বাংলাকে দুঃস্বপ্নের নগরী হিসাবে দেখাতে চাইছেন অমিত শাহ :মমতা

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সোমবারের পর মঙ্গলবারেও নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখান থেকেই অমিত শাহের দেওয়া তথ্য নিয়ে চ্যালেঞ্জ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, শিল্প থেকে কৃষি, আইনশৃংখলার অবস্থা থেকে আর্থিক পরিস্থিতি সব ক্ষেত্রেই রীতিমত তথ্য তুলে ধরে ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন বোলপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে অমিত শাহ যা দাবি করছেন তার কোনও ভিত্তি নেই।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী অমিত শাহকে আক্রমণ করতে গিয়ে বলেছেন, ১১ বছর আগে কোথায় ছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অমিত শাহ এমন ভাবে বলছিলেন যেন মনে হচ্ছিল বাংলা দুঃস্বপ্নের নগরী। তিনি কটাক্ষ করে বলেছেন, ঈর্ষাকাতর হয়েছেন অমিত শাহ।

মমতা নিজেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন শাহকে, ‘প্রত্যেকটা তথ্য ভারত সরকারের থেকে নেওয়া। সোর্স ভারত সরকার।উনি কী না জেনে বলেছেন। উনি যেটা বলছেন সেটা সত্য না ভারত সরকার যেটা বলছে সেটা সত্য।’

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বেশ কিছু বিষয়ে ভারত সরকারের প্রকাশিত তথ্য ও প্রদেয় সার্টিফিকেটের তথ্য তুলে ধরে কার্যত পদ পদে অমিত শাহের তুলে দেওয়া তথ্যকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন,

  • ‘সব কিছু ভালো করে জেনে নিয়ে বলা উচিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।
  • বাংলা মানেই খারাপ রাজ্য, দুঃস্বপ্নের রাজ্য, উন্নয়নের কোনও কাজ হয়নি, এই রকম একটা ছবি তুলে ধরা হচ্ছে।
  • কোথায় ছিলেন গত ৩৪ বছর। শুনে রাখুন দারিদ্র দূরীকরণে বাংলা দেশের মধ্যে পয়লা নম্বরে, ১০০দিনের কাজ, গ্রামীণ বাড়ি নির্মাণ, গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণ, এমএসএমই সেক্টরে, স্কিল ডেভেলেপমেন্ট, মাইনরিটি স্কলারশিপ, ই-গভর্নেন্স, ই-টেন্ডার এই সব বিষয়ে বাংলা দেশের ১ নম্বর
  • আর এই সব তথ্য ভারত সরকারের দেওয়া তথ্য থেকে নেওয়া। তাহলে কোনটা সত্যি, যেটা উনি বলে গেলেন নাকি, যেটা ভারত সরকার বলছে সেটা সত্যি!’

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/coronas-new-strain-in-britain-uncertainty-over-boris-johnsons-india-tour/

এরপরে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান,

  • আর্থিক দিক থেকে বাংলা অনেক এগিয়ে দেশের অনান্য রাজ্যগুলির থেকে।
  • ২০১১ সালের পর রাজ্যে স্টেট গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট বেড়েছে ২.৭ শতাংশ,
  • রাজস্ব আদায় বেড়েছে ২.৯ শতাংশ,
  • ক্যাপিটাল এক্সপেন্ডেচার বেড়ে হয়েছে ৭.২ শতাংশ।
  • রাজ্যে পরিকল্পনা খাতে খরচ বেড়ে হয়েছে ৫.৯ শতাংশ,
  • সোশ্যাল ক্ষেত্রে খরচ বেড়েছে ৫.৬ শতাংশ,
  • এগ্রিকালচার ক্ষেত্রে খরচ বেড়েছে ৬.১ শতাংশ।
  • অথচ এই সব হিসাব না জেনে না পড়ে উনি চলে এসেছেন এখানে মিথ্যার ঝুরি ফেরি করতে।
  • জিডিপি জিএসডিপির ক্ষেত্রে দেশে যেখানে ৪.১৮ শতাংশ সম্পদ বেড়েছে
  • তখন বাংলায় তা বেড়েছে ৭.২৬শতাংশ।
  • জিভিএ বা গ্রস ভ্যালু অ্যাডেড দেশের ক্ষেত্রে ৩.৮৯ শতাংশ
  • আর বাংলার ক্ষেত্রে ৭.৩৯ শতাংশ।
  • দেশে শিল্প বেড়েছে ০.২২ শতাংশ অথচ
  • বাংলায় তা বেড়েছে ৫.৭৯ শতাংশ।
  • দেশে সার্ভিস বেড়েছে ৫.৫৫ শতাংশ অথচ
  • এই রাজ্যে তা বেড়েছে ৯.২৬ শতাংশ,
  • কৃষি ক্ষেত্রে দেশে বৃদ্ধির হার ৪.০৫ শতাংশ
  • সেখানে এই রাজ্যে তা ৪.৭৪ শতাংশ।
  • দেশে এফডিআই গ্রোথ ০.২২ শতাংশ। অথচ
  • এই রাজ্যে তা ১.৬৬ শতাংশ।
  • ২০১১-১২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত বাংলায় ২২ হাজার কোটি টাকা প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে।
  • ১ কোটি মানুষের চাকরি হয়েছে।
  • এসব না জেনে কেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোমওয়ার্ক না করেই এখানে মিথ্যা বলতে চলে এলেন বলে এদিন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/the-state-government-recognizes-telugu-as-the-official-language/

অমিত শাহ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। পাশাপাশি গত দেড় বছরে ৩০০ বিজেপি কর্মী খুন হওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। এনিয়ে অমিত শাহের প্রতি আক্রমণ শানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি বলেছেন, পাহাড় থেকে জঙ্গলমহল সর্বত্র শান্তি বিরাজ করছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন ২০০১ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে রাজ্যে যেখানে ৬৬৩ টি রাজনৈতিক খুন হয়েছিল, সেখানে ২০১১ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে রাজনৈতিক খুনের সংখ্যা ১৫৩। রাজ্যে মহিলাদের ওপরে অত্যাচারের সংখ্যাও কমেছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, রাজ্যে ৩৮৩ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৭৩ জনকে স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ৩৭০ জন প্রাক্তন কেএলও জঙ্গিকেও স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট