এই ঘটনা ইচ্ছাকৃত নয়, আমরা সব সম্প্রদায়কে সম্মান করিঃ রাজ্য পুলিশ
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যের পুলিশের হাতে শিখ সম্প্রদায়ের অপমানের ঘটনায় জাতীয় রাজনীতি উত্তাল। এবার এই বিষয় নিয়েই সরব হলেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং ও শিরোমনি অকালি দলের প্রধান সুখবীর সিং বাদল।
বৃহস্পতিবার ‘নবান্ন চলো’ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ গ্রেফতার করে বলবিন্দর সিং নামে এক পাঞ্জাবী যুবককে। তাঁর কাছ থেকে পিস্তল উদ্ধার হওয়ায় তাঁকে গ্রেতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের সময় পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তিতে তাঁর পাগড়িটি খুলে পড়ে যায়।
এই ঘটনাকে পাঞ্জাবী সমাজের অপমান বলে বিজেপির তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু হয়। বিজেপির তরফ থেকে বলা হয়, ওই ব্যক্তি ভাটিণ্ডার বাসিন্দা। এবং বন্দুকটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত তা সত্ত্বেও ওই ব্যক্তিকে হেনস্থা করার জন্য লাইসেন্স ওয়ালা পিস্তলটি যেমন কেড়ে নেওয়া হয়, তেমনই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে খুলে নেওয়া হয় ওই শিখ যুবকের পাগড়ি।
সেই ভিডিওটি দেশজুড়ে ভাইরাল করে দেওয়ার ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শিখ সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।
এই অবস্থায় পাঞ্জাবের কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংয়ের মিডিয়া উপদেষ্টা রবীন ঠুকরাল ট্যুইট করে এই ঘটনার সমালোচনা করেন।
তিনি লেখেন “পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং বলেছেন, এটা ঠিক হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে এক শিখ যুবকের গ্রেফতারির সময় তাঁর পাগড়ি খুলে ফেলা হয়েছে। ওই যুবকের মানহানির ঘটনায় স্তম্ভিত মুখ্যমন্ত্রী। এই কাণ্ড যিনি ঘটিয়েছেন সেই পুলিশকর্মী শিখ সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন করেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী।”
অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে শিরোমণি অকালি দলনেতা সুখবীর সিং বাদলও এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর কথায়, কোনও ধর্মকে আঘাত করে কোনও কাজ করা উচিত নয় প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের।
তিনি ট্যুইট করে বলেন, “শিখ দেহরক্ষী বলবন্দর সিংয়ের উপর পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের আক্রমণ ও তাঁর পাগড়ি খুলে নেওয়ার ঘটনার কড়া নিন্দা করি। এই ঘটনা গোটা বিশ্বের শিখ সম্প্রদায়কে খেপিয়ে তুলেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানাই।”
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/in-west-bengal-a-journalist-is-harassed-whenever-he-opens-his-mouth-against-the-grassroots-dilip-ghosh/
প্রসঙ্গত, বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রাতে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অফ স্পিনার হরভজন সিং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্যে ক্ষোভ জানিয়ে ট্যুইট করেন। ভারতীয় ক্রিকেটের টারবুনেটর একটি ট্যুইটকে রিটুইট করে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এটা কিন্তু ঠিক নয়। বিষয়টি দেখুন।” এরপরই তাঁর রাগ বোঝাতে কয়েকটি ক্রুদ্ধ হওয়ার ইমোজি দিয়েছেন তিনি।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর শুক্রবার রাতেই ট্যুইট করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। সেখানে লেখা হয়েছে, “ইচ্ছাকৃতভাবে পুলিশ ওই যুবকের পাগড়ী খুলে নেয়নি। ধস্তাধস্তিতে পাগড়ি খুলে যায়। ঘটনায় পুলিশের কোনও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিপ্রায়ে ছিল না।”
পুলিশের তরফে এও লেখা হয়, “পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সকল ধর্মকে সম্মান প্রদর্শন করে। অফিসার তাকে গ্রেপ্তারের আগে বিশেষভাবে তাঁর পাগড়ি পরে নিতে বলেছিলেন। থানায় নিয়ে যাওয়ার ঠিক আগেই সংযুক্ত ছবিটি সংগ্রহ করা হয়েছিল। রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”