মানুষ তৈরি ত্রিপুরায় বিজেপিকে গোহারা হারাতে, CPIM জিতবে: সুজন চক্রবর্তী

আগরতলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়িতে হামলা

দ্য কোয়ারি ডেস্ক: তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির আঁতাত স্পষ্ট। ত্রিপুরার রাজনৈতিক শোরগোলের মাঝে এমনই মনে করছে বামেরা। প্রাক্তন বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী একটি ওয়েব সংবাদ মাধ্যমে জানান, এ রাজ্যের মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে ত্রিপুরার শাসক বিজেপি। সেখানে তৃ়নমূল কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের বিরোধিতা সম্পূর্ণ নাটক।

সুজনবাবু বলেন, ত্রিপুরায় ভোট হওয়ার অপেক্ষা। সেখানে বিজেপি গোহারা হারবে। ত্রিপুরাবাসী ফের বামপন্থীদের ফিরিয়ে আনতে তৈরি।

সুজনবাবুর অভিযোগ, গত বিধানসভা ভোটের পর থেকে সে রাজ্যে বারবার হামলার শিকার হয়েছেন সিপিআইএম নেতা সমর্থকরা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার যিনি এখন বিরোধী নেতা তিনি হামলার মুখে পড়েন। ত্রিপুরায় ভোট লুঠ করে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে বিজেপি।

ত্রিপুরার মাটিতে বিজেপির বিরোধিতা করতে তৃ়নমূল কংগ্রেসের উপস্থিতি নিয়ে বামেরা কটাক্ষ শুরু করেছে। অভিযোগ, বিরোধী ভোটে ভাঙন ধরিয়ে দিতেই তৃণমূল হাজির হয়েছে ত্রিপুরায়। দলটির কোনও অস্তিত্ব নেই এই রাজ্যে।

এদিকে আগরতলার রাজনৈতিক মহল সরগরম। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগরতলা পৌঁছতেই প্রদেশ টিএমসি সমর্থকরা ‘জয় ত্রিপুরা’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। এদিন থেকেই ত্রিপুরা জুড়ে এই রাজনৈতিক স্লোগানটি ছড়িয়ে দিল প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গে তাদের স্লোগান ‘জয় বাংলা’।

আগরতলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়িতে এক বিজেপি সমর্থক লাঠি দিয়ে আঘাত করে। ঘটনার জেরে উত্তপ্ত হয় রাজনৈতিক হাওয়া। এর পরেই টিএমসি ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয় রাজ্যের কয়েকটি স্থানে। অভিষেক আক্রান্তের খবরে পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে তৃণমূল। বিভিন্ন জেলায় হচ্ছে বিক্ষোভ সমাবেশ।

সূত্রের খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে দল ভারি করার লক্ষ্যে কংগ্রেস ও বিজেপির নেতাদের টিএমসিতে সামিল করানোর চেষ্টা করবে টিম মমতা।

অভিষেক আগরতলায় পৌঁছনোর আগেই পশ্চিমবঙ্গের একগুচ্ছ তৃণমূল যুব নেতা নেত্রীরা ত্রিপুরায় এসেছেন। তাঁরা জানান, এ রাজ্যেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পরিবর্তন হবে আগামী বিধানসভার ভোটে। তবে শাসক দলের বড় শরিক বিজেপির দাবি, ত্রিপুরায় তৃ়ণমূলের কোনও অস্তিত্ব নেই। কংগ্রেস ইতিমধ্যেই টিএমসির সঙ্গে জোট প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে।

পশ্চিমবঙ্গে পরপর তিনবার সরকার গড়ার পর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরা অভিযান শুরু করেছেন। তিনি এ রাজ্যেও সরকার গড়তে রাজনৈতিক জমি তৈরিতে দলনেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন। এর পরেই ত্রিপুরা প্রদেশ টিএমসি ঘুম ভেঙে নড়ে চড়ে বসে।

গত বিধানসভা ভোটের আগে তৎকালীন বিরোধী দল কংগ্রেস ত্যাগ করে বিরোধী বিধায়করা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। সাময়িক সময়ের জন্য বিধানসভায় টিএমসি হয়েছিল প্রধান বিরোধী দল। পরে টিএমসি ছেড়ে সবাই বিজেপি হন। টিএমসি শূন্য হয়ে যায় ত্রিপুরায়। নির্বাচনে টানা ২৫ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের পতন হয়। বিজেপি ও আইপিএফটি জোট সরকার গড়ে।

গত চার বছরে সরকারের অভ্যন্তরে বিজেপির বিধায়কদের প্রবল অসন্তোষ দেখা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে সরব বেশিরভাগ বিধায়ক। বিপ্লব হটাও ত্রিপুরা বাঁচাও ধ্বনি উঠেছে। এই বিদ্রোহী বিধায়করা ফের টিএমসিতে যোগ দেবেন বলেই জানাচ্ছেন প্রদেশ টিএমসি নেতৃত্ব।

সম্পর্কিত পোস্ট