কৃষি বিল: রাজ্য সরকারকে ফের আক্রমণ রাজ্যপালের, পালটা রাজধর্ম মনে করাল তৃণমূল
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সোমবার কৃষিবিল নিয়ে নবান্নে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সকালেই পাল্টা তোপ দাগলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, কুমিরের কান্না কাঁদলে কৃষকদের দুর্দশা ঘুচবে না।
তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকারের জন্যই প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির ৮৪ হাজার কোটি টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের ৭০ লক্ষ কৃষক। নাহলে এতদিনে প্রত্যেক কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১২ হাজার টাকা করে জমা পড়ত।
এদিন রাজ্যপাল তিনটি টুইট করেছেন। প্রথম টুইটে অ্যাটাচ করেছেন একটি চিঠি। তাতে ডিয়ার চিফ মিনিস্টার বলে সম্বোধন করে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারের গড়িমসি ও অকর্মণ্যতার জন্য ৭০ লক্ষ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এই কঠিন সময়ে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির সুবিধা পাননি। রাজ্য সরকার যদি যথাসময়ে উদ্যোগ নিত, তাহলে কৃষকদের জন্য আসত ৮৪ হাজার কোটি টাকা। প্রত্যেক কৃষক তা থেকে ১২ হাজার টাকা করে পেতেন। পরে রাজ্যপাল বলেন, এই প্রকল্পের পুরো খরচ বহন করে কেন্দ্রীয় সরকার।
অর্থাত্ এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে গেলে রাজ্য সরকারের ওপরে বাড়তি ব্যয়ভার চাপত না। এই প্রকল্পের ব্যাপারে গড়িমসি করার কোনও কারণই থাকতে পারে না।
রাজ্যপাল চিঠিতে আরও লিখেছেন, সারা দেশের কৃষকরা প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি থেকে সুবিধা পেয়েছেন। বঞ্চিত হয়েছেন কেবল পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা।
রাজ্যপালের মতে, এখানেই শেষ নয়। অন্যান্য প্রকল্পের সুবিধা থেকেও এরাজ্যের কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি লিখেছেন, কোভিড অতিমহামারীর সময় কেন্দ্রীয় সরকার ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল। রাজ্য সরকার যদি যথাসময়ে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির সুবিধা নিত, তাহলে ওই প্যাকেজ থেকেও ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি পেতে পারতেন এরাজ্যের কৃষকরা।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/the-state-has-decided-to-increase-the-number-of-critical-care-beds-in-kavid-hospitals-to-reduce-mortality/
চিঠির শেষদিকে বলা হয়েছে, আমরা মনে করি, কৃষকরা আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তাঁরা যদি রাজ্য সরকারের অকর্মণ্যতার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন, তাহলে বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তাভাবনা করা উচিত। সোমবার রাজ্যসভা থেকে যে আটজন এমপিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আছেন তৃণমূলের ডেরেক ও ব্রায়েন ও দোলা সেন। রবিবার রাজ্যসভায় দু’টি কৃষি বিল পাশ করানোর সময় তাঁরা তুমুল বিক্ষোভ দেখান।
সোমবার রাতভর আট এমপি সংসদ চত্বরে অবস্থান করেছেন। তৃণমূল ঘোষণা করেছে, শীঘ্রই কৃষি বিলের বিরুদ্ধে তারা রাস্তায় নামবে। আর এই অবস্থাতে আবার বিজেপি নেতার সুরেই সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল।
এদিন রাজ্যপালের এই বক্তব্যের পর তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে বলা হয়েছে, রাজ্যপালের উচিত নিজ ধর্ম পালন করা। তা না করে রাজ্যপাল একটি নির্দিষ্ট দলের প্রতিনিধির মত আচরণ করছেন, যা ওই পদে বসে অন্তত রাজ্যের রাজ্যপালকে সোভা পায়না।
এ দিন তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, রাজ্যপাল অবশ্যই রাজ্যের অভিভাবক। দল হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেস এই পদকে সম্মান করে। কিন্তু দিনের পর দিন একটি নির্দিষ্ট দলের হয়ে রাজ্যপালের বক্তব্য তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়। রাজ্যকে কোনও উপদেশ দেওয়ার আগে রাজ্যপালের উচিত আগে নিজের ধর্ম স্মরণ করা।