করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে সংকটে বাংলার চা ব্যবসা
সর্নিকা দত্ত
করোনা ভাইরাসকে আটকাতে গিয়ে একটানা লকডাউনের কারণে বড়সড় সংকটে বাংলার চা ব্যবসা ।
দার্জিলিংয়ের চা এর চাহিদা বিশ্বজুড়ে।
বছরের যে সময়টায় পাতা তোলার কাজ হয় সে সময়ই লকডাউন থাকায় এই কাজ ব্যাহত হয়েছে ফলে সমস্যায় চা ব্যবসায়ীরা।
চা শিল্পের বেহাল দশার শুধু পশ্চিমবঙ্গে এমন ভাবলে ভুল হবে একই অবস্থা অসমের চাবাগান গুলিতে।
দ্য ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন (আইটিএ)-র তরফে বলা হয়েছে স্বাধীনতার পরে চা শিল্পের উপরে এমন সংকট কখনোই আসেনি।
সংকটে বাংলার চা ব্যবসা
চা শিল্পের এই সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, লকডাউন চলাকালীন সময় (মার্চ -এপ্রিল- মে মাসে) এই দুই রাজ্যে ১৪ কোটি কিলোগ্রাম কম চা উৎপাদন হয়েছে।
গত বছরের নর্থ ইন্ডিয়ান অকশন প্রাইসের হিসাব অনুসারে এর ফলে টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ২১০০ কোটি টাকা।
এই সংগঠনের হিসেব অনুযায়ী, দেশ জুড়ে লকডাউনের জেরে কর্মস্থলে কর্মীর অভাবও দেখা দিয়েছে। মোটের উপর বেহাল অবস্থার চা বাগানগুলোর।
সংগঠনের তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে গিয়ে মার্চ-এপ্রিল মাসে এই দুই রাজ্যে চা উৎপাদন ৬৫ শতাংশ কমে গিয়েছে।
করোনার কবলে এবার বাঁকুড়া, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা
অন্যদিকে মে মাসে উৎপাদন কমেছে ৫০ শতাংশ।
এর ফলে আগামী দিনে বিপুল ক্ষতি সামাল দেওয়া বেশ শক্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্থিক প্যাকেজ দাবি করেছে আইটিএ।
এদিকে,এই দুই রাজ্যের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে গোটা দেশে চা শিল্পের একটি সম্ভাব্য চিত্র তাদের রিপোর্টে তুলে ধরেছে ফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন।
তাদের অভিমত, দীর্ঘ এই লকডাউনের জেরে ২০২০ ক্যালেন্ডার বর্ষে এদেশে চা উৎপাদন ৮ কোটি কিলোগ্রাম কম হতে পারে।
এর ফলে ক্ষতির অংক পৌঁছে যেতে পারে দুই হাজার কোটি টাকায় বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করোনা ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য ২১ দিনের লকডাউন জারি করেছিলেন।
তার ফলে স্তব্ধ হয়ে যায় সব রকম অর্থনৈতিক কার্যকলাপ। তারপরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বেশ কয়েক দফায় লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।
তবে পরবর্তীকালে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড়ও দেওয়া হয়েছে। এই ছাড়ের তালিকায় রয়েছে চা শিল্পও।
তবে অপেক্ষাকৃত কম কর্মী নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আসলে মার খাচ্ছে চা ব্যবসা। এই অবস্থায় চা ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে আছেন কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সেদিকেই।