আনিস খানের মৃত্যুতে মহাফ্যাসাদে বিজেপি!

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ আমতার মৃত ছাত্রনেতা আনিস খান এ রাজ্যের সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ ছিলেন। প্রগতিশীল এই ছাত্রনেতা নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্টে বরাবরই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, উগ্র জাতীয়তাবাদের বিরোধিতা করে এসেছেন।

আর এতেই মহাফ্যাসাদে পড়েছে বিজেপি। এত বড় একটি ইস্যু তারা হাতছাড়া করতে চাইছে না। আবার তাদের বিরুদ্ধেই যে আনিসের প্রধান লড়াই ছিল, তা মনে করে বিরোধিতার স্রোতেও সহজে গা ভাসিয়ে দিতে কুণ্ঠাবোধ করছেন মুরলীধর সেন লেনের কর্তারা।

বিজেপির উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি কল্যাণ চৌবে ঘোষণা করেছিলেন আনিস খানের রহস্যজনক মৃত্যুর সঠিক তদন্তের দাবিতে তারা সোমবার শোভাবাজার থেকে মিছিল করবেন। এমনকি মৃত ছাত্র নেতার বাড়িতে বিজেপির একটি প্রতিনিধিদলের যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঘটনাচক্রে এইদুটো কর্মসূচির একটিও পালন করা হয়নি।

শোভাবাজারে বিজেপির মিছিল বের হলেও তা আনিস খানের বদলে দাড়িভিটে মৃত ছাত্রের স্মরণে বদলে দেওয়া হয়। দাবি করা হয় মাতৃভাষায় পড়াশোনা দাবি জানিয়ে দাড়িভিটে মারা গিয়েছিল ছাত্ররা। তাই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন সেই ঘটনাকে স্মরণ করা হয়েছে।

Anis khan Death : রিজওয়ানুর কাণ্ডের সঙ্গে আনিসের যোগ, রাজ্য জুড়ে দফায় দফায় প্রতিবাদ

আনিস খানের রহস্যজনক মৃত্যুর প্রতিবাদে দলীয় কর্মসূচি নিয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে দায় এড়িয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিজেপির কোনও শীর্ষস্থানীয় নেতাই এই নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। কেবলমাত্র রাজ্যের বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়ে অল্প কয়েকটি মন্তব্য করে দায় সারেন।

এই ছাত্র নেতার মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রবল আক্রমনাত্মক ভূমিকায় ময়দানে নেমেছে বামেরা। তারা একাধিক আন্দোলন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যের শাসক দল ও পুলিশকে নিশানা করছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হয়েও তারা কোন‌ও প্রতিবাদ না করলে বামেরা সম্পূর্ণ ডিভিডেন্ড নিয়ে নেবে বলেই মনে করছেন বিজেপির একাংশ।

যদিও এই অংশের দাবির সঙ্গে সম্পূর্ণ সহমত না হন বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর কর্তারা। তাদের একজনের মতে, একজন ছাত্র নেতার রহস্যজনক মৃত্যু অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। এক্ষেত্রে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মনে রাখতে হবে আনিস খান আমাদের আদর্শের বিরুদ্ধে ছিল। সে সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব পোস্ট করেছে তা আপাতদৃষ্টিতে ভারতবিরোধী বলে চালিয়ে দেওয়া যায়। তাই আনিসের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে আমাদের পুরনো সমর্থকদের হারানোটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না!

গোটা ঘটনাক্রম থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার, আনিস খানের মৃত্যুর থেকেও বিজেপির কাছে বড় হয়ে উঠেছে ভোটের ফায়দা পাওয়ার বিষয়টি। এই জায়গায় তাদের বলে বলে মাত দিয়েছে বিধানসভায় শূন্য হয়ে যাওয়া বামেরা।

সম্পর্কিত পোস্ট