২১ এর আগে সিঙ্গুরের মাটিতে ফের বিপ্লবের ইঙ্গিত
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ একুশের নির্বাচনের আগে জেলায় জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের নয়া কমিটি গঠন নিয়ে ক্ষোভ অব্যাহত। কোচবিহারের মিহির গোস্বামী, ব্যারাকপুরের শীলভদ্র দত্তের পর এবার বিস্ফোরক সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই ওরফে সিঙ্গুরের বিধায়ক ও প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।
ব্লক সভাপতি নির্বাচন নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। বেচারাম মান্না ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিকে ব্লক সভাপতি করার সিদ্ধান্ত তাঁর পক্ষে মেনে নেওয়া অসম্ভব বলে রবিবার স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। প্রয়োজনে অন্য দলে যাওয়ার কথা ভাববেন বলে হুঁশিয়ারি দেন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।
রবিবার বিকেলে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবকে সঙ্গে নিয়ে জেলা কমিটির পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করেন। সেখানে দেখা যায় সিঙ্গুর বিধানসভা থেকে বাদ পড়েছেন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের অনুগামীরা। বর্ষীয়ান বিধায়ক এই পরিস্থিতিতে চরম ক্ষুদ্ধ হন।
তিনি স্পষ্ট বলেন, তার পক্ষে দল করা সম্ভব নয়। যারা দুর্নীতি করছেন তারা এখন দল পরিচালনার দায়িত্বে। দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নয় যারা তাদের থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
তিনি আরো বলেন দল আগে আমার প্রতি যথেষ্ঠ সম্মান দেখালেও এই মুহূর্তে আমাকে অবহেলা এবং বর্জন করছে। আমি ভোটে দাঁড়ালেও চক্রান্ত করে আমাকে হারিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। সে চেষ্টা আগেও করা হয়েছে।
২০১১ সালে সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম আন্দোলনই কিন্তু বামেদের ৩৪ বছরে শাসন থেকে উৎখাত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। সেখানে ভূমিকা ছিল রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যেরও।
প্রসঙ্গত যত নির্বাচনে এগিয়ে আসছে ততই দলের অন্দরে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ। আগেও ইলেকশন স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ করেছিলেন মিহির গোস্বামী ও শীলভদ্র দত্ত।
কোন রাজনৈতিক দল কন্ট্রাক্টর সংস্থাকে দিয়ে চালাতে গেলে সেই সংগঠনের ক্ষতির সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ বলে মন্তব্য করেছিলেন মিহির গোস্বামী। পাশাপাশি শীলভদ্র দত্ত অভিযোগ করেছিলেন বাইরে থেকে রাজনীতি করা লোক যে সমস্ত প্রশ্ন করছেন তাতে দীর্ঘদিন ধরে যারা রাজনীতি করছেন তাদের সম্মানহানি হচ্ছে। তিনি আরও বলেছিলেন যারা একদিনের জন্য রাজনীতি করেনি তারা কি করে বুঝব রাজনীতির মর্ম কি!
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/the-election-commission-in-an-all-party-meeting-today-with-the-voter-list/
রাজনৈতিক মহলের কথায়, ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং জনসংযোগের অভাব কিন্তু তৃণমূলের বিপর্যয়ের মূল কারণ ছিল। ২০২১ এর নির্বাচনে যাতে তা আর পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্যই প্রশান্ত কিশোরের ওপর দায়িত্ব বর্তেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জনসংযোগ বাড়াতে দিদিকে বলো কর্মসূচি এবং বাংলার গর্ব মমতা কর্মসূচি সফল হলেও দলের অন্দরে যে সমস্যা অর্থাৎ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তা এখনও পর্যন্ত কমার কোন লক্ষনই কিন্তু নেই। বরং যত দিন যাচ্ছে তত প্রখর হয়ে উঠছে।
আর এতেই বিরোধীরা নতুন করে যে হালে পানি পেয়ে যাচ্ছেন তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। বিধানসভা নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েক মাস। প্রশান্ত কিশোর যতই দল পরিচালনা করুন না কেন, দলনেত্রী হিসেবে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দলের ব্যাটন ধরতে হবে। নাহলে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার মাটি থেকে ঘাসফুলের বিদায় ঘটলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।