ঘরে বসে কী দুর্গাপুজো হয়?’ দুর্গাপুজোর পক্ষেই সওয়াল মমতার
দ্য কোয়ারি ডেস্ক: দুর্গোত্সোবেরর করোনা সংক্রমণ চরম উঠতে পারে বাংলায়। রাজ্যের ডাক্তার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলি করোনা কালে দুর্গাপুজো না করা নিয়ে সরব হয়েছেন।
অনেকে আবার এই অবস্থায় কেরলের ওনামের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে দুর্গোত্সবব বন্ধের দাবি করছেন। ইতিমধ্যেই রাজ্যে দুর্গাপূজা বন্ধ করার দাবিতে আদালতে মামলাও হয়েছে।
অনেকেই এমনও প্রশ্ন তুলেছেন, এবছর ঈদ-গণেশপুজো মানুষ বাড়িতে বসে পালন করেছে, তাহলে দুর্গোত্সরব কেন বন্ধ রাখা যাবে না?
রাজ্যে এই বিতর্কের মাঝেই বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন ভার্চুয়াল পুজো উদ্বোধনের মঞ্চ থেকে দুর্গাপুজো তো বারোয়ারী। ঘরে বসে কী দূর্গাপুজো হয়?
উল্লেখ্য বুধবারের মতো এদিনও আরও ভার্চুয়াল মাধ্যমে ১১০টি পুজোর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই মঞ্চ থেকে তিনি করোনা আবহে সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
দুর্গাপুজোর সময়, মানুষকে বেশি করে মাস্ক-স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন আদালতে পুজো নিয়ে মামলায় সরকারের সমালোচনা করা হলেও নবান্ন সভাঘরের অনুষ্ঠান থেকে দুর্গোত্সোব পালনের পক্ষে সওয়াল করেন মুখ্যমন্ত্রী।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/cm-mamata-banerjee-takes-hoogly-assembly-responsibility/
তিনি বলেন, মা দুর্গার পুজো আমরা বন্ধ করিনি। এই পুজো বন্ধ করা ঠিক নয়। তাছাড়া কোনও কিছুই তো বন্ধ হয়নি। রমজান-ইদ-গণেশপুজো, এগুলো ঘরে বসে করা যায়। কিন্তু দুর্গাপুজো মানে মায়ের বিরাট সংসার। সে পুজো বারোয়ারী। পুজো করে সব ক্লাব, কমিটি। বাড়ির পুজো খুব কম হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ধর্মীয় অনুষ্ঠান বাতিল করা সম্ভব নয়। পুজো হবে। তবে সব হবে নিয়ম মেনে। ক্লাবগুলিকে সচেতনভাবে সব কিছুর আয়োজন করতে হবে। সাধারণ মানুষকেও সচেতন থাকতে হবে।’
উল্লেখ্য, এদিন দুর্গাপুজো নিয়ে হাই কোর্টেও তীব্র ভর্ত্সবনার মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন, ‘যেখানে সংক্রমণের আশঙ্কায় স্কুল, কলেজ পর্যন্ত খোলা হল না, সেখানে কীভাবে দুর্গাপুজোর আয়োজন হচ্ছে?’ সন্তোষজনক জবাবও দিতে পারেননি রাজ্যের আইনজীবী।
এদিনের ভার্চুয়াল উদ্বোধনের অনুষ্ঠান থেকে ফের একবার করোনার সুরক্ষাবিধির কথা মনে করিয়ে দেন মমতা। মহামারী আবহে পুজোর অঞ্জলি থেকে সিঁদুর খেলা-সব ক্ষেত্রেই কড়া নিয়মকানুন জারি হয়েছে। তাই প্রতিবারের মতো এবার ইছামতীতে দুই বাংলার প্রতিমা বিসর্জন হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তা ছিল।
এদিন সেই আশঙ্কা দূর করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে দেন, শান্তিপূর্নভাবে ইছামতীতে দুই বাংলার বিসর্জন করা যাবে। দেখভালের দায়িত্বে থাকবে স্থানীয় পুজো কমিটি আর পুলিশ।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী যে ১২টি জেলার পুজো উদ্বোধন করেন সেগুলি হল পশ্চিম বর্ধমান, পূ্র্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪পরগনা।
তবে উত্তর ২৪ পরগনার যে পুজোগুলি এদিন মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করেন তার মধ্যে ২টি পুজো উত্তর কলকাতার শহরতলির পুজো এবং ২টি পুজো পূর্ব কলকাতার পুজো।
এদিন এই সব পুজোর উদ্বোধন করতে করতে নবান্নের সভাঘর মঞ্চে দাঁড়িয়ে বারবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারচুয়ালি পুজোর সূচনা করলেও মনে মনে তিনি পৌঁছে গিয়েছেন সকলের মাঝে।
তাই সকলকে বাংরবার পুজোর শুভেচ্ছা জানান তিনি। অনু্ষ্ঠানের শেষপ্রান্তে চণ্ডীপাঠও করেন মুখ্যমন্ত্রী।