সরকারি কর্মচারীদের দুর্ভোগ কমাতে শিফটিং ব্যবস্থা চালু সরকারের

দ্য কোয়ারি ওয়েব ডেস্ক: বুধবার সরকারি অফিসে শিফটিং ব্যবস্থা চালু করার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।

এদিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করতে গিয়ে  তিনি জানিয়েছেন, এখন থেকে দুটি শিফটে হবে সরকারি অফিসের কাজ। একইসঙ্গে বেসরকারি অফিসে ওয়ার্ক ফ্রম হোমেরও পরমর্শ দিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য,রাজ্য সরকারি অফিস খুলে গিয়েছে ৮ জুন থেকে। কিন্তু এখনও পর্যাপ্ত বাস চলাচল করছে না শহরে। মেট্রো ও ট্রেনও বন্ধ। এর ফলে বাসে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না।

এই পরিস্থিতি থেকে সরকারি কর্মীদের রক্ষা করতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দু’টি শিফটে অফিস হবে। এর ফলে একই সঙ্গে অনেক মানুষের অফিসে যাওয়ার চাপ তৈরি হবে না।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে নটায় অফিস শুরু হবে প্রথম শিফট। চলবে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। দ্বিতীয় শিফট শুরু সাড়ে বারোটায়। চলবে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত।

নিচুতলা থেকে ডেপুটি সেক্রেটারি পদমর্যাদার আধিকারিকরা এই শিফটিংয়ের সুবিধা পাবেন। এখন আনলক ওয়ানে এমনিতেই সরকারি কর্মীদের একদিন অন্তর একদিন অফিস যেতে হচ্ছে। এবার কাজের সময়ও কমে গেল। অফিসে থাকতে হবে মাত্র ৫ ঘণ্টা।

এদিন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে নবান্ন জানিয়ে দেয়, এবার থেকে এই শিফট মেনেই তৈরি করা হবে কর্মীদের রোস্টার। তবে যে সব অফিসাররা অফিসের গাড়িতে যাতায়াত করেন তাঁদের জন্য কোনও শিফট ভাগ থাকবে না।

একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, এখন যেহতু পর্যাপ্ত যানবাহন নেই, তাই একঘণ্টা দেরী হলে লালকালি পড়বে না।

একইসঙ্গে, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই সময় যাতে আসতে পারে, তাই বেশি বাস চালানো হবে। সেটা পরিবহণ দফতর দেখে নেবে।

তিনি জানান, বর্তমানে করোন সারা দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে গিয়েছে। অফিস আসতে দেরী হয় হোক, সিটে বসে যান, একটু সময় নিন। অযথা ভিড় বা হুড়োহুড়ি করবেন না। সেই কারণেই আমরা এক ঘণ্টা লেট হলেও লালকালি দেব না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

পাশাপাশি, বেসরকারি ক্ষেত্রে ওয়ার্ক ফ্রম হোম করার পরামর্শও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী কথায়, বর্তমানে রাজ্য সরকার সারা রাজ্যে ৫ হাজার বাস চালাচ্ছে। তাতেও অনেকেই আসতে পারছেন না। ৫০-৭০ শতাংশ লোক আসছে। দিনের পর দিন যদি বন্ধ রাখা হয়, তাহলে প্রবলেম খুব।

মুখ্যমন্ত্রী এই পরিস্থিতিকে একদিকে রোগের ভয়, অন্যদিকে পেটের টান বলেই উল্লেখ করেছেন।

সরকারি অফিসে এমন শিফট চালু করার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এদিন বেসরকারি সংস্থার কাছেও এমনটা করা যায় কিনা তা বিবেচনা করতে বলেছেন।

তিনি আবেদন করেছেন যতটা সম্ভব ওয়ার্ক ফ্রম হোমের উপরে জোর দেওয়া হোক।

এ দিন উদ্বেগ প্রকাশ করে মমতা বলেন, অনেকেই মাস্ক পড়ছেন না। সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি। মমতার কথায়, ‘আরও বেশি করে পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা করছি। এতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। তবে তাতে আতঙ্কগ্রস্ত হবেন না। সাবধানে থাকুন। সতর্ক থাকুন। বাজার-দোকান গেলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।’

বিয়েবাড়ি ও ধর্মীয় স্থানে একসঙ্গে ২৫ জনের উপস্থিতিতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, সরকারি অফিস খোলার পরে তিনদিনের মধ্যে এই নিয়ে দু’বার নিয়ম বদল করল রাজ্য সরকার।

সোমবার ৮ জুন থেকে ৭০ শতাংশ কর্মী নিয়ে খুলেছে রাজ্য সরকারি অফিস। তাতে বলা হয়, সব কর্মীকে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন করে হাজির থাকতে হবে অফিসে।

দু’দিন অফিস চলার পরেই মঙ্গলবার নতুন নির্দেশিকা দেয় রাজ্য সরকার। তাতে জানিয়ে দেওয়া হয়, জ্বর, কাশির মতো করোনা সংক্রমণের কোনও রকম উপসর্গ থাকলে কর্মীদের কাজে যোগ দিতে হবে না।

একই সঙ্গে এটাও জানান হয়, কনটেনমেন্ট জোনে যে সব কর্মীরা থাকেন তাদের আপাতত অফিসে আসতে হবে না। তাঁরা বাড়ি থেকেই কাজ করবেন।

সম্পর্কিত পোস্ট