বিজেপি নেতা মনীশ শুক্লা খুনে গ্রেফতার ২, উত্তাল রাজ্য রাজনীতি

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ব্যারাকপুরের বিজেপি নেতা মনীশ শুক্লাকে গুলি করে খুনের ঘটনায় রবিবার রাত থেকে সোমবার দিনভর উত্তাল থাকলো রাজ্য রাজনীতি। একদিকে এদিন পালিত হল ১২ ঘন্টার ব্যারাকপুর বনধ। যার জেরে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ, প্রতিবাদ কর্মসূচি, টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা আটকানোর ঘটনা।

একইসঙ্গে পুলিশকেও পরিস্থিতি আয়ত্তে রাখতে সক্রিয় থাকতে হয়। মোতায়েন রাখতে হয় বিশাল পুলিশ বাহিনীকে। কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে হয়।

অন্যদিকে, মনীশ শুক্লা মৃত্যুর পর তার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য এনআরএস হাসপাতালে আনা হয়। সেখানেও দিনভর চলে একের পর এক নাটকীয় ঘটনা। দুপুর থেকেই এনআরএসে হাজির হন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেনন, সব্যসাচী দত্ত, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন সিংহের মতো বিজেপি নেতারা।

তাঁদের সঙ্গে হাসপাতালে পৌঁছে যায় বিজেপির অনেক কর্মী-সমর্থকেরাও। পরিস্থিতি আঁচ করে ওই হাসপাতালে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়। প্রাথমিকভাবে মৃতের পরিবারের লোকজনকে শুধুমাত্র হাসপাতালে ঢুকতে দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়। তবে বিজেপি নেতাদেরও শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে ঢুকতে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ।

যার জেরে হাসপাতালের পরিষেবা ও অন্যান্য রোগী পরিবারকে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। শেষপর্যন্ত এদিন পৌনে ছটা নাগাদ হাসপাতাল থেকে মনীশ শুক্লার দেহ মৃতদেহবাহি শকট টিটাগড়ের উদ্দেশ্যে বের হয়। কিন্তু এখান থেকে নতুন আর একটি নাটকের শুরু।

বিজেপি নেতৃত্ব আচমকা ঠিক করে তারা মৃতদেহ নিয়ে রাজভবনে যাবেন। তারপরই তারা টিটাগড়ে দেহ ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। কিন্তু মণীশের দেহ রাজভবনে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পুলিশ দেয়নি। নিউমার্কেট থানার কাছে ব্যারিকেড দিয়ে বিজেপির সেই কাফিলা আটকায় পুলিশ।

নিউ মার্কেটের সামনে প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা, ধস্তাধস্তি চলতে থাকে। ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার অজয় ঠাকুরের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে রাজপথে নামেন।

বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে তিনি কথা বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেন, রাজভবনে কাফিলা নিয়ে যাওয়া যাবে না। কারণ রাজভবনে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। শেষ পর্যন্ত যুক্তি-পাল্টা যুক্তির পর ঠিক হয় বিজেপির একটি প্রতিনিধিদল রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবে।

সেইমতো প্রতিনিধিদলটি যায় রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে। সেখানে রাজ্যপালকে ঘটনার যথাযথ তদন্ত করার জন্য সিবিআই তদন্তের দাবি জানায়।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/fighting-with-jdu-from-nda-camp-what-is-the-strategy/

তাদের যুক্তি, ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ এই খুনের চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত। তাই রাজ্য পুলিশের তদন্তে তাদের আস্থা নেই। অন্যদিকে, মৃতদেহ নিয়ে ঘণ্টাখানেক নাটকের পর দেহ টিটাগরে চলে যায়। বেশিরাতের দিকে দেহ সৎকার করা হয়।

উল্লেখ্য রবিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ টিটাগর থানার অনতিদূরে মনিশ শুক্লাকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়। মোট নটি গুলি তার শরীরে লাগে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, এই বিজেপি নেতাকে খুন করার জন্য যে বা যারা মাস্টারমাইন্ড তারা সুপারি কিলার পাঠিয়েছিল। ওই কিলাররা দুটো বাইকে করে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।

এছাড়াও ভিড়ের মধ্যেও আততায়ীরা মিশে ছিল। তারাই মনির শুক্লার গতিবিধি সম্পর্কে আততায়ীদের খবর দেয়। এছাড়াও যাতে কোনওভাবে টার্গেট মিস না হয়। যা রীতিমতো যে কোনও হিন্দি সিনেমার শুটআউটের দৃশ্যের স্ক্রিপ্টকেও হার মানায়। এই খুনের ঘটনার তদন্ত করার জন্য সিআইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট