বিশ্ব ভারতীর সাইটে আশ্রমিকদের কাছে মতামতের আহ্বান কর্তৃপক্ষের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বর্তমান আশ্রমিকরা এখনও পাঁচিল নিয়ে মতামত দিতে পারেন। তবে অবশ্যই বিশ্ব ভারতীর নিরাপত্তার স্বার্থ ও যেগুলোতে উচ্ছেদ নিয়ে মামলা চলছে, সেগুলো বাদ দিয়ে। এই মর্মে বিশ্ব ভারতী এক প্রেস রিলিজ করে।
বিশ্ব ভারতী সেই মতামত নিয়ে আলোচনা করবে। পরিদর্শক আব্দুল কালাম ও রেক্টর গভর্নর গোপাল কৃষ্ণ গান্ধীর আমলেও বহু আশ্রমিক বিশ্ব ভারতীকে তাঁদের মূল্য বান মতামত দেন।
কখনও বিশ্ব বিদ্যালয়ে আবার কখনও মহকুমা শাসকের দপ্তরে। যেমন রেক্টর এম কে নারায়ণের সময় আশ্রমিক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমেন্দ্র নাথ বন্দ্যোপাধ্যায়রা রথীন্দ্র অতিথি গৃহে এসে রেক্টরের সাথে দেখা করে তাঁদের মূল্য বান মতামত দেন।
এছাড়াও, বিশ্ব ভারতী জানিয়েছে, এলাকায় ২২ কিমি ঘেরার কাজ সম্পন্ন। ৫ কিমি ঘেরার কাজ চলছে। ৩ কিমি ঘেরার কাজ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। রবীন্দ্রভবন, চিনা ভবন, দু-একটি খেলার মাঠ ছাড়া ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিশ্ব ভারতী ক্যাম্পাস ঘেরার কোন পরিধি ছিল না।
২০০৪ সালে নোবেল পুরস্কার ও অন্যান্য জাতীয় সম্পদ চুরি যাওয়ার পর উচ্চ পর্যায়ের কমিটি ক্যাম্পাস সুরক্ষা, বিশ্ব বিদ্যালয়ের জায়গা যা অধিকৃত এবং বিভিন্ন রাস্তা যা বিশ্ব বিদ্যালয়ের এলাকা দিয়ে গেছে ইত্যাদি বিষয়ে জোর দেন।
তদানীন্তন সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা, হরিপদ রায় আই এস, ব্রিগেডিয়ার এস কে ভট্টাচার্য, শ্যামল কান্তি চক্রবর্তী প্রমুখের নেতৃত্বে রিপোর্ট ইউ জি সির কাছে জমা পড়ে ২০০৪ সালেই। তার ভিত্তিতে।
বিশ্ব ভারতী তার প্রেক্ষিতে ২০০৫ – ২৫ সাল পর্যন্ত একটি রেজ্যুলেশন করে ২০০৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি কর্ম সমিতির বৈঠকে।
জেলা প্রশাসনের প্রস্তাব, এই সমস্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ভারত সরকারের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ১০ কোটি টাকার তহবিল দিয়ে এই ঘেরার দীর্ঘ প্রক্রিয়া চলতে শুরু করে।
কাজ ধীর গতিতে চলে ২০০৮ সাল পর্যন্ত, কারণ বিভিন্ন সময়ে মানুষের বাধার জন্য। ২০০৮ সালে সঙ্গীত ভবনের ছাত্রী শাস্বতী পাল খুন হওয়ার পর কাজে গতি পায়। যদিও, বিশ্ব ভারতীর এই আহ্বানে প্রবীণ আশ্রমিকদের একাংশ কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাবকেই প্রকট করেছেন।
সোমবার সমস্ত ভবনের অধ্যক্ষ, প্রধান এবং আধিকারিকদের নিয়ে এক বৈঠকে সর্ব সম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে ছাত্র ছাত্রী স্বার্থে বিশ্ব ভারতীকে সচল রাখতে বদ্ধপরিকর।
বিশ্ব ভারতী ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি উত্তেজনা পূর্ণ হওয়ায় বাড়ি থেকেই সেই কাজ করা হবে। যেহেতু এই পরিস্থিতিতে সমস্ত অফিস খুলে রাখা সমীচীন নয়। বিশ্ব বিদ্যালয়ের কর্মীদের বিভিন্ন মৌখিকভাবে ভয়ঙ্কর হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে।
