আগরতলাতেই এই! ত্রিপুরাবাসী ‘নো এন্ট্রি’ বোর্ড ঝুলিয়েছে, বুঝবে কী তৃণমূল…?

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ত্রিপুরার রাজনীতি সম্বন্ধে যাঁরা সাম্যক ধারণা রাখেন তাঁরা জানেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক কার্যকলাপের প্রভাব মূলত রাজধানী আগরতলা কেন্দ্রিক। ত্রিপুরার জনজাতি প্রধান অংশ বা রাজধানীর বাইরে জেলাগুলিতে এখনও অব্দি তারা সেভাবে কার্যকলাপ শুরু করতে পারেনি।

তবে আগরতলায় গেলে অনেক সময় মনে হতে পারে সে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। কারণ রাজধানীতে তারা যেভাবে ফ্লেক্স ব্যানার হোর্ডিং লাগায় তা বামেরা তো দূরস্ত, এমনকি সে রাজ্যের বর্তমান শাসক দল বিজেপি কেউ তেমনটা করতে দেখা যায়নি।

তাই সাধারণ কেউ, যিনি রাজনীতির খবরা-খবর ততটা রাখেন না হঠাৎ আগরতলায় গিয়ে পড়লে অন্য সময় ভেবে বসতেই পারেন বাংলার বাইরে এই রাজ্যটিও বুঝি তৃণমূল পরিচালনা করছে!

কিন্তু ত্রিপুরার সেমিফাইনালের ফল দেখিয়ে দিল প্রচারে জৌলুস থাকলেও আগরতলাতেই তৃণমূলের পায়ের নিচে জমি নেই। চারটে বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূল সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে সুরমায়।

জনজাতিদের প্রভাব থাকা এই কেন্দ্রে তারা কোনরকমে ৩ শতাংশের বেশি ভোট আদায় করতে পেরেছে। এদিকে আগরতলার দুটি কেন্দ্রে তাদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এই অবস্থায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কুণাল ঘোষরা দলের খারাপ ফলের জন্য বিজেপির সন্ত্রাসকে দায়ী করেছেন।

সরপুরিয়া-ক্ষীরকদমের স্বাদ চাখবে কে? গভীর সঙ্কটে মিষ্টি হাবের ব্যবসায়ীরা

তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের অভিযোগ খুব ভুল নয়। অন্তত বাকি বিরোধী পক্ষ থেকেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে। কিন্তু বাম এবং কংগ্রেস যখন বিজেপিকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিল, তখন চারটি আসনেই তৃণমূল প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্তের বিষয়টি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে চিন্তায় রাখবে বৈকি। ত্রিপুরার সার্বিক ফল বলছে তৃণমূল কংগ্রেস এই উপনির্বাচনে সব কটি কেন্দ্রে বহু দূরের ৪ নম্বরে দৌড় শেষ করেছে।

আসলে হিসেব আরও খারাপ বলে দাবি সে রাজ্যের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তাঁদের মতে মেরে কেটে তৃণমূলকে ৫ নম্বর স্থানে রাখা যেতে পারে। কারণ আগামী বছরের বিধানসভা ভোটে রাজ পরিবারের সন্তান প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মার তিপ্রা মথা ভালোভাবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।

সেক্ষেত্রে প্রথম চারটি স্থান বিজেপি, বাম, কংগ্রেস ও তিপ্রা মথার দখলে থাকতে বাধ্য। কারণ জনজাতি প্রধান এলাকায় তিপ্রা মথার প্রভাব কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। তাহলে তৃণমূল কত নম্বর জায়গায় থাকে?

আসলে ত্রিপুরাবাসীর ‘পালস’ ধরতে কোথাও একটা ভুল হয়েছে বাংলার শাসক দলের, এমনটাই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। তবে একেবারে ভেঙে পড়ার মতো কিছু হয়নি। খুব সামান্য সংখ্যায় হলেও কিছু মানুষ অন্তত তৃণমূলের প্রতি আস্থা রেখেছেন। এটাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই আগামী দিনে আরও ভালো করে পরিকল্পনা করে নিচুতলায় কাজের মধ্য দিয়ে ত্রিপুরায় উঠে আসার চেষ্টা করতে হবে তৃণমূলকে।

সম্পর্কিত পোস্ট