আমফান পরবর্তী পরিস্থিতিতে সেনা নামানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা ধনকরের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক:মাঝে মনে হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় আমফান হয়তো বদলে দিয়ে গেছে তাঁকে। কিন্তু রবিবাসরীয় দুপুর আবার বুঝিয়ে দিল ধনকর আছেন ধনকরেই।
বোঝা গেল না এখানে কার কথা বলা হচ্ছে, তিনি হলেন রাজভবনের বাসিন্দা, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান জগদীপ ধনকর। করোনার মতোই আমফান নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছিলেন রাজ্যপাল।
তবে এদিন তার থেকে 180 ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে সাইক্লোন আমফানের পরবর্তী রাজ্যের পরিষেবা নিয়ে সরব হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর ।
এর আগেও টুইটারে তিনি রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন । রবিবার ফের মুখ খুললেন, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতিতে রাজ্যের সাধারণ মানুষের অবস্থা নিয়ে ।
এদিন একদিকে যখন সেনা জওয়ানরা সল্টলেকে জনজীবন স্বাভাবিক করার জন্য কাজ করছিলেন। ঠিক তখনই মুখ্যমন্ত্রীকে সেনা নামানো নিয়ে খোঁচা দিলেন বাংলার রাজ্যপাল।
ট্যুইটারে তিনি লিখেছেন, বিপর্যস্ত মানুষেরা কয়েকদিন ধরেই নূন্যতম পরিষেবা টুকু পাচ্ছে না। রাজ্যের এই পরিস্থিতি দেখে আমি ব্যথিত এবং দুঃখিত। আমার অনুরোধ পরিষেবার দ্রুত ফেরাতে রাজ্য সরকার এবং সংস্থাগুলি যেন ঠিকমতো কাজ করে। জনগণের কাছে আবেদন এই পরিস্থিতিতে শান্ত থাকুন, একটু সহ্য করুন।বিভিন্ন সংস্থাকে বলছি কলকাতার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগে কেউ রাজভবনে আসবেন না। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। তাহলে তিনদিন আগেই সেনা দেখা যেত। ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সঠিক তথ্য দিন। ভুল তথ্য দিলে উল্টো ফল হতে পারে।
এ দিনের ট্যুইটে রাজ্যপাল লেখেন, ‘৩ দিন আগেই সেনা নামানো যেত ।’উল্লেখ্য, বিপর্যয়ের তিন দিন পর শনিবারই সেনার সাহায্য চেয়েছে রাজ্য সরকার ।
শনিবার বিকেল থেকেই জোরকদমে শহর জুড়ে কাজ শুরু করে দেয় সেনা । রাস্তায় পড়ে থাকা গাছ কাটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় জল, বিদ্যুৎ ফেরানোর কাজ শুরু করেছে সেনা । রাজ্যপালের অভিযোগ আগেই কেন এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হল না ।
এছাড়াও রাজ্যপাল এ দিন লেখেন, রাজ্যের উচিত ক্ষতিপূরণ নিয়ে সঠিক তথ্য জানানো । কেন্দ্রকে সঠিক তথ্য জানানো উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি ।
পাশাপাশি তিনি লেখেন, রাজ্যের পরিস্থিতিতে তিনি ব্যথিত । সাধারণ পরিষেবা পাচ্ছেন না মানুষ । মৌলিক অধিকারটুকুও পাচ্ছেন না তাঁরা । পরিষেবা ফেরাতে তৎপর হোক রাজ্য ।
উল্লেখ্য,তিনি রাজভবনের দায়িত্ব নিয়ে আসার পর থেকে নবান্নের সঙ্গে সংঘাত লেগেই রয়েছে। এমনকি কোভিড পরিস্থিতি নিয়েও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর ও মুখ্যমন্ত্রীর পত্রযুদ্ধ দেখেছে বাংলা।
কখনও রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তুলেছেন তো কখনও পাল্টা দীর্ঘ চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে লিখেছেন, তিনি যেন দ্বৈত শাসনের স্বপ্ন না দেখেন।
পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত এমন পর্যায়ে পৌঁছায় মুখ্যমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিতে হয়, মুখ্যমন্ত্রী মানুষের দ্বারা নির্বাচিত। আর রাজ্যপাল কেন্দ্রের মনোনীত।
আমফান পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক হেলিকপ্টারে রাজ্যপালের ওঠা এবং মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে তাঁর ৫০ লক্ষ টাকা দানের পর কেউ কেউ হয়তো ভেবেছিলেন, সাইক্লোন এসে বোধহয় রাজ্যপাল-নবান্নের সংঘাত খানিকটা থামিয়ে দিতে পেরেছে।
কিন্তু কোথায় কী! রবিবার ফের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে কড়া ট্যুইটে রাজ্যপাল বোঝালেন, তিনি তার পুরনো অবস্থান থেকে এতোটুকু সরে আসেননি।