বাবা গান্ধিদের বন্ধু হয়েও কংগ্রেস সভাপতির লড়াইয়ে হেরে যান, ছেলে এবার কংগ্রেসে গান্ধি যুগ শেষ করবে?
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক : রাজেশ বিধুরি একাত্তরের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে দেশের জয়ের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। ভারতীয় বিমানবাহিনীর এই পাইলট বমারু বিমান নিয়ে অস্থির করে তোলে পাকিস্তানকে। তবে পরবর্তীকালে রাজীব গান্ধির বন্ধু হিসেবে বেশি পরিচিত হয়ে ওঠেন রাজেশ।
১৯৮০ সালে নির্ধারিত সময়ের আগেই সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে রাজনীতিতে নাম লেখান এই গুজ্জর। পাল্টে যায় পদবী। বিধুরির জায়গায় লিখতে শুরু করেন পাইলট।
অল্পদিনের মধ্যেই সারা ভারত জোড়া নাম হয় রাজেশ পাইলটের। কৃষিমন্ত্রক দিয়ে শুরু। এরপর কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র, টেলিযোগাযোগ, পরিবহনমন্ত্রকের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্ব সামলেছেন।
রাজেশ পাইলট কংগ্রেসে আসার পর থেকেই গান্ধিদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বন্ধু রাজীব গান্ধির সঙ্গে তাঁর সব সময় সুসম্পর্ক ছিল। এমনকি রাজীবের মৃত্যুর পরও গান্ধিদের হাত ছাড়েননি।
মনে করা হয় ১৯৯৬ সালে গান্ধিদের প্রতিনিধি হিসেবেই কংগ্রেস সভাপতি পদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন রাজেশ পাইলট! যদিও সীতারাম কেশরির কাছে হেরে যান।
রাজেশ পাইলট কংগ্রেস সভাপতি হতে না পারলেও সেই দুঃখ সম্ভবত ঘুচতে চলেছে ছেলে শচীন পাইলটের হাত ধরে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল বাবা রাজেশ যে গান্ধি ঘনিষ্ঠতার কারণে কংগ্রেস সভাপতি হতে পারেননি, ছেলে শচীনের হাত ধরে কংগ্রেসে সেই গান্ধিদেরই একাধিপত্য শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
কংগ্রেসের অভ্যন্তরীন ডামাডোলের মাঝে বিক্ষুব্ধ জি-২৩ গোষ্ঠীর নেতা গুলাম নবি আজাদ এই অচলাবস্থা কাটাতে সোনিয়া গান্ধীর সামনে এক বিকল্প প্রস্তাব রেখেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
বিক্ষুব্ধদের ভাবনায় রাহুল গান্ধি লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা হবেন। তাঁকে পরিষদীয় রাজনীতির মুখ করা হবে। অপর দিকে দলের সভাপতি হবেন রাজস্থানের শচীন পাইলট! অর্থাৎ দলীয় সংগঠনে গান্ধিদের সেইরকম কোনও প্রভাব থাকবে না।
তরুণ শচীন পাইলট সারা দেশ ঘুরে দলের সংগঠনকে দাঁড় করাবেন, এমনটাই আশা বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতাদের। শচীন পাইলট অবশ্য রাহুল গান্ধির ঘনিষ্ঠ বলেই কংগ্রেসে পরিচিত।
যদিও বিক্ষুব্ধদের এই প্রস্তাব সোনিয়া মেনে নেবেন কিনা তা এখনও জানা যায়নি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি এই প্রস্তাব কার্যকরী হয় তবে কংগ্রেসে গান্ধি যুগের যে অবসান ঘটবে তা একরকম নিশ্চিত।