একেই তো কিছুই দেওয়া হল না, উল্টে মানুষকে কেন বিভ্রান্ত করা হচ্ছে? প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর

সরাসরি তোপ দেগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষিত আর্থিক প্যাকেজ দিশাহীন। প্যাকেজের নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হয়েছে। মোদিজির প্যাকেজ আসলে অশ্ব ডিম্ব। টোটালটাই বিগ জিরো

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ মঙ্গলবার রাত ৮ টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে ‘আত্মনির্ভর ভারত” গড়ে তোলার পাশাপাশি  করোনা মোকাবিলায় অর্থনৈতিক দিক থেকে ভারতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ২০ লক্ষ কোটি টাকার বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বুধবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’-এর এই প্যাকেজের ব্যাখ্যা করলেন। এরপরই ফের বিরোধীদের নিশানায় পড়েন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর সরকার।

সরাসরি তোপ দেগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষিত আর্থিক প্যাকেজ দিশাহীন। প্যাকেজের নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হয়েছে। মোদিজির প্যাকেজ আসলে অশ্ব ডিম্ব।
টোটালটাই বিগ জিরো।”

মুখ্য়মন্ত্রীর কথায়, “দেশবাসী আশায় ছিল রাজ্যগুলি কিছু পাবে তাদের নিরাশ করা হয়েছে। অসংগঠিত ক্ষেত্র, এমএসএমই এবং কোভিড সংক্রান্ত ক্ষেত্রগুলোকেও নিরাশ করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের অসুবিধার সুরাহা করতে কিছুই করা হয়নি।
কুড়ি লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজের কথা বলে আসলে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে।”

তাঁর কথায়,যেখানে এমএসএমইর জন্য এত কথা বলা হল সেখানেও বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। ছাড় দেওয়া হয়নি কৃষকদের ঋণেও।

কেন্দ্র সরকারের প্রতি প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একেই তো কিছুই দেওয়া হল না, উল্টে মানুষকে কেন বিভ্রান্ত করা হচ্ছে?

মিডিয়াকে একটা চমকদার শিরোনাম দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, প্যাকেজকে এভাবেই ব্যাখ্যা কংগ্রেসের

পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “ইনকাম ট্যাক্স জমা দেওয়ার জন্য এক মাস সময় বাড়িয়ে দেওয়াটা কোনও প্যাকেজের অংশ নয়। রাজ্যকে একটা পয়সাও দেওয়া হল না।  দুমাস সব কিছু বন্ধ।  নো আর্নিং অনলি বার্নিং। রাজ্যগুলি চলবে কি করে?”

মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, তার মানে কি ফেডারেল স্ট্রাকচারকে বুলডোজ করে রাজ্যের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে?

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করে বলেন, রাজ্যের অধিকার থমকে গেছে, কিচ্ছু নেই। এই পরিস্থিতির মধ্যেও রাজ্য সকলের বেতন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এপ্রিল ও মে দুমাসের ভাতা দিয়েছে বলে জানান তিনি।

এছাড়াও তাঁর কথায়, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের এড-হক বোনাস ৪০০০ থেকে বেড়ে ৪২০০ করা হয়েছে। আগে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীরা এই বোনাসের জন্য এলিজেবল ছিল। সেটাও বাড়ানো হয়েছে। ফেষ্টিভেল এডভান্সের ক্ষেত্রেও এলিজিবিলিটি ইনক্রিজ করা হয়েছে।

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের তরফেও এদিন বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেগুলি হলঃ

  • এবার থেকে কাজ করার জন্য পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলাপরিষদ ১৫% করে টাকা পাবে।
  • বাংলা আবাস যোজনায় 10 লক্ষ বাড়ি করার জন্য ইতিমধ্যেই অর্ডার ছাড়া হয়েছে।
  • সেচের জন্য বিশ্বব্যাংকের ৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়া হয়েছে যাতে ডিএমডির মাধ্যমেই কাজ চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
  • ৫০ হাজার একর জমিতে নতুন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হচ্ছে।
  • গ্রামবাংলার আড়াই লক্ষ মানুষ এই প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হবে।
  • প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে মাটির সৃষ্টি।
  • ১০ একর থেকে ২০ কি কর পতিত জমি ও সরকারি জমি যুক্ত করে সমবায়ের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদন করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর কথায় এই কর্মসূচি গ্রামীণ অর্থনীতিকে মজবুত করবে।

সম্পর্কিত পোস্ট