কাটমানির পর আমফান, ঠগ বাছতে গিয়ে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে না তো?
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ২০২১ এর নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে নতুন নতুন বিতর্ক। সেই সব কিছুকে টপকে পায়ের তলায় মাটি শক্ত করে বিধানসভা নির্বাচনে ফেস ক্লিন রেখে উতরানো টাই বড় চ্যালেঞ্জ।
করোনায় তথ্য লোপাট থেকে রেশন দুর্নীতি। ড্যামেজ কন্ট্রোল হতে না হতেই ঘাড়ে এসে পড়ল আমফানে স্বজনপোষণের অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী বারবার সতর্ক করছেন আমজনতার টাকা নিয়ে দুর্নীতি করা যাবে না, তা সত্ত্বেও অবাধে চলছে সবকিছু।
এসব দেখার পর মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং খেদোক্তি করেছেন আমার কথা আর কেউ শোনে না! প্রশ্ন উঠছে এখানেই।
মানুষ তো ভোট দেয় প্রার্থী দেখে নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে। তাহলে আপনার হুঁশিয়ারী, সতর্কবার্তা কেন বিফলে যাচ্ছে? সুপ্রিমোর কথায় কাজ হচ্ছে না, দলটা তাহলে কে বা কারা চালাচ্ছে?
২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী ডাক দিয়েছিলেন ৪২এ ৪২ এর। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সেই আশায় জল ঢেলে রাজ্যে ১৮ টি সিটে পদ্ম ফুল ফুটিয়ে মিশন বঙ্গ অভিযান শুরু করে দিল বিজেপি।
কেন হল এমন ভরাডুবি? যেখানে রাজ্য জুড়ে রাস্তাঘাট থেকে ত্রিফলা, অন্যদিকে কন্যাশ্রী থেকে রুপশ্রী, সবুজসাথী থেকে কর্মসাথী একের পর এক জনমুখী প্রকল্প রাজ্যের মানুষকে উপহার দিয়েছেন, সেখানে এমন বিপর্যয়ে মুষড়ে পড়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও।
কারণ খুঁজতে এবং ২১ এর নির্বাচনী বৈতরনী পার করতে আসরে নিয়ে আসেন ইলেকশন স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর। খুঁজে বের করেন মানুষের সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের জনসংযোগের অভাব এর জন্য দায়ী। সেইসঙ্গে দায়ী কাটমানি।
ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে কড়া নির্দেশ দেন সুপ্রিমো, অবিলম্বে যারা যারা কাটমানির টাকা নিয়েছেন ফেরৎ দিতে হবে।
অমনি উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম যারা যারা কাটমানি নিয়েছিলেন তা ফেরানোর হিড়িক শুরু হয়ে যায়। ফলে একপ্রকার প্রকাশ্যে চলে আসে তৃণমূলের দুর্নীতি।
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের সেই দুর্নীতির গন্ধ তৃণমূলের অন্দরে। বিষয় করোনা ও আমফান।
লকডাউনের শুরু থেকে রেশন দুর্নীতি নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা। রেশ কাটতে না কাটতেই সেই আমফানের ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দল।
হাওড়া থেকে নন্দীগ্রাম, দুই ২৪ পরগণা থেকে দুই মেদিনীপুর সর্বত্র আমফানের টাকা লুঠের দায় শোকজ করা হচ্ছে তৃণমূল নেতাদের। শুধুমাত্র নন্দীগ্রামেই শোকজ করা হয়েছে ২০০ জন নেতাকে।
প্রশ্ন উঠছে এখানেই। যে দলের প্রতিটি ছত্রে ছত্রে দুর্নীতি বাসা করে রয়েছে সেই দলের উপর কীভাবে মানুষ ভরসা করবে?
মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন তাঁর দল মানুষের জন্য, মানুষের স্বার্থে তৈরী। সেইখানে অন্যায় তিনি কিছুতেই বরদাস্ত করবেন না। তাহলে কোথায় গেল সেই নীতি, আদর্শ?
সংশয় থেকেই গেল। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে ফের ঝাড়াই বাছাই শুরু করেছেন তৃণমূল নেত্রী। হয়ত ২১ এর নির্বাচনী প্রচারেও টিকিট থেকে বঞ্চিত হবেন অনেকেই।
ঠগ বাছতে গিয়ে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে না তো?