কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্র, নেতৃত্বে রাজনাথ সিং
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ গত তিন মাস ধরে চলা কৃষক আন্দোলনের পরিসর গত কয়েকদিনে বিপুল ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কেন্দ্রের সঙ্গে শর্তসাপেক্ষ বৈঠকে রাজি হননি কৃষকরা। এরপরেই দফায় দফায় বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দিল্লি সীমান্তে আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চায় কেন্দ্র সরকার। যার নেতৃত্ব দেবেন রাজনাথ সিং। তবে কি কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে কোনও রফাসুত্র বের করবে কেন্দ্র।
এদিনের বৈঠকে কৃষকদের নতুন কৃষি আইন নিয়ে আশ্বস্ত করবেন। এমএসপি নিয়ে যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে তা নিয়েও কথা হবে। তবে নতুন আইন প্রত্যাহারের পথে সরকার হাঁটবে কি না সেবিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। এমনটাই সূত্রের খবর।
সূত্রের খবর, এদিন বৈঠকের কথা স্থির হওয়ার আগে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার বাসভবনে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার। গত ৪৮ ঘন্টায় এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বৈঠকে বসলেন বিজেপির ,শীর্ষ নেতৃত্ব। সরকারী সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালেই দিল্লির সীমান্তে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে যাওয়ার কথা ছিল অমিত শাহের। কিন্তু জরুরী কর্মসুচির কারণে তা বাতিল করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুর তিনটে নাগাদ কৃহশকদের কথা বলার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার। কৃষকদের দাবী পুরণ নিয়ে ৩ ডিসেম্বর বৈঠকে বসতে চেয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু ঠান্ডা এবং করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আগেভাগেই কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চায় কেন্দ্র। রবিবারই প্রবল ঠান্ডার কারণে আন্দোলনরত এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কৃষক আন্দোলনের জের, ফের ফাটল এনডিএ শিবিরে
সোমবার রাতেই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ৩২ টি কৃষক সংগঠনকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র। সংবাদসংস্থা এএনআইকে পাঞ্জাব কৃষক সংঘর্ষ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সুখবিন্দর এস সাভরান জানিয়েছেন, দেশে প্রায় ৫০০ এরর বেশী কৃষক সংগঠন রয়েছে। প্রত্যেক জনকে না ডাক হলে কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে রাজি নন তাঁরা।
স্বরাজ ভারত প্রধান যোগেন্দ্র যাদব জানিয়েছেন, আমরা আলোচনার জন্য দরজা সর্বদা খোলা রেখেছি। আমাদের একটাই দাবী, নতুন আইনকে প্রত্যাহার করতে হবে। সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে তা এবিষয়ে পুনঃ বিবেচনার কথা ভাবছেন।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর বারাণসীর কর্মসুচিতেও উঠে আসে কৃষকদের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, নতুন আইন পুরাতন ব্যবস্থাকে বন্ধ করবে না। যদি কেউ মনে করেন পুরাতন ব্যবস্থা ভালো ছিল, আইন তাঁকে কখন পুরানো ব্যবস্থা থেকে বিরত করবে না।
গত কয়েকদিন ধরে চলা কৃষকদের আন্দোলন রবিবার থেকে বিরাট আকার নেয়। শনিবার অমিত শাহ জানান, কৃহশকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি রয়েছে সরকার তবে তার জন্য দিল্লির নির্দিষ্ঠ স্থানে তাঁদের আন্দোলনকে স্থানাতরিত করতে হবে। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি আন্দোলনকারী কৃষকরা। দিল্লি প্রবেশের পাচটি পথ সোনিপথ, রোহতক, জয়পুর, গাজিয়াবাদ-হাপুড় এবং মথুরা অবরুদ্ধ করে আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা। সরকারী সূত্রে খবর, এখনও অবধি প্রায় ৩ লক্ষ কৃষক এই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন।
অল ইন্ডিয়া কিশান সভার যুগ্ম সম্পাদক হান্নান মোল্লা জানিয়েছেন, আমদের দাবী তিন কৃষক আইন বাতিল করতে হবে। কিন্তু কেন্দ্র সরকার মনে করছে শুধুমাত্র ছোট কথাবার্তার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হতে পারে। তাই এই আন্দোলন। এই মুহুর্তে কৃষক আন্দোলনের জেরে অবরুদ্ধ গোটা দিল্লি। সিঙ্ঘু বর্ডার এবং টিকরু বর্ডার থেকে আন্দোলন সরিয়ে নিয়ে যাওযার কথা বলা হচ্ছে দিল্লি পুলিশজের তরফে।