পরিবারতন্ত্রের বিরোধীতায় দলছাড়া মুকুলকে ঘরে ফেরার কাণ্ডারী অভিষেক
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ প্রায় চার বছর। বিজেপিতে ছেড়ে ফের নিজের পুরনো দল তৃণমূলে ফিরে গেলেন মুকুল রায়। বিধানসভা ভোটের পর থেকে শুরু হওয়া জল্পনাকে সত্যি করে শুক্রবার ছেলে শুভ্রাংশুর হাত ধরে পুরনো দলে ফিরে গেলেন মুকুল।
বিজেপিতে কেন্দ্রীয় সহ সভাপতির মত গুরুত্বপূর্ণ পদ পেলেও কোনও দিন তেমন সক্রিয় হতে দেখা যায়নি তাঁকে। বরং সময়ে সময়ে তাঁর বেশ কিছু আচার আচরণ এবং ক্রিয়াকলাপ পুরনো দল সম্পর্কে নরম মনোভাবের ইঙ্গিত দিয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত।
ভোটের পর থেকে তা আরও গভীর হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে মুকুল রায়ের প্রত্যাবর্তন সংক্রান্ত ঘটনা প্রবাহ ঘিরে দিনভর আলাপ আলোচনা থাকলেও চমক ছিল না বললেই চলে। তাই মুকুল রায় ছেড়ে যাওয়ার পরে বিজেপিরও তেমন হেলদোল নেই।
তাঁর তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন যে সময়ের অপেক্ষা।এমনটা তাঁরা আগেই জানতেন বলে কেউ প্রকাশ্যে কেউ একান্তে জানিয়েছেন। বিজেপির রাজ্য নেতারা। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থানের প্রত্যক্ষ বিরোধীতা করে দল ছেড়েছিলেন মুকুল। এদিন তার হাতেই উত্তরীয় পড়ে দলে ফিরলেন মুকুল রায়।
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত থাকলেও মুকুল ও শুভ্রাংশুকে দলে ফেরানোর গোটা পর্বটির পরিচালনা করেছেন অভিষেক।
জলপাইগুড়ি বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ের ওপর হামলা
বিধানসভা ভোটে আগে থেকেই তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করছিলেন মুকুল। তলায় তলায় যোগাযোগ রাখছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে। শাসকদলের সঙ্গে তাঁর এই ঘনিষ্ঠতা গেরুয়া শিবিরের চোখ এড়ায়নি। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁকে দলে রাখার চেষ্টার কোনও কসুর করা হয়নি গেরুয়া শিবিরের তরফে।
তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর বৃহস্পতিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একান্ত গোপনে বৈঠকে করে তৃণমূলে ফেরার বিষয়টি চূড়ান্ত করেন তিনি। এরপর সকালে যখন মুকুল শিবিরের তরফে কৌশলে খবরটা সংবাদমাধ্যমে ভাসিয়ে দেওয়া হয় তখন তাঁকে বিরত করতে চান বিজেপির অনেক শীর্ষ নেতা।
কেন তিনি বিজেপি ছাড়তে চান? তবে মুকুল রায়ের তরফ থেকে কোনরকম ইতিবাচক সাড়া না মেলায় স্পষ্ট হয়ে যায় তিনি দল ছাড়ছেনই। ফলে বিষয়টি নিয়ে আর কোনওরকম ভাবে এগোতে চায়নি বিজেপি। সেই মতোই শুক্রবার দুপুরে আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দেন সপুত্র মুকুল।
এদিন তৃণমূল ভবনে প্রায় একই সময়ে পৌঁছন মুকুল রায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ একে একে আসেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো শীর্ষ নেতারা৷ মুখ্যমন্ত্রীর পিছন পিছনেই যোগদান মঞ্চে ওঠেন মুকুল রায়, শুভ্রাংশু ও অভিষেক। এরপরে মুকুল ও শুভ্রাংশুর গলায় দলীয় উত্তরীয় পরিয়ে দেন অভিষেক।
এদিন সন্ধ্যা বেলাতেই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মুকুল। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ত্যাগ করতে চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে চিঠিও দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। বিজেপি অবশ্য মুকুল রায়ের দল ত্যাগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। দলের শীর্ষনেতারা বিশেষ কোন মন্তব্য করতে চাননি।