কার নির্দেশে সরকারি ডাক্তার বাড়িতে? অনুব্রতর চিকিৎসা পর্বেও প্রভাবশালী যোগ

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যের প্রধান সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএম বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার পরের দিন চিকিৎসা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন অনুব্রত মণ্ডল। বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সার্জেন চন্দ্রনাথ অধিকারী দুজন চিকিৎসক কর্মীকে নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান।

পরে বাইরে বেরিয়ে এসে ওই চিকিৎসক বলেন, আপাতত বেডরেস্ট দরকার কেষ্ট মণ্ডলের। বিষয়টি তিনি প্রেসক্রিপশন আকারে লিখে দিয়ে এসেছেন বলেও ওই জানান চিকিৎসক। কিন্তু পরের দিনই তিনি আগের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যান। বলেন, চাপ দিয়ে ১৪ দিনের বেডরেস্ট লিখতে বাধ্য করা হয়েছিল!

স্বাভাবিকভাবে এই চিকিৎসা বিতর্কের জেরে অস্বস্তি বাড়ে অনুব্রত মণ্ডলের। এরই মধ্যে প্রশ্ন ওঠে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক হঠাৎ অনুব্রতর বাড়ি গেলেন কেন? চন্দ্রনাথ অধিকারী নামে ওই চিকিৎসক এর পুরো দায় চাপিয়ে দেন বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুর ঘাড়ে। সুপার নির্দেশ দেওয়াতেই তিনি অনুব্রতর বাড়ি গিয়েছিলেন বলে জানান। অনুব্রতর বাড়ির ভিতর দাঁড়িয়ে চাপে পড়ে তিনি বেডরেস্টের কথা লিখেছিলেন।

‘অ্যাটাক ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স’ নীতি নিয়ে তৃণমূল কী ভুল করে ফেলল?

তাঁর নাম জড়িয়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত মুখ খোলেন হাসপাতাল সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুও। তিনি জানান কোন কিছুই নিজের ইচ্ছায় করিনি। বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী তাঁকে নির্দেশ দেন অনুব্রতর বাড়িতে একজন চিকিৎসক পাঠাতে। তাই তিনি ওই সার্জনকে পাঠিয়েছিলেন। অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বিকাশ রায়চৌধুরী নিঃসন্দেহে জেলার প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ।

প্রশাসনে তাঁর যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ আছে। সেই তাঁর বিরুদ্ধে অনুব্রতকে চিকিৎসকের মাধ্যমে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় তৃণমূল কংগ্রেসের অস্বস্তি আরও বেড়েছে। যদিও বিকাশবাবু পরে জানিয়েছেন, অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি থেকে তার কাছে ফোন আসে। তাতে বলা হয় কেষ্ট অসুস্থ। এই খবরটুকুই তিনি ফোন করে সুপারকে জানান। কিন্তু অনুব্রতর বাড়িতে চিকিৎসক পাঠানো বা ওই সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ তিনি দেননি।

সব মিলিয়ে অনুব্রতর চিকিৎসা পর্ব নিয়ে দায় এড়ানোর খেলা শুরু হয়েছে। চাপে পড়ে সকলেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই সার্জেন চন্দ্রনাথ অধিকারীকে প্রস্তর জেরা করেছে সিবিআই। সূত্রের খবর এই চিকিৎসা রহস্যের সমাধান করতে হাসপাতাল সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু ও সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীকেও তারা ডেকে পাঠাতে পারে। এই ঘটনায় প্রশাসনে অনুব্রতর প্রভাবের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে বিরোধীদের দাবি।

সম্পর্কিত পোস্ট