অসম ও উত্তরপ্রদেশের পর সারা দেশে জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইন লাগুর পথে বিজেপি

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জন্ম নিয়ন্ত্রণ বিল খসড়া নিয়ে এসেছেন। সেখানে রয়েছে দুই সন্তানের বেশি থাকলে কোন ব্যক্তি সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। এবার সেই বিলকে সমর্থন জানালেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ।

তাঁর কথায়, প্রয়োজনের ভিত্তিতে সারা দেশে এই আইন বলবৎ করা প্রয়োজন। যেসব রাজ্যের জনবিস্ফোরণ হচ্ছে সেখানে এই আইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান চীনের মতো এই আইন কায়েম করতে চান না তারা। কিন্তু জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আবশ্যক। দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের আগে এই খসড়া বিল এনেছিল আসাম। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা সংখ্যালঘুদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন বলে জানা গিয়েছে।

যোগী আদিত্যনাথ এই খসড়া বিল এনে জানান ২০২৬ সালের মধ্যে জন্মহার ২.১ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করবে তাঁর সরকার। সমাজের বিভিন্ন বিভাগের কথা মাথায় রেখে এই নিয়ম কায়েম করা হবে। এতে সমস্ত মানুষের কাছে সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে।

এই বিলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া আছে, যদি কোনো ব্যক্তির দুইয়ের বেশি সন্তান থাকে তাহলে তিনি স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না, সরকারি চাকরি বা অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন সরকারী চাকুরীজীবি হলে তার পদোন্নতি হবে না।

লখনউ থেকে ATS’এর জালে ২ সন্দেহভাজন আল কায়দা জঙ্গি

পাশাপাশি এও জানানো রয়েছে দুই সন্তান থাকলে চাকুরীজীবী কোন ব্যক্তি ইনক্রিমেন্ট পাবেন দুবার। পুরো বেতনসহ পিতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন। ন্যাশনাল পেনশন স্কিমের বাড়তি টাকা মিলবে। ২০২২ উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে জন্ম নিয়ন্ত্রণ বিল গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু করতে চলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। যদিও একথা মানতে নারাজ সমাজবাদী পার্টি। তাদের অভিযোগ এই বিল গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। একই সুরে সুর মিলিয়েছে কংগ্রেস।

দেশের বিপুল জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন। একথা দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেই জানিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী।২০১৯ সালের ১৫ আগস্ট লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। তার আশঙ্কা ছিল জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে আগামী প্রজন্মকে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তবে এ বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে যৌথভাবে পদক্ষেপ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী জন্মনিয়ন্ত্রণের পক্ষে সওয়াল করার পর বিজেপির একাধিক সাংসদ চিঠি লিখে আইন আনতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে। একই দাবি নিয়ে সরব হয়েছেন তারা গতবছরের বাদল অধিবেশনে। বিজেপি সাংসদদের লোকসভার বিশেষ উল্লেখ পর্বের জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইন আনার পক্ষে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে। করোনা মহামারী পরিস্থিতি তৈরী না হলে এতদিনে জন্মনিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিল আনা হয়ে যেত। সেকথা একাধিকবার বিজেপির অন্দরমহলে শোনা গিয়েছে।

উল্লেখ্য ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির ইশতেহারে রাম মন্দির ও ৩৭০ ধারা বিলোপ,  অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। বাকি দুটি কাজ কেন্দ্র ইতিমধ্যেই সেরে ফেললেও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার কাজ শুরু হয়নি। এবার সেই কাজ শুরু হোক অনেকদিন ধরেই চাইছে সংঘ পরিবার। তাদের দাবি তাতে এদেশে মেরুকরণের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে। দেশে জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইনের পক্ষে সওয়াল করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদও।

সম্পর্কিত পোস্ট