এলেন, ময়দানে নেমে আন্দোল‌ন‌ও করলেন, কিন্তু বাঙালির মন জয় করতে পারলেন শাহ?

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বিধানসভায় ক্ষমতা দখলে ব্যর্থ হয়ে মুষড়ে পরেছেন বাংলার বিজেপি নেতারা। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো ফিরে আসার বার্তা দিয়ে লাল চোখ রাঙাচ্ছে বামেরা (Left)। এই অবস্থায় পঞ্চায়েত নয় লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে (বাংলার জেতা ১৭ টি আসন আগামী নির্বাচনে খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বিজেপির কাছে) বাংলায় দু’দিনের সফর করে গেলেন অমিত শাহ (Amit Shah)।

শুধু তাত্ত্বিক আলোচনা নয়, কার্যত কাশীপুরের মৃত বিজেপি কর্মী অর্জুন চৌরাসিয়ার বাড়ি গিয়ে ময়দানে নেমে লড়াইয়ের বার্তা দিলেন। শুধু বার্তা নয়, তাঁর মতো একজন নেতা যেভাবে সাধারণ দলীয় কর্মীর বাড়িতে হাজির হয়ে গেলেন তা নজিরবিহীন ঘটনা। কিন্তু মানুষ কীভাবে নিল শাহের সফরকে? বাঙালির মনে বিজেপিকে নিয়ে অবস্থানের কী পরিবর্তন ঘটল?

মৃত অর্জুন চৌরাসিয়ার বাড়ি গিয়ে অমিত শাহ যে সমস্ত কথা বলেছেন তার সবগুলোকে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। সত্যিই বাংলায় সাম্প্রতিককালে রাজনৈতিক হিংসা, হানাহানি বেড়েছে। বিজেপি নেতা হিসেবে রাজ্যের তৃণমূল সরকার বিরুদ্ধে তিনি মুখ খুলবেন এ‌ও স্বাভাবিক ব্যাপার। তার ওপর একেবারে ময়দানে নেমে যেভাবে সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন তা বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা দেশে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। কারণ সিবিআই (CBI) তাঁরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আওতাধীন।

গরু পাচার চক্রের মাথাদের নজর এখন মাটিতে

বৃহস্পতি ও শুক্রবার অমিত শাহ রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ কার্যত চষে বেড়িয়েছেন। কিন্তু আম বাঙালির মধ্যে তা নিয়ে বিশেষ ভাবান্তর নজরে এল না। কাশীপুরের মৃত দলীয় কর্মীর বাড়িতে অমিত শাহ হাজির হয়ে গেলেন অথচ রাজ্যের অন্যপ্রান্তে বিজেপি নেতা কর্মীরা তেমন একটা রাস্তায় নামলেন না।

অথচ এক বছর আগে এই ছবিটা ছিল সম্পূর্ণ উল্টো। সেই সময়ে কোন‌ও এক জায়গায় কিছু হলেই সারা রাজ্যজুড়ে রাস্তায় নেমে পড়ছিল বিজেপি। সেই সময় যদি এই ঘটনা ঘটত তবে বলাই যায় শুক্রবার অচল হয়ে যেত বাংলা।

কিন্তু এক বছর পরের ঘটনাক্রম থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বাঙালির একটা বড় অংশ। অমিত শাহ এসেও খুব কিছু করতে পারলেন না। উল্টে শুক্রবার রাতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) বাড়িতে গিয়ে সপার্ষদ নৈশভোজে অংশগ্রহণ করে দলের নিচুতলার সমালোচনার মুখে পড়েছেন শাহ।

বিরোধীদের পাশাপাশি বিজেপির‌ই একাংশ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, দলের কর্মী খুন হলেন যে দিন সে দিন‌ই কী করে জমিয়ে নৈশভোজ করেন! তবে কি দলীয় কর্মীদের প্রতি বিন্দুমাত্র সহমর্মিতা নেই বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের? এই প্রশ্ন আগামীদিনে বিজেপিকে ভোগাতে পারে। শাহের সফরে লাভের বদলে উল্টে আরও বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে গেরুয়া শিবিরের।

সম্পর্কিত পোস্ট