প্রচারে থাকতেই হামলার নাটক বিজেপিরঃ মমতা

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলা হয়। ঘটনায় উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা শিকেয় উঠেছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি নেতৃত্ব। পাল্টা পুরো ঘটনাটিকে নাটক বলে দাবী করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রচারে থাকার জন্য এটা বিজেপির কৌশল, কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর।

বৃহস্পতিবার মেয়ো রোডে কৃষক আইনের প্রতিবাদে তৃণমূলের অবস্থান কর্মসূচীর তৃতীয় দিনে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, লোক হচ্ছে না বলেই জাতীয় সংবাদমাধ্যমের নজর কাড়তে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। কোন পঞ্চাশটি গাড়ির কনভয় নিয়ে বিজেপি সভাপতি যাচ্ছিলেন? সেই প্রশ্নও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে ছোট কোনও ঘটনা ঘটলেও প্রকৃত কি হয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, একটা নেতার পিছনে ৫০ টা গাড়ি কেন যাবে? তার পিছনে আবার ৪০ টা বাইকের কনভয়। কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে এসে কিভাবে হামলা হয়? নাকি বদনাম করতে এই হামলা? প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি আরও বলেন, রাজ্য নিরাপত্তা না দিতে চাইলে সেটাও বলতে পার। আমরা বিরোধীদেরও নিরাপত্তা দিই। রাজ্যে এলে তোমরা রাজ্যকে জানাও না, আর যখন নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপাও। নেতাদের। তবে সম্মান পেতে হলে, সম্মান দিতে হয়। স্পষ্ট বার্তা মমতার।

আরও পড়ুনঃ ভোটযুদ্ধে তৃণমূলের হাতিয়ার উন্নয়ন, রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করে বার্তা সুপ্রিমোর

উল্লেখ্য,  এদিন ডায়মণ্ড হারবারে দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে হামলার মুখে পড়েন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং বিজেপির একাধিক নেতৃত্ব । এই কর্মসূচীতে ছিলেন দিলীপ ঘোষ, কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, অনুপম হাজরারা। শিরাকোলে কনভয় পৌঁছোতেই রাস্তার দু’ প্রান্ত বিজেপি নাতদের গাড়ির ওপর হামলা চালানো হয় । যা নিয়ে সরগরম হয় রাজ্য রাজনীতি।

এদিকে, ডায়মন্ড হারবারের ঘটনার পর রাজ্য পুলিশের তরফে ট্যুইট করে জানানো হয়,  নাড্ডার কনভয়ে কোনও হামলা হয়নি। হামলাস্থল থেকে দুরত্বে ছিল তাঁর কনভয়। পুলিশের ট্যুইটে আরও বলা হয়, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি শ্রী জে পি নাড্ডা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে নিরাপদে উপস্থিত হয়েছেন। তাঁর কনভয়ে কিছুই হয়নি। দেবীপুরে কয়েকজন পথচারী হঠাৎ তাঁর কনভয়ের পিছনে দীর্ঘ যানবাহনের দিকে পাথর ছোঁড়ে।

 

এদিন আরামবনাগের জনসভা থেকে বিজেপিকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আজ বিজেপির নাড্ডা ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে গাড্ডায় পড়েছে। আমি তাতে কি করতে পারি? সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের দায়িত্ব আমার নয়। সমস্ত কঠিন সময়ে বিজেপি নেতাদের দেখা মেলেনি। একমাত্র ছিলেন কালীঘাটে টালুর ছাদের তলার সেই মহিলা।

 

এদিন জেপি নাড্ডার ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এদিন টুইট করে রাজ্যপাল বলেন, ”অরাজকতা ও অনাচারের উদ্বেগজনক এই তথ্যে আমি উদ্বিগ্ন। রাজনৈতিক পুলিশের সহযোগিতায় শাসকদলের ক্যাডাররা বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতির কনভয়ে হামলা চালিয়েছে। সকালেই মুখ্যসচিব ও ডিজি-কে সতর্ক করেছিলাম। তা সত্ত্বেও এই ঘটনা আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতিতে ধস নামার ইঙ্গিত দেয়।”

বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারে জেপি নাড্ডার কনভয় হামলার তীব্র প্রতিবাদ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। টুইটারে তিনি বলেন, এটি খুবই নিন্দনীয়। বিষয়টি নিয়ে কোনও নিন্দাই কম হবে না। এই আক্রমণকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্য সরকারকে এর জবাব পশ্চিমবঙ্গের শান্তিকামী মানুষের কাছে দিতে হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট