নয়া শিক্ষা নীতি নিয়ে আপত্তি বাংলার, মতামত জানতে ছয় সদস্যের কমিটি

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ তামিলনাড়ুর পথে হেঁটে মোদি সরকারের নয়া শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে সরব হল রাজ্য। সোমবার দুপুরে বেহালায় রাখিবন্ধন উত্‍সবে যোগ দিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, সদ্য ঘোষিত কেন্দ্রীয় শিক্ষা নীতি নিয়ে আপত্তি রয়েছে।

এ বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য একটি ছয় সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে। মূলত কেন্দ্রের কাছে নিজেদের আপত্তি তুলে ধরতেই এই কমিটি গঠন বলে খবর৷ ছয় সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী এবং সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার, শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, সাংসদ তথা প্রাক্তন অধ্যাপক সৌগত রায়৷

জাতীয় শিক্ষানীতি সম্পর্কে কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ করবে রাজ্য। আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে এই কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে রাজ্যকে৷ ওই রিপোর্ট পাঠানো হবে কেন্দ্রকেও। পাশাপাশি, একাধিক শিক্ষক সংগঠনের থেকেও চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্পষ্টভাষায় বলেন, নয়া শিক্ষানীতি নিয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। আমরা লিখিত আকারে তা কেন্দ্রকে জানিয়েছিলাম। শিক্ষানীতি চালু করতে গেলে আগে অনেক কিছু করতে হবে। পাঁচ বছরে এই শিক্ষানীতি চালু করা সম্ভব নয়। পড়াশোনার কোনও নিয়ম নীতি পরিবর্তন হল না, আলাপ-আলোচনা হল না।

পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য যে খরচ হবে, তা বহন করবে কারা? এসব কিছু না করেই হঠা‍ৎ করে বলে দেওয়া হল নয়া শিক্ষানীতি কার্যকর করতে হবে। এই ভাবে জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করা যায় না।

আলিমুদ্দিনের চিন্তা বাড়িয়ে আক্রান্ত মহম্মদ সেলিম

নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভার সিলমোহর দেওয়া নয়া শিক্ষানীতির যে প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকার এনেছে, তাতে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক,উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক, স্নাতকোত্তর সব স্তরেই আমূল বদল ঘটতে চলেছে। এই বদলের পক্ষে বা বিপক্ষে অনেক রকম বিতর্কও উঠছে।

শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও এর বিরোধিতা শোনা যাচ্ছে।নয়া জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতায় সরব হয়েছে তামিলনাড়ুও। তবে দ্রাবিড়ভূমের মূল আপত্তি ‘হিন্দি আগ্রাসনে’র বিরুদ্ধে। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ই কে পলানীস্বামী এদিন সকালে জানিয়ে দিয়েছেন, নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে যে ‘তিন ভাষা ফর্মুলা’র কথা বলা হয়েছে, তা মেনে নেওয়ার প্রশ্নই নেই।

তাঁর কথায়, তিন ভাষার এই ফর্মুলা দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। প্রয়াত আন্নাদুরাই, এম জি রামচন্দ্রন এবং জয়ললিতার আদর্শ অনুসরণ করে আমরা এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আবেদন জানাব।

ষাটের দশকে কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারের যখন হিন্দিকে বাধ্যতামূলক সরকারি ভাষার তকমা দিতে সক্রিয় হওয়ায় তামিলনাড়ু কী ভাবে প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছিল, সে প্রসঙ্গও তুলেছেন পলানীস্বামী। বস্তুত, মোদি সরকারের বাধ্যতামূলক হিন্দির প্রতিবাদে গত বছরও অশান্ত হয়েছিল তামিলনাড়ু।

বিজেপির দাবি উপেক্ষা করেই লকডাউনের দিন বদল

চাপের মুখে কেন্দ্র সে সেময় জানিয়েছিল, স্কুল শিক্ষায় ‘তিন ভাষা নীতি’ (ইংরেজি, হিন্দি এবং স্থানীয় একটি ভাষা) বলব‍ৎ করা হবে না। কিন্তু নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে সেই প্রতিশ্রুতি মানা হয়নি বলে তামিলনাড়ুর শাসকদল এডিএমকে সোমবার অভিযোগ তুলেছে। ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রী পলানীস্বামীর দল বিজেপির অন্যতম জোটসঙ্গী।

সম্পর্কিত পোস্ট