দলীয় প্রার্থীদের ফৌজদারি মামলার তথ্য প্রকাশ করতে হবে রাজনৈতিক দলকে, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
শুধু তাই নয়, প্রার্থীদের বিরুদ্ধে থাকা অপরাধ মামলার বিস্তারিত তথ্য দলের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করারও নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
দ্য কোয়ারি ওয়েব ডেস্কঃ রাজনীতির দুবৃত্তায়ন ঠেকানোর লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে থাকা ফৌজদারি মামলার তথ্য প্রকাশ করতে হবে। বৃহস্পতিবার এমন নির্দেশই দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
শুধু তাই নয়, প্রার্থীদের বিরুদ্ধে থাকা অপরাধ মামলার বিস্তারিত তথ্য দলের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করারও নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
বিচারপতি এফ নরিম্যানের বেঞ্চ এদিন বলেছে, ভোটের প্রার্থী হিসাবে এমন ব্যক্তিদের কোনও দল নির্বাচিত করলে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা অপরাধ মামলার বিস্তারিত তথ্য ফেসবুক, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করতে হবে। সেই সঙ্গে একটি স্থানীয় এবং একটি জাতীয় সংবাদপত্রেও সেই তথ্য প্রকাশ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ চলতি মাসেই ভারত সফরে ট্রাম্প, টুইটারে স্বাগত জানালেন মোদি
শীর্ষ আদালত আরও বলেছে, এ ধরনের প্রার্থীরা মনোনয়ন পেশের জন্য নির্বাচিত হলে ৭৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা ফৌজদারি মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে। রাজনৈতিক দল এই নির্দেশ কার্যকর না করলে আদালতকে তা জানাতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
বিগত চারটি সাধারণ নির্বাচনে রাজনীতির দুবৃত্তায়ন উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মহল। এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মামলাও হয়েছে।
কিন্তু রাজনীতির দুবৃত্তায়ন রোধ দূরের কথা, ক্রমশ বেড়েই চলেছে। রাজনীতির দুবৃত্তায়ন রুখতে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরেও এনিয়ে একটি নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশিকা অনুসরণ করেনি বহু নির্বাচন প্রার্থী।
আদালতের নির্দেশ অমান্য হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা হয়েছে। সেই মামলায় এদিন দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপরাধ মামলা থাকলে তার বিস্তারিত তথ্য সোশ্যাল মিডিয়া এবং একটি স্থানীয় ও একটি জাতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
উল্লেখ্য, রাজনীতিতে দুবৃত্তদের সংখ্যা বিপজ্জনক ভাবে বাড়ছে। ২০০৪ সালে অপরাধ মামলা রয়েছে এমন নির্বাচিত সাংসদ ছিল ২৪ শতাংশ।
আরও পড়ুনঃ ক্ষুধা মুক্ত রাজ্য গড়তে মাত্র ২৫ টাকার বিনিময়ে খাদ্য দেবে কেরল সরকার
২০০৯ সালে এটা হয়ে যায় ৩০ শতাংশ। এরপর ২০১৪ সালে অপরাধ মামলায় অভিযুক্ত সাংসদের সংখ্যা চার শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৩৪ শতাংশ।
২০১৯ সালে এমন সাংসদের সংখ্যা বেড়ে হয় ৪৩ শতাংশ। ২০১৮ সালে শীর্ষ আদালতের পাঁচ সদস্যের এক সাংবিধানিক বেঞ্চ রাজনীতির দুবৃত্তায়ন রুখতে, বিশেষ করে গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত সাংসদদের সরিয়ে রাজনীতিতে স্বচ্ছতা আনার জন্য একটি শক্তিশালী আইন আনার জন্য সংসদকে অনুরোধ জানিয়েছিল।
রাজনীতির দুবৃত্তায়ন ঠেকাতে রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্যোগ জরুরি বলে উল্লেখ করে একটি নির্দেশিকাও জারি করেছিল। কিন্তু তা মানা হয়নি। ফলে এদিন ফের এনিয়ে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।