পঞ্চায়েত ভোটে পূর্ব বর্ধমানের অনেক নেতার নাম কাটতে পারেন অভিষেক

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বাংলার শস্য ভাণ্ডার বলে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান জেলা। সুজলা সুফলা এই জেলায় শুধু চাষ হয় ভাবলে ভুল হবে। সৎপথে রোজগারের পাশাপাশি এই জেলায় ক্রমশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বালি খাদান চক্র। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তায় জেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসলেও বালি মাফিয়াদের একাংশ এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে গিয়েছে।

এই অবস্থায় যা হয়, শাসকদলের নিচুতলার নেতাদের কেউ কেউ এই বেআইনি কারবারে জড়িয়ে পড়েছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠছে। এই বেআইনি কারবারের ফলে গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে এক সমান্তরাল অর্থনীতি তৈরি হয়েছে

। এই নিয়ে আমজনতার অল্পবিস্তর ক্ষোভ‌ও আছে। কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে এগিয়ে এসেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে পঞ্চায়েত ভোটে জামালপুর, মন্তেশ্বর, আউশগ্রামে বেশকিছু তৃণমূল নেতার নাম কাটা যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

আউসগ্রাম পূর্ব বর্ধমান জেলায় হলেও সাংগঠনিকভাবে এই এলাকার দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া আছে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের হাতে। বিরোধীদের অভিযোগ এই যোগসাজশ ধরে বীরভূমের বালি ও পাথর পাচার চক্রের আনাগোনা বেড়েছে আউশগ্রামে। এখানকার বেশকিছু অনুব্রত ঘনিষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে দূর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ তথ্য-প্রমাণ সহ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছেছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর।

জানা গিয়েছে সমস্ত কিছু ব্যক্তিগতভাবে খতিয়ে দেখছেন অভিষেক। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় দুর্নীতিতে জড়িত অনুব্রত শিবিরের নেতাদের আর টিকিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। এমনকি নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে আইন মেনে পদক্ষেপের নির্দেশ‌ও দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।

Wheat : বন্ধ গম রপ্তানি, রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে প্রায় ১২০০ লরি

জামালপুর বিধানসভা কেন্দ্র বালি পাচারকে কেন্দ্র করে আড়াআড়ি বিভাজন ঘটেছে তৃণমূলের সংগঠনে। মুষ্টিমেয় কয়েকজন নেতা বেআইনি কারবারের জড়িত থাকলেও বাকিরা তার বিরোধিতা করছেন। সূত্রের খবর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্বচ্ছ ও সৎ ভাবমূর্তির নেতাদের সামনে এগিয়ে দিয়ে আগামী বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জামালপুরের লড়াই করবেন বলে ইতিমধ্যেই নির্দেশ পাঠিয়েছেন।

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মঙ্গলকোট থেকে সরিয়ে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে মন্তেশ্বরে প্রার্থী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  তিনি ভোটে জিতে আবারও রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছেন। কিন্তু সিদ্দিকুল্লার সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের একাংশের বিরোধের খবর অভিষেকের কাছে গিয়েও পৌঁছেছে।

অন্যরা ভরসার মর্যাদা দেননি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে হাল ধরলেন মমতা-অভিষেক

বিষয়টি তিনি ভালোভাবে নিচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই দুই পক্ষ বিরোধ মিটিয়ে নিতে না পারলে সম্পূর্ণ নতুনদের নেতৃত্বে মন্তেশ্বর এলাকার তৃণমূল লড়াই করতে পারে এমন সম্ভাবনা‌ও আছে।এছাড়াও গলসি, রায়না, খণ্ডঘোষ এলাকাতেও দলের নিচুতলার একাংশের বিতর্কিত কাজের খবর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এসেছে। তবে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সংগঠন অত্যন্ত মজবুত।

তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের আর প্রার্থী না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। কারণ সংগঠনে একবার ঘুঘুর বাসা তৈরি হলে তা ধীরে ধীরে গোটাটাই গিলে খেয়ে নেয়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলা নেতৃত্ব পরিবর্তনের সম্ভাবনাও আছে।

সম্পর্কিত পোস্ট