দলিত কন্যার গণধর্ষণকাণ্ডের কড়া নিন্দা মমতার , নাম না করে বিজেপিকে তোপ

দ্য কোয়ারি ডেস্ক: নৃশংস গণধর্ষণকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয় একইসঙ্গে, নাম না করে বিজেপিকে কার্যত তুলোধনা করলেন তৃণমূল নেত্রী।

যোগীর রাজ্যে দলিত কন্যার ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের শাস্তি চেয়ে গর্জে উঠেছে গোটা দেশ। এবার তাতে গলা মেলালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীও।

বৃহস্পতিবার তিনি ট্যুইটে লেখেন, হাথরসে এক দলিত তরুণীর সঙ্গে যে বর্বর ও লজ্জাজনক ঘটনা ঘটেছে, তার নিন্দার ভাষা নেই। ওই তরুণীর পরিবারের প্রতি সমবেদনা। আরও লজ্জাজনক হল, যেভাবে জোর করে, পরিবারের সম্মতি ছাড়াই ওই তরুণীর সত্কাটর করা হয়েছে। যারা স্লোগান দেয় ও ভোটের জন্য প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দেয়, এই ঘটনা তাদের মুখোশ খুলে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজ্যে ‘‌পথশ্রী অভিযান’‌ প্রকল্পের উদ্বোধন মঞ্চ থেকেও উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার ও পুলিশকে নিন্দা করে তোপ দাগেন তিনি।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌সীতা মাকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়েছিল। আর আজ দেখুন উত্তরপ্রদেশে শুধু ধর্ষণ নয়, ধর্ষণের পর আগুনে নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়েও দেওয়া হল। যদি কোনও অপরাধ হয় পুলিশের উচিত দ্রুত তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া। আমরাও করেছি। আমাদের রাজ্যে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধী ধরা পড়েছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে ধর্ষণের পর ওই যুবতীকে পুলিশ পুড়িয়ে দিয়েছে। কোনও তদন্তও হচ্ছে না। এ কী ধরনের অপশাসন চলছে সেখানে। ওখানকার এক নেতা তো বলেছে যে মা–মেয়ে দু’‌জনকেই পুড়িয়ে দাও।’

মমতা এদিন বিজেপি–র নাম না করে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‌‌দেখুন দলিতদের ওপর কী পরিমাণ অত্যাচার হচ্ছে। আজ দলিত কাঁদছে। নির্বাচনের সময় লোক দেখিয়ে দলিতের বাড়িতে খাবার ওরা খায়। কিন্তু সেই খাবার বাইরে থেকে কিনিয়ে নিয়ে আসে। আর তার পর দলিতদের ওপর ওরা অত্যাচার করে। মারধর করে। কখনও সংখ্যালঘুর ওপর অত্যাচার হয়। আবার কখনও আদিবাসীদের ওপর অত্যাচার হয়।’

২০১৯–এর লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ আসন দখল করে বিজেপি। এতে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার পর উত্তরবঙ্গে উন্নয়নের কতটা কাজ হয়েছে এ নিয়ে এদিন অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/sealdah-flyover-closed-from-friday-due-to-east-west-metro-work/

 

Pতিনি বলেন, ‘‌রাজবংশীদের তথা উত্তরবঙ্গে এসে তো ওরা অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তার কিছু কি হয়েছে?‌ বলেছিল সব বন্ধ চা বাগান খুলে দেবে। একটাও খুলেছে কি?‌ তিন বছর হয়ে গেছে। সব মিথ্যা প্রতিশ্রুতি। ওরা বলে কিছু আর করে অন্য কিছু। কিন্তু আমরা যা বলি তাই করি। যার কথার দাম নেই তাকে আমি মানুষ বলে মনে করি না। আমি মনে করি যাঁদের কথার দাম আছ, তাদেরই রাজনীতি করা উচিত।’

উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের হাথরাস জেলার ওই দলিত তরুণী ধর্ষণ এবং নৃশংসতার শিকার হন। দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে দু’সপ্তাহ ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পরে মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।

বুধবার রাত একটা নাগাদ ওই তরুণীর দেহ পৌঁছয় তাঁর গ্রামে। বড় রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড় করানো হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় শ্মশানের আলো। শেষকৃত্যের প্রস্তুতি শুরু করে পুলিশ। মধ্যরাতে শেষকৃত্য হোক তা চাননি নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা।

বুধবার রাতের যে ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে, মেয়েকে শেষবার নিজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য তরুণীর মা’কে পুলিশের কাছে অনুনয় করতে দেখা গিয়েছে। হাথরাসের পুলিশের তরফে টুইট করে শেষকৃত্যের বিষয়ে জানানো হয়েছে।

পুলিশের দাবি, মৃতার পরিবারের ইচ্ছানুসারেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ-প্রশাসনের তীব্র নিন্দা করেছেন বিরোধীরা।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ চেয়েছেন তাঁরা। এদিকে বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে তৃণমূল সরকারকে বারবার আক্রমণ করেছে বিজেপি। এবার পালটা গেরুয়া শিবিরকে তুলোধনা করলেন মমতা।

সম্পর্কিত পোস্ট