আম্ফান নিয়ে অমিত শাহের বৈঠক , রাজ্যকে অন্ধকারে রেখেই রেসিডেন্ট কমিশনারকে ডাক, অসৌজন্য দেখছেন মমতা

আম্ফান নিয়ে অমিত শাহের বৈঠক -এ রাজ্য সরকারকে উপেক্ষা করে পশ্চিমবঙ্গের রেসিডেন্ট কমিশনারকে ডাকায় ক্ষুব্ধ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ আম্ফান নিয়ে অমিত শাহের বৈঠক -এ রাজ্য সরকারকে উপেক্ষা করে পশ্চিমবঙ্গের রেসিডেন্ট কমিশনারকে ডাকায় ক্ষুব্ধ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন শক্তি বাড়িয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিয়ে রাজ্যের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান।

করোনা আবহের মধ্যে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় রাজ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় একইভাবে উড়িষ্যা উপকূলেও ক্ষয় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

আম্ফান নিয়ে অমিত শাহের বৈঠক

  • মূলত এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে সোমবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উচ্চস্তরীয় এক বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন।
  • এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও।
  • প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগেই দিন দুপুর একটায় নর্থ ব্লকে উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গের রেসিডেন্ট কমিশনারদের নিয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
  • কিন্তু এক্ষেত্রে রাজ্যের মুখ্য সচিব বা মুখ্যমন্ত্রীকে অন্ধকারে রেখেই প্রেসিডেন্ট কমিশনারকে বৈঠকে ডাকা হয়।

আম্ফান মোকাবিলায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রস্তুতি প্রশাসনের

অসন্তোষ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

  • সোমবার নবান্নে এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি কেন্দ্রীয় ভূমিকায় অসৌজন্যতাই দেখছেন।
  • তিনি মনে করছেন, বৈঠকে রেসিডেন্ট কমিশনারকে ডাকার আগে নবান্নকে একবার ইনফর্ম করতে পারত কেন্দ্রীয় সরকার। বাস্তবে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ আসলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উলঙ্ঘন।
  • মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায়, দুর্যোগ সামলাবে রাজ্য। অথচ মিটিং এর সময় রাজ্যের সঙ্গে অসৌজন্যতা দেখানো হচ্ছে।
  • তিনি এমন বলেন, আমার মনে হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কেউ মিসলিড করেছেন সে কারণেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি।

নবান্নের বিজ্ঞপ্তিঃ

  • নবান্নের তরফেও বলা হয়েছে, কেন্দ্র যেকোনো বৈঠকের জন্য রাজ্যের রেসিডেন্ট কমিশনারকে ডাকতেই পারে। তাই নিয়ে আপত্তির তেমন কিছু নেই।
  • তবে এক্ষেত্রে প্রটোকল হল, বৈঠকের আগে রাজ্যকে জানাতে হয়। মুখ্যসচিবকে ইনফর্ম করতে হয়।
  • মুখ্য সচিব প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে নেন।
  • রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে এমনটি করা যথেষ্টই সৌজন্যের। কিন্তু এক্ষেত্রে তা হয়নি।

এর আগে করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের আসার ক্ষেত্রেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়েছিল নবান্ন।

কারণ সেক্ষেত্রে প্রতিনিধিদল পাঠানোর আগে নবান্নকে অন্ধকারে রাখা হয়।এরপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নবান্নের মতে, কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই জায়গাতেই নির্বাচিত সরকার রয়েছে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে গুরুত্ব দিতে হবে।রাজ্যের প্রাপ্য মর্যাদা রাজ্যকে দিতে হবে।

কিন্তু বারবারই দেখা যাচ্ছে কেন্দ্র এ বিষয়ে কোনো সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছেই না। উল্টে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।

কেন্দ্রের তরফে করোনা আবহে বারবার কেন্দ্র-রাজ্য একসঙ্গে কাজ করার কথা বলা হচ্ছে। আম্ফান একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়, এর মধ্যেও কেন্দ্র তার দ্বিচারিতার রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী কথায়, এই মুহূর্তে রাজ্য তিনটে সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, প্রথমতঃ করোনা বিপর্যয়, দ্বিতীয়তঃ পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর বিষয়, তৃতীয়তঃ ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এখন দেখার এই তিনের মধ্যেকে সবথেকে বেশি শক্তিশালী। আমার মনে হয় শেষ পর্যন্ত বাংলার মানুষের জয় হবেই।

সম্পর্কিত পোস্ট