কৃষ্ণা রায়কে দেখতে হাসপাতালে অভিষেক, সৌজন্য নাকি মুকুলের রং পরিবর্তনের ইঙ্গিত?
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হতেই পারে। হতেই পারেন রাজনীতির ময়দানে একে অপরের চিরশত্রু। তা বলে সৌজন্য হারিয়ে যাবে বাঙালির! তা আবার হয় নাকি।
ইয়াস বিধ্বস্ত সুন্দরবন ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা পরিদর্শনের পর মুকুল রায়ের অসুস্থ স্ত্রীকে দেখতে সোজা হাসপাতালে হাজির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো তথা যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুল রায়ের স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়ে তিনি কথাও বলেন মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের সঙ্গেও। কিন্তু কি কথা হল? রাজনৈতিক নাকি ব্যক্তিগত কথাবার্তা? তা অবশ্য জানা যাচ্ছে না।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে একমো সাপোর্টে রয়েছেন মুকুল রায়ের স্ত্রী কৃষ্ণা রায়। তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে আধ ঘন্টারও বেশি সময় হাসপাতালে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেসময় শুভ্রাংশু রায় হাসপাতালে উপস্থিত থাকলেও মুকুল রায় সেখানে ছিলেন না বলেই খবর।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই মুহূর্তে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির মানচিত্র থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন মুকুল রায়। করেননি প্রচার।
দেখা যায়নি বিরোধীদলকে নিশানা করে কোন জনসভা করতেও। বলা যেতে পারে একপ্রকার ব্যক্তিগত ক্যারিশমায় জিতে গিয়েছেন তিনি। তবে ঘাসফুলের ঝোড়ো ব্যাটিং-এ একেবারে ধুলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে পদ্ম শিবির।
বঙ্গ বিজেপির প্রথম সারির নেতৃত্বদের স্বপ্ন চুরমার করে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। কেন এমন ফলাফল হল তা নিয়ে বিশেষ মুখ খুলতে দেখা যায়নি মুকুল রায়কে।
তবে ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, বঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে বিজেপি যেভাবে ঘুঁটি সাজিয়েছিল তাতে পরাজয় নিশ্চিত একথা জানতেন মুকুল রায়। বারংবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের এরাজ্যে চলে আসা এবং জেলার নেতৃত্বদের কথা না শুনে প্রার্থী নির্বাচন করাই এরাজ্যে বিজেপির রথ আটকানোর প্রধান কারণ।
ইতিমধ্যেই শুভ্রাংশু রায় ফেসবুক পোস্ট ঘিরে নতুন করে তৈরি হয়েছে জল্পনা। মমতার সরকারের সমালোচনার পরিবর্তে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বদের আত্মসমালোচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এই পরিষ্কার আপ্তবাক্য তার সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট দেখলেই বোঝা যায়। যদিও দলবদলে জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন। তার আবার অনেকে তৃণমূলে ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আদৌ তাদের দলে নেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি তৃণমূল কংগ্রেস।
দলত্যাগী নেতাদের ঘর ওয়াপসির তালিকায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল, শুভ্রাংশু রায়ের পাশাপাশি উঠে এসেছে মুকুল রায়ের নাম। তার কারণ তৃণমূলে থাকাকালীন শুভেন্দু বনাম মুকুলের ঠান্ডা লড়াই কারোর অজানা ছিল না।
শুভেন্দু অধিকারীর কারণেই দল ছেড়েছিলেন মুকুল। একথা তৃণমূলের অনেক প্রথম সারির নেতাই স্বীকার করেছেন। তবে আগামী দিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বলে দেবে অভিষেকের সঙ্গে শুভ্রাংশু সাক্ষাৎ নিছক সৌজন্যমূলক নাকি মুকুলের রং পরিবর্তনের ইঙ্গিত।