সিএএ বিরোধীদের ছবি দিয়ে হোর্ডিংকে ‘অন্যায়’ বলল এলাহাবাদ হাইকোর্ট, মুখ পুড়ল যোগী সরকারের

যদিও ডিভিশন বেঞ্চ হোর্ডিং লাগানোর এই পদক্ষেপকে ‘অন্যায়’ এবং ‘ব্যক্তির ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় নিরঙ্কুশ দখল’ বলে উল্লেখ করেছে।

দ্য কোয়ারি ডেস্ক : সিএএ বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-এর বিরুদ্ধে আন্দোলন যারা করেছেন, তাঁদের লক্ষ্য করে লখনউ প্রশাসনের  হোর্ডিং লাগানো নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট।

মুখ্য বিচারপতি গোবিন্দ মাথুরের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ রবিবার বেলা তিনটেয় এই মামলা শুনবে।

এদিন সকাল ১০ টায় এই  মামলার শুনানি থাকলেও উত্তরপ্রদেশ সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতে না পৌঁছানোয় তা পিছিয়ে যায়।

যদিও ডিভিশন বেঞ্চ হোর্ডিং লাগানোর এই পদক্ষেপকে ‘অন্যায়’ এবং ‘ব্যক্তির ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় নিরঙ্কুশ দখল’ বলে উল্লেখ করেছে।

এছাড়াও উওত্তরপ্রদেশের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, ‘সুবুদ্ধি বাজায় রাখা উচিত’।

এদিন বিকেল তিনটের  আগে ওইসব হোর্ডিং সরিয়ে আদালতকে তা জানাতেও বলেছে।

শনিবার আদালত এক নোটিশে জেলাশাসক ও বিভাগীয় পুলিশ কমিশনারের কাছে লখনউ শহর জুড়ে ওইসব হোর্ডিং লাগানোর আইনি ব্যাখ্যা চেয়েছে।

উল্লেখ্য, বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ-র বিরুদ্ধে ১৯ ডিসেম্বরের হিংসাত্মক আন্দোলনে অভিযুক্তদের নামে শুক্রবার শহরে পোস্টার ও হোর্ডিং লাগিয়েছে লখনউ প্রশাসন।

ওই হোর্ডিংয়ে অভিযুক্তদের নাম, ছবি ও ঠিকানা উল্লেখে সতর্ক করে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা আন্দোলনের কারণে ক্ষয়ক্ষতির মূল্য না মেটালে তাঁদের সম্পত্তি থেকে তা নেওয়া হবে।

সূত্রের খবর, যোগী আদিত্যনাথ সরকারের নির্দেশেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে লখনউ প্রশাসন।

বেশ কয়েকজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্বের নামও রয়েছে ওইসব হোর্ডিংয়ে।

নাম রয়েছে প্রাক্তন আইপিএস, সমাজকর্মী এসআর দারাপুরি, কংগ্রেস নেতা সদফ জাফর, নাট্যব্যক্তিত্ব দীপক কবীর, শিয়া মৌলবি মৌলানা কালবে সিদ্দিক ও সিবতিইন নুরির।

কংগ্রেস নেতা সদফ জাফর ‘দ্য প্রিন্ট’কে জানান, এই সরকার আমাদের জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আমাদের ঠিকানা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায়  বহু মানুষ জানতে চাইছেন, আমরা জরিমানা দেব কিনা। তিনি বলেন, ‘এই মামলা থেকে আমরা ইতিমধ্যেই জামিন নিয়েছি। সিএএ বিরোধী প্রতিবাদে আমরা তান্ডব করেছি এটা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ।

জাফর বলেন, তাঁরা সিএএ-র বিরুদ্ধে কথা বলতে না পারলেও আমরা এখনও বলছি।

অন্যদিকে প্রাক্তন আইপিএস এসআর দারাপুরি বলেন, সরকার আমাদের মেরে ফেলার চেষ্টা করছে। প্রকাশ্যে আমাদের ছবি এবং ঠিকানা উল্লেখ করে হোর্ডিং দিয়েছে। এর ফলে সমাজবিরোধীরা আসতে পারে এবং আমাদের ক্ষতি করতে পারে। সরকার এটাই চায়।

তিনি জানান, সরকারের এই পদক্ষেপ অবৈধ। এই হোর্ডিংয়ের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্রসচিব এবং ডিজিপিকে তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন।

উল্লেখ্য আগামীকাল মামলার রায় দেবে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ।

সম্পর্কিত পোস্ট