বিশেষ করে মহিলাদের। সেই কারণে, তাঁদের ক্যাম্পাসে আসতে দৈনিক কাজ করার জন্য আসতে বলা সঠিক হবে না। তবে পড়ুয়াদের স্বার্থে বিভিন্ন কাজ চলতে থাকবে। যার মধ্যে রয়েছে ভর্তি, পরীক্ষা, অন লাইন ক্লাস ইত্যাদি।
বিশ্বভারতী নিয়ে সিবিআইয়ের দাবিতে হাইকোর্টে মামলা
আমাদের বিভিন্ন পরীক্ষাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা আছে, তাই এই মুহূর্তে যদি দুষ্কৃতীরা ভাঙচুর করে, তাহলে চলতে থাকা মূল্যবান গবেষণা নয়, বিশ্ব বিদ্যালয়ের বহু আর্থিক ক্ষতি হবে।
বর্তমানে করোনা ভাইরাস ও লকডাউন জনিত পরিস্থিতিতে বিশ্বভারতী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ” স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রটোকল ( এম এইচ সপ) ” এর উল্লেখ করে বলে যে, বিশ্ব ভারতী তার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসবে সেই নিয়মেই।
চলতি বছরের ৩১ অগাস্ট এব্যাপারে সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে এবং তার পর পুনরায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কেন পাঁচিল বা বেড়া প্রয়োজন সে ব্যাপারে বার্তা দেওয়া হবে। বিশ্ব বিদ্যালয় চায় যাতে কোন পড়ুয়া আক্রমণের শিকার না হয়। যেটা সাম্প্রতিক অতীতে ঘটেছে।
মেয়েদের হোস্টেলে এসে একজন মেয়ের সঙ্গীকে খুন করা হয়। আরেকবার এক স্বামী স্ত্রী বিশ্ব বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আত্মহত্যা করেন। সেই কারণে এগুলো দরকার, যাতে বিশ্ব ভারতীর সম্মান নষ্ট না হয় বা এই অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো যায়।
মিউজিয়ামের মূল্য বান জিনিস পত্র সুরক্ষার জন্য এই সুরক্ষা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে। ক্যাম্পাসের মধ্যে একটি রেস্তোরাঁ আছে। যেখানে বহিরাগত ক্রেতারা আসে এবং প্রতিমা হোস্টেল ও সঙ্গীত ভবনের মেয়েদের বিরক্ত করে।
আর বিশ্ব বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সজাগ দৃষ্টি রাখা সত্বেও এ সবের জন্য উপাচার্য ও তার আধিকারিকদের দায়ী করা হয়। যে সমস্ত আশ্রমিকরা যাঁরা রবীন্দ্র ভাবনা ধারা প্রাণিত, তাঁরা যদি এই নিরাপত্তার দিকটি ভেবে দেখেন, তাহলে বাধিত হবে বিশ্ব ভারতী। পাশাপাশি, জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেয় বিশ্ব ভারতী।
আশ্রমিক সহ অন্যান্যদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে, তাঁরা যদি বিশ্ব ভারতীর বে আইনি ভাবে অধিগৃহিত জমি ফিরে পেতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে রবীন্দ্রনাথ ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য রেখে গেছেন, তা টিকে থাকবে।
অন্যদিকে, এবিভিপির তরফে বোলপুরে বিশ্বভারতীতে হামলা এবং বসন্ত উৎসব ও পাশাপাশি পৌষ মেলা বন্ধের প্রতিবাদে সামিল হয় মুখে রবীন্দ্র সংগীত ও পোস্টার হাতে নিয়ে।