প্রথম আসবে কি লাস্ট আসবে ?

এদিন নাকতালায় বাসভবনে সংবাদিক সম্মেলনে করে বিজেপি সভাপতির সমস্ত অভিযোগের উত্তর দিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। লকডাউন থেকে শুরু করে মুসলিম তোষণ সব প্রশ্নেই সোজা সাপটা জবাব দিয়েছেন তিনি।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/kolkata-police-commissioner-anuj-sharma-affected-by-corona/

নাড্ডার অভিযোগ নস্যাৎ করে পার্থ এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন, তিনি কতটুকু খবর রাখেন? বা তাঁকে কতটুকু খবর দেওয়া হয়? পার্থর কথায়, আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, এই সরকার সকলের সরকার, এই সরকার খেটে খাওয়া মানুষের সরকার, কৃষকের সরকার, যুব-ছাত্রের সরকার, সরকারি কর্মচারীদের সরকার, রাজ্যের সর্বস্তরের মানুষের সরকার।’’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘হিন্দু-বিরোধী’ রাজনীতি করেন বলে যে মন্তব্য নড্ডা করেছেন, তার জবাবে পার্থ বলেন, এঁদের এ থেকে জেড পর্যন্ত সব নেতা একই ধরনের কথা বলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রাজনীতিটা করেন, তা সবাইকে নিয়ে এবং বাংলার যে সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, গণতান্ত্রিক অধিকার, তাকে সুরক্ষিত করার জন্য তিনি লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন।

পার্থর কথায়, আমরা মানুষের জন্য রাজনীতি করি। মানুষকে উপেক্ষা করার রাজনীতি আমরা করি না। এদিন লকডাউন নিয়ে করা বিজেপির আক্রমণের জবাবে পার্থ বলেন, ছাত্র ছাত্রীদের ও রাজ্যের মানুষের স্বাস্থ্যকে মাথা রেখেই মুখ্যমন্ত্রী ১২ সেপ্টেম্বর লক ডাউন প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করেছেন।বিজেপির মতো এই নিয়ে রাজনীতি করছেন না।

তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলার সবুজ সাথী বিশ্ব সেরা হয়েছে। বিজেপি নেতারা কী করেছেন বাংলার জন্য। এদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোলা মেরুকরণের অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়ে পার্থ বলেন, যাঁরা গণতন্ত্র রক্ষার কথা বলেন তাঁরাই সবচেয়ে বেশি সংবিধান ধ্বংস করছে । কাজেই সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। বরং বিজেপি বাংলার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরি করছে। রাজ্যকে টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। একের পর এক বকেয়া টাকা পড়ে রয়েছে। রাজ্যকে একটা টাকাও দিচ্ছে না তারা। যাঁরা নিজেদের গরিবের সরকার বলছেন তাঁরা সব বিক্রি করে দিচ্ছেন।

এদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চানার অভিযোগও তোলেন পার্থ। তিনি বলেন, এতো বঞ্চনার পরেও লকডাউনে রাজ্যের মানুষের একটা টাকাও কাটেনি রাজ্য সরকার। সরকারি কর্মীরা সঠিক সময়ে বেতন পেয়েছেন। রাজ্যের সব প্রকল্পের কাজ চলছে।

অন্যাদিকে, তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন। এইমস, রেশন ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে বিজেপির মিথ্যাচারের জবাব তথ্য উদ্ধৃতি করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রাজ্যে মানুষকে গণবন্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে খাবার দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রের দেওয়া চাল সেখানে পচছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাংলার মানুষকে আগামী জুন মাস পর্যন্ত বিনা পয়সায় খাবার দিচ্ছে। এর থেকে বোঝা যায় এই সরকার কতটা মানবিক।

তিনি আরও তথ্য দেন কোভিড পরিস্থিতিতে রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতালে বিনা পয়সায় চিকি‍ৎসা পাচ্ছেন রাজ্যের মানুষ। এছাড়া রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথীর সুফল পাচ্ছে সাড়ে সাত কোটি মানুষ।

তিনি এও বলেন, কেন্দ্র রাজ্যের ভালো কাজ দেখতে পাচ্ছে না, কারণ রাজনীতির জন্য রাজনীতি করতে চাইছে তাঁরা।

সম্পর্কিত পোস্ট