নির্বাচনে ভরাডুবির দায় মাথায় নিয়ে ফ্রন্ট চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে চান বিমান বসু
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক: সদ্য সমাপ্ত বিধানসভায় ভরাডুবির দায়িত্ব নিয়ে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে চান সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা বিমান বসু।
নির্বাচনে ভরাডুবির পর একের পর এক ছোট-বড়-মেঝ নেতারা মুখ খুলেছেন। মুখ খুলেছে শরিক দলের নেতারাও। এই অবস্থায় বিমান বাবু তার দীর্ঘদিনের ফ্রন্ট চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে চাইছেন। আর নিজের ইচ্ছার কথা বামফ্রন্টের শরিক দলগুলিকে জানিয়েও দিয়েছেন তিনি।
সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের পাশপাশি আব্বাস সিদ্দিকীর ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন সিপিআইএমের বর্ষীয়ান নেতা বিমান বসু।
পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ ভেবেছিলেন, অন্তত ধর্মনিরপেক্ষ ও সংখ্যালঘু মনোভাবাপন্ন ভোটারদের সমর্থনে বাজিমাত করা যাবে। কিন্তু তাঁর সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে শুধু বামফ্রন্টের অন্দরেই নয়, এমনকী বাম মনোভাবাপন্ন বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মনেও অসন্তোষ দানা বাঁধে।
অনেকেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে প্রশ্ন তোলেন, বিজেপিকে রোখার দোহাই পেড়ে কীভাবে আব্বাস সিদ্দিকীর মতো উগ্র ধর্মীয় নেতার সঙ্গে হাত মেলাল তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতার বুলি আওড়ানো বামপন্থীরা।
ভোট পর্বে সেই সমালোচনাকে পাত্তাই দেননি বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু সহ সিপিআইএমের রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ। কিন্তু ইভিএম খুলতেই দেখা যায়, ভোটে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস।
দু’পক্ষের একজন প্রার্থীও জিততে পারেননি। কেন জাত-কুল দুই খোয়ানো হল সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। সিপিআইএমের তিন নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য, কান্তি গঙ্গ্যোপাধ্যায় ও অশোক ভট্টাচার্যের মতো নেতারা আইএসএফের সঙ্গে জোট গড়া নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে তুলোধনা করেন।
ফরওয়ার্ড ব্লকের বাংলা কমিটির সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়, সিপিআই সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়রাও ক্ষোভ উগরে দিয়ে পরোক্ষে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে কাঠগড়ায় তোলেন।
কার্যত আইএসএফের সঙ্গে জোট বাঁধার খলনায়কের আখ্যা পাওয়ায় ভোটে ব্যর্থতার দায় নিজের কাঁধে নিয়ে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করেন বিমান বসু।