মনীশ শুক্ল হত্যাঃ প্রশ্ন অনেক, উত্তর অধরা

নয়ন রায় ও অঙ্কিত মুখার্জী

অর্জুন সিং বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই প্রায়শই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে ব্যারাকপুর। কখনো শাসক বনাম বিরোধী দ্বন্দ্ব, বোমাবাজি, তো আবার কখনো তৃণমূল ও বিজেপির অন্দরে (স্ব স্ব রাজনৈতিক দলের অন্তর্কলহ) অশান্তি। আবার খোদ ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং বারবার শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তাঁকে খুনের চক্রান্ত করছে তৃণমূল।

প্রবাহমান রাজনৈতিক চাপানউতরের মাঝেই রবিবার রাত সাড়ে ৮ টা নাগাদ টিটাগড়ে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে ঘটনাটি ঘটে। মোটর সাইকেলে চেপে আসা দুষ্কৃতীরা খুব কাছ থেকে পর পর গুলি করে মণীশকে লক্ষ্য করে।তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তাঁর সঙ্গী গোবিন্দ। গুলিবিদ্ধ মণীশকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/bjp-leader-of-barrackpore-manish-shukla-killed/

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/manish-shukla-murder-case-governor-jagdeep-dhankar-summoned-dgp-and-acs-home-regarding/

মনীশ শুক্লর মৃত্যুর খবর পাওয়ার ঘন্টাদুয়েকের মধ্যে টিটাগড়ের সেই জায়গায় পৌঁছেছিলাম আমরা। সেখান থেকেই ঘটনার পরবর্তী এলাকার পরিস্থিতি সহ পুলিশের ভূমিকা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সেখানেই উঠে এল বেশ কয়েকটি প্রশ্ন।

প্রথমত, মণীশ বিটি রোডের ধারে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন, সেই জায়গাটি টিটাগড় থানা এবং পুরসভার মাঝামাঝি। সেখানেই একাধিক গুলি বৃষ্টি হয় মনীশের উপরে। সেই গুলির শব্দ কেন থানা অবধি তৎক্ষণাৎ পৌঁছলানো না?

দ্বিতীয়ত, মনীশ গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ অবরোধ করা হয় বিটি রোড। পরে পুলিশের তৎপরতায় তা উঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে রাত ১২ টা নাগাদ আমরা পৌঁছে দেখি হাতে গোনা কয়েকজন বিজেপি কর্মী ছাড়া আর কেউই নেই। কেন কর্মী সমর্থকদের দেখা মিলল না?

তৃতীয়ত, মণীশের খুনের পিছনে তৃণমূল কংগ্রেসকেই দায়ী করেছেন বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। অভিযোগ করেন,‘‘গোটা ঘটনাটি ঘটেছে টিটাগড় থানার সামনে। অর্জুন সিংহ অনেক দিন ধরেই ওই এলাকার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা এবং যুগ্ম কমিশনার অজয় ঠাকুরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আজকের ঘটনার পর আমি এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত দাবি করছি। সেই সঙ্গে পুলিশের ভূমিকারও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।” তাহলে পুলিশ যখন টিটাগড়ে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ের অনতিদূরে একটি ওষুধের দোকানে সিসিটিভি ফুটেজ দেখছিলেন কেন সেখানে দলের কর্মী সমর্থকদের পাওয়া গেল না? যারা ছিলেন তার পুলিশ কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দা। কেউই বিজেপি কর্মী নয়। অনন্ত এমনটাই জানা গেছে।

রাত ১.৩০ অবধি পুলিশ ও সাধারণ কয়েকজন মানুষ ছাড়া আর কোনো বিজেপি নেতা-কর্মী-সমর্থককে দেখা যায়নি।

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের রাজনীতিতে খড়দা বাসী মনীশ শুক্ল পরিচিত ছিলেন সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ডানহাত হিসাবে। সেই ডানহাতেরই মৃত্যুতে গোটা এলাকা কিছুক্ষণের জন্য উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও তারপর নিশ্চুপ হয়ে যায়।

এর কারণ কী? করোনা সংক্রমণের ভয় নাকি অন্য কোন গল্প রয়েছে এর ভিতরে?

যদিও সবটাই তদন্ত সাপেক্ষ….

সম্পর্কিত পোস্ট