উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আগের সাফল্য ছুঁতে পারবেন মোদি? সম্ভাবনা কম

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী জগদীপ ধনখড়ের জয় প্রায় নিশ্চিত। কারণ এই নির্বাচনে লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদরা ভোট দেন। আর তাতে সংসদের দুই কক্ষপথেই বিজেপির আধিপত্য থাকায় শরীকদের সমর্থন ছাড়াই তারা কেল্লাফতে করতে পারে তবে ২০১৭ সালের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভেঙ্কাইয়া নাইডু যে পরিমাণ সমর্থন পেয়েছিলেন তা এবার জগদীপ ধনখড়ের পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। কেন? তার হিসেব দেখে নেওয়া যাক।

লোকসভার মোট সাংসদ সংখ্যা ৫৪৩। রাজ্যসভার নির্বাচিত সাংসদ সংখ্যা ২৩৮। এ ছাড়া সংসদের উচ্চকক্ষে রাষ্ট্রপতি ১২ জনকে সাংসদ হিসেবে মনোনীত করতে পারেন। এই মনোনীত সদস্যরা উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন।

তবে বর্তমানে সংসদের উচ্চকক্ষে রাষ্ট্রপতি মনোনীত সংসদের সংখ্যা ৮। চারজনের আসন ফাঁকা আছে। সেই হিসেবে এবারের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেক্টোরাল কলেজ অর্থাৎ মোট ভোটদাতার সংখ্যা  ৭৮৯। প্রশ্ন হচ্ছে, সরাসরি বিজেপির নিজের ঝুলিতে কত ভোট আছে?

লোকসভায় বিজেপির সাংসদ সংখ্যা ৩০২। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে ৩০৩ টি কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। কিন্তু পরে উপনির্বাচনে হিমাচল প্রদেশের মান্ডি, কেন্দ্রশাসিত দাদরা ও নগর হাভেলি পর পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল কেন্দ্রটি তাদের হাতছাড়া হলে সাংসদ সংখ্যা ৩০০ নেমে আসে।

কিন্তু গত মাসে লোকসভার উপনির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত রামগড় ও আজমগড় তাদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। ফলে এই মুহূর্তে লোকসভায় নরেন্দ্র মোদির দলের সংসদ সংখ্যা ৩০২।

কমিউনিস্ট পার্টি না হয়েও শহিদ দিবস পালনের ঐতিহ্য একমাত্র তৃণমূলের

অপরদিকে গত মাসে হয়ে যাওয়ার রাজ্যসভার নির্বাচনের পর সংসদের উচ্চকক্ষকে বিজেপির সাংসদ সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৯২। ফলের সংসদের দুই পক্ষ মিলিয়ে বিজেপির নিজের‌ই ভোট আছে ৩৯৪। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মোট ভোটার এবার ৭৮৯ জন। জিততে হলে কোন‌ও প্রার্থীকে কমপক্ষে ৩৯৫ সাংসদের ভোট পেলেই হবে।

অর্থাৎ বিজেপির নিজের প্রতীকে জেতা সাংসদ সংখ্যা তার থেকে মাত্র ১ কম! কিন্তু রাষ্ট্রপতি মনোনীত রাজ্যসভার আট জন সাংসদ, যারা প্রকৃতপক্ষে বিজেপি ঘনিষ্ঠ, তাঁদের ভোট ধরলে শরিকদের সাহায্য ছাড়াই জগদীপ ধনখড়কে জিতিয়ে নিতে পারবে বিজেপি।

প্রশ্ন হল, তবে কেন আগের বারের সাফল্য নরেন্দ্র মোদি ছুঁতে পারবেন না বলে দাবি করা হচ্ছে? ২০১৭ এর উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী ভেঙ্কাইয়া নাইডু ভোট পেয়েছিলেন ৫১৬ টি। বিরোধী প্রার্থী গোপালকৃষ্ণ গান্ধি ভোট পান ২৪৪ টি। এবার বিরোধীদের হাতে নিশ্চিত ২৫০ টি ভোট আছে।

যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের হিসেব, এই ভোট সংখ্যা আরও বাড়বে। মার্গারেট আলভা কমপক্ষে ২৬৫-২৭০ ভোট পাবেন বলে বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা। মাথায় রাখতে হবে ২০১৭ এর নির্বাচনে বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ শরিক জেডি(ইউ) বিরোধী শিবিরের প্রার্থী গোপালকৃষ্ণ গান্ধিকে সমর্থন করেছিল। কিন্তু এবার সেটা হচ্ছে না।

অর্থাৎ সবমিলিয়ে একটা ছবি পরিস্কার, বিরোধীরা বর্তমানের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে ঐক্যবদ্ধ হলে ভালো মতোই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারবে বিজেপির উদ্দেশ্যে। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন সেটাই প্রমাণ করতে চলেছে। তবে এটাও বলার, রাজনীতি এক মহা অনিশ্চয়তার জায়গা। তাই শেষ মুহূর্তে যে কোন‌ও হিসাব যে কোনও দিকে বদলে যেতে পারে।

সম্পর্কিত পোস্ট