মুখ্যমন্ত্রীদের হারার ভোট, পাঞ্জাব থেকে উত্তরাখণ্ড এক ছবি
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে গেরুয়া ঝড়ের কথা সকলেরই জানা। কিন্তু এরই মাঝে লুকিয়ে আছে কতগুলি ছোট ছোট কিন্তু বিশাল তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এই ভোটের ফল সহজ-সরল পাটিগণিত মেনে বিশ্লেষণ করা বেশ কঠিন। ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে মনে হবে বহু অবাক করা দিক লুকিয়ে আছে, না হলে পাঁচজন বর্তমান ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পরাজিত হন এই নির্বাচনে!
কৃষি বলয়ের এই রাজ্যটিতে কৃষক আন্দোলনের ফল একটুও পেল না কংগ্রেস। বরং দিল্লি থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসার মতো করে সব ডিভিডেন্ড নিয়ে গেল আম আদমি পার্টি। তারা কার্যত আপ ও কংগ্রেসকে ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছে। ১১৭ আসনের বিধানসভায় তারা একাই ৯২ টি কেন্দ্রে জয়ী হয়েছে। পাঞ্জাববাসীর এই সিদ্ধান্তের ধাক্কায় ভোটে হেরে গিয়েছেন সে রাজ্যের বর্তমান ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীরা!
বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী চরঞ্জিৎ সিং চন্নি চমকৌর সাহিব ও ভদৌর এই দুটি কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। দুটি কেন্দ্রেই তিনি আম আদমি পার্টির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন। পাঞ্জাবের বেশ কয়েকবারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা অকালি দলের প্রাণপুরুষ বর্ষিয়ান প্রকাশ সিং বাদল পর্যন্ত এই নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। নিজের দীর্ঘদিনের কেন্দ্র লম্বিতে আপের ঝড়ে বাদলের রথের চাকা বসে গিয়েছে।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং কংগ্রেস ছেড়ে নিজের নতুন পাঞ্জাব লোক দল তৈরি করেছিলেন। তাঁর দল এবার বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে ভোটে লড়াই করে। অমরিন্দর নিজের পুরনো পাটিয়ালা শহর কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর রথের চাকাও আপের দাপটে থমকে গিয়েছে।
কার্যত একই ছবি দেখা গেল উত্তরাখণ্ডে। এই রাজ্যটিতে বিজেপি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারলেও তাদের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি খটিমা কেন্দ্রে পরাজিত হয়েছেন। এটা বিজেপির কাছে নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা। এমনিতেই গত পাঁচ বছরে উত্তরাখণ্ডে তারা তিনবার মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছিল। এবার ধামিকেই সামনে রেখে লড়াই করেছিল।
রাজ্যে আরও ৮টি নতুন থানা, অধিকাংশই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে
দলকে জেতাতে পারলেও শেষ পর্যন্ত নিজেই হেরে গিয়েছেন ধামি। একই অবস্থা কংগ্রেসের মুখ তথা উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াতের। অনেকেই ভেবেছিলেন বিজেপিকে হারিয়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসবে এবং মুখ্যমন্ত্রী হবেন রাওয়াত। কিন্তু লালকুঁয়া কেন্দ্রে তিনি নিজেই হেরে যান। দলকে নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি নিজেও পরাজিত হন।
এদিনের ভোটের ফল থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার, মানুষ প্রয়োজনে হেভিওয়েটদেরও আর রেওয়াত করছে না। তার জেরেই পাঁচ পাঁচজন মুখ্যমন্ত্রী পরাজিত হয়েছেন।