পুলিশের ব্যর্থতা স্পষ্ট, বাগুইআটির জোড়া খুন কাণ্ডে সিবিআইয়ের দাবি
দ্য় কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বাগুইআটির মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দুই যুবক অতনু দে ও অভিজিৎ নস্করের খুনের তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়ার দাবি উঠল। মৃত দুই তরুণের পরিবারের পাশাপাশি এলাকাবাসীও পুলিশের ভূমিকায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ। তাঁরা সকলেই দাবি তুলেছেন, পুলিশকে দিয়ে হবে না, অতনু-অভিজিতের খুনিদের ধরতে সিবিআই চাই।
সিবিআই চেয়ে এখনও কেউ আদালতের দ্বারস্থ না হলেও বাগুইআটি থানার ভূমিকা যে সঠিক ছিল না তা সরকারের পক্ষ থেকে কার্যত মেনে নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের পুর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “পুলিশের আরও তৎপর হওয়া উচিৎ ছিল। ওদের ভূমিকা ঠিক নয়। বাগুইআটির ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। দুটো তরতাজা ছেলের প্রাণ চলে গেল। মৃতদের পরিবারের পাশে আছি আমরা।”
নবান্ন থেকে ফিরহাদের এই বার্তা দেওয়ার সময়ই জানা যায় বাগুইআটি থানার ওসি কল্লোল ঘোষকে ক্লোজ করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে এই ঘটনার তদন্তভার সিআইডির হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি।
আসানসোলে আনচান! আজ সব কাণ্ড শিল্পাঞ্চলে
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জরুরী ভিত্তিতে তাঁকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গোটা তদন্ত প্রক্রিয়ার দ্রুত শেষ করার পাশাপাশি খোদ ডিজি মনোজ মালব্যকে বিষয়টি মনিটরিং করার নির্দেশ দেন মমতা।
অতীতে বিভিন্ন ঘটনায় রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশকে আড়াল করার চেষ্টা হলেও, এবার সম্ভবত এলাকাবাসীর ক্ষোভ আঁচ করে বিরোধীদের পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকার সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরাও। তবে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে থাকায় তৃণমূলের অস্বস্তি যে বেড়েছে তা বলাই বাহুল্য।
মৃত দুই তরুণের পরিবারের অভিযোগ, তাঁরা যতবার বাগুইহাটি থানায় গিয়েছিলেন, প্রতিবারই বুঝিয়ে সুজিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ কখনোই সক্রিয় মনোভাব দেখায়নি। এরপরই পুলিশের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান সম্পর্কে মামাতো-পিসতুতো ভাই অতনু ও অভিজিতের পরিবারের সদস্যরা।
শাসকদলের একাংশের আশঙ্কা, বাগুইআটির জোড়া খুন কাণ্ডে যেভাবে পুলিশের ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তাতে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে কেউ আদালতের দ্বারস্থ হতেই পারে। সেক্ষেত্রে বিপাকে পড়বে রাজ্য সরকার।
কারণ এই গাফিলতি দেখে হাঁসখালি কাণ্ডের মতো আদালত সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দিলে রাজ্যের শাসক দল হিসেবে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়বে। পাশাপাশি শাসক দলের অভিযোগ এই পরিস্থিতির সুযোগে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে বিজেপি। তবে তাদের সেই পরিকল্পনা সফল হবে না বলেই আশা তৃণমূল নেতাদের।