উত্তর-পূর্ব ভারতকে ঘাঁটি করে দেশের অভ্যন্তরীন রাজনীতি বদলে দেওয়ার পথে অভিষেক
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করার পরই নিজের লক্ষ্যের কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসকে যথার্থ সর্বভারতীয় দলে পরিণত করাই ছিল সেই লক্ষ্য। এর জন্য অন্যান্য রাজ্যে দলের বিস্তারে মন দেন তিনি।
গত এক বছরের ফলাফলে চোখ বোলালে পরিষ্কার হয়ে যাবে নিজের লক্ষ্যপূরণে বেশ ভালই এগিয়ে চলেছেন অভিষেক। যেভাবে এগুচ্ছে তাতে দ্রুত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে আগামীদিনে তৃণমূলের ঘাঁটিতে পরিণত করে ফেলতে পারেন।
তৃণমূলের পথ চলা শুরু হয়েছিল আঞ্চলিক দল হিসেবে। কিন্তু সময়ের ডাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পারেন বিজেপিকে দেশের ক্ষমতা থেকে সরাতে হলে তাঁকে জাতীয় রাজনীতিতে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। কারণ খাতা-কলমে কংগ্রেস সর্ববৃহৎ বিরোধী দল হলেও নিজের দায়িত্ব পালনে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
সেই জায়গায় সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী প্রধান মুখ হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তি হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস যে সবথেকে ভালো বিকল্প তা এতদিনে প্রতিষ্ঠিত। এই বিষয়টি ফোকাস করে অভিষেক প্রথমে ত্রিপুরা দিয়ে কাজ শুরু করেন। সেখানে বিজেপি বিরোধী নেতারা দলে দলে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এরপর মেঘালয়ে সংগঠন বিস্তার করেন।
সেখানে তো কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সহ প্রায় গোটা পরিষদীয় দলই তৃণমূলে চলে এসেছে। বর্তমানে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল। এরপর তারা নজর ঘুরিয়েছে অসমের দিকে। গতবছর বিধানসভা নির্বাচনের সময় সেখানে বিজেপি বিরোধী ক্ষোভ তুঙ্গে উঠেছিল। কিন্তু কংগ্রেস বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব দানে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষমতা ধরে রাখতে সফল হয় গেরুয়া শিবির।
বউবাজার এখন ভূত বাজার ! রাজনৈতিক টানাপোড়েনের সাক্ষ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে শূন্য বাড়িগুলি
এরপরই বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে প্রথমে সুস্মিতা সেন, পরে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বোরা তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁদের হাত ধরে একে একে বাকি কংগ্রেস নেতারাও তৃণমূলে যোগ দিতে শুরু করেছেন। বুধবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানকার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সামনে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা জানিয়ে দিয়েছেন। ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে সে রাজ্যে ১০ টি কেন্দ্রে জেতার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছে তৃণমূল।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাছে পেয়ে অসমের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছাস লক্ষ্য করা গিয়েছে। আগামী দিনে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের আরও বেশকিছু রাজ্যে তৃণমূল নিজেদের শক্তি বিস্তার করবে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
যা পরিস্থিতি তাতে পশ্চিমবঙ্গ বাদে অন্যান্য রাজ্য থেকেও বিপুল সংখ্যক আসন নিয়ে দিল্লির দরবারে হাজির হতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রে বিজেপি বিরোধী শিবিরের প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসেবে তাঁর দাবি সবচেয়ে বেশি থাকবে। আর এর পিছনের মূল কারিগর হিসেবে থেকে যাবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।