২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত বাতিস্তম্ভ ও খোলা তার বাক্সবন্দী করার নির্দেশ বর্ধমানের প্রশাসক প্রণব চ্যাটার্জির
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক : দমদম এলাকায় অতিবৃষ্টির কারণে মৃত্যুর ঘটনা রাজ্যবাসীকে নাড়িয়ে দিয়েছে। তাই বর্ধমান শহরে বিদ্যুতের তার যেখানে সেখানে খোলা রয়েছে, তার থেকে কোন মর্মান্তিক সংবাদ যেন কানে না আসে। হুঁশিয়ারি বর্ধমান পৌরসভার পৌর প্রশাসক প্রণব চ্যাটার্জীর।
তড়িঘড়ি শহরে যে সমস্ত বিদ্যুতের বাক্স খোলা এবং তার খোলা আছে, যারা ঠিকাদার বিদ্যুতের কাজ করেন তাদের অবিলম্বে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিলেন তিনি। পাশাপাশি পৌরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের অধিকারীকদেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
কোনভাবে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা যাবে না। ২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি খোলা তার বাক্সবন্দী না করা হয় তাহলে যে সমস্ত ঠিকাদাররা বিদ্যুৎ এর কাজ করেন তাদের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়ার হুমকি পৌর প্রশাসক প্রণব চ্যাটার্জীর।
স্বাভাবিকভাবেই নড়েচড়ে বসেছে বিদ্যুৎ বিভাগে যারা ঠিকাদার। তাঁর কথায়, “কোনো অজুহাত শুনবো না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খোলা তার সরিয়ে ব্যবস্থা করতে হবে। মানুষের স্বার্থে। কারন মানুষ পৌরকর দেয়। তাদের জীবন আমরা নিতে পারি না। তাই দমদমের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন বর্ধমান শহরে শুনতে না হয়। তাহলে কাউকে ছেড়ে কথা বলবো না। যত দূর যেতে হয় যাব।”
তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রীর নির্দেশ মানুষের জীবন আগে। তার সঙ্গে পরিষেবা গুরুত্বপূর্ণ। কার্জন গেট থেকে শুরু করে বিসি রোড জি টি রোড পুলিশ লাইন বড়নীলপুর এবং স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুতের খোলা তারের অভিযোগ পৌর প্রশাসকের কাছে এসেছে। তাই এই খোলা তারের ব্যবস্থা পৌরসভার সহযোগিতায় বিদ্যুৎ বিভাগের ঠিকাদারদের আজকেই করতে হবে। না করলে বিপদ বারবে আপনাদের।”
এক নাগাড়ে বৃষ্টি। খোলা বিদ্যুতের খুঁটির তার। কোথাও আবার ঝুলছে তারের কুন্ডলী। রাস্তার পাশের পোস্ট থেকে শট সার্কিট হওয়ার আশঙ্কায় শঙ্কিত সাধারণ মানুষ। সুরক্ষার প্রশ্ন তুলে পৌরপ্রশাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন এলাকাবাসীরা।
বিষয়টি নজরে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। দমদমের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে আধিকারিক ও কর্মীদের কড়া বার্তা দিয়েছেন বর্ধমান পৌরসভার মুখ্য পৌর প্রশাসক প্রণব চ্যাটার্জী।
কড়া নির্দেশ পেয়েই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বেরিয়ে পড়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা। রাস্তার ধার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাতিস্তম্ভ। বর্ধমান শহরের প্রায় সবকটি রাস্তায় অধিকাংশ বাতিস্তম্ভের অবস্থা বেহাল।
সবকটি বাতিস্তম্ভের তারের সংযোগস্থান খোলা।
কোথাও বক্সের মধ্যে নেই ঢাকনা। কোথাও ধাতব ইলেকট্রিক পোলের খোলা জায়গা দিয়ে দেখা যাচ্ছে তার। কোথাও তার ঝুলছে বাইরেও। তারের সংযোগ করা রয়েছে উঠে যাওয়া ব্ল্যাকটেপ দিয়ে।
সম্প্রতি জলবন্দি কলকাতা ও তার পার্শবর্তী এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার পরেও বর্ধমান শহরে এই ছবি দেখে শিউরে উঠছেন মানুষ।
মঙ্গলবার ও বুধবার নিম্নচাপের জেরে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে শহরে। জমা জলে ভোগান্তির থেকেও এই পোস্টের খোলা তার থেকে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে বলেই, সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা।