শিবরাজের সরকারে সিন্ধিয়ার কিস্তিমাত
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ “টাইগার আবিভি জিন্দা হেয়”। একসময়ের খবরের হেডলাইনে থাকা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আজ নিজেই হেডলাইনের অংশবিশেষ একেবারে টপ ক্লাস ফিলমি কায়দায় বলছেন। আর বলবেন না-ই বা কেন?
একাই কমনাথের পাশা পাল্টে ফেলেছেন। যারা বলছিলেন যে বিজেপিতে তাঁর বিন্দুমাত্র জায়গা হবে না, তিনিই বৃহস্পতিবার শিবরাজ সিং চৌহানের মন্ত্রীসভার হাতি, ঘোড়া, নৌকা ঠিক করে দিলেন। যাকে বলে মু তোড় জবাব।
বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশে মন্ত্রীসভার বিস্তার হল। নতুন মন্ত্রীসভায় যারা জায়গা পেলেন তাদের মধ্যে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ঘনিষ্ঠ ১১ জন মন্ত্রী।
এর আগে কমলনাথের মন্ত্রীসভায় ৬ জন সিন্ধিয়া ঘনিষ্ঠ বিধায়ক মন্ত্রী ছিলেন। নতুন মন্ত্রীসভায় ৩৪ জনের মন্ত্রীসভার মধ্যে ১৪ জন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ঘনিষ্ঠ।
অর্থাৎ অর্ধেকের কিছু কম সংখ্যক কংগ্রেস থেকে আসা বিধায়ক নতুন সরকারে কব্জা করে বসলেন। সম্প্রতি ভারতীয় রাজনীতিতে এরকম বড়সড় রদবদল আজ অবধি দেখা গিয়েছে বলে মনে হয় না।
মোস্ট ওয়ান্টেড দুস্কৃতীদের পাকড়াও করতে গিয়ে নিহত ৮ পুলিশ কর্মী
অথচ একটা বিষয় দেখা দরকার যারা ১৪ জন কংগ্রেস থেকে এসে সটান শিবরাজ সিংয়ের মন্ত্রীসভায় জায়গা পেলেন তাঁরা বিধায়ক কিনা সেটাই এখনও ঠিক হল না।
অথচ গেরুয়া শিবিরে যারা আদা জল খেয়ে পড়েছিলেন তারাই কোনও আশা দেখতে পেলেন না।
কমলনাথ সরকারের পতনের পর ২৩ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন শিবিরাজ সিং চৌহান। তার সঙ্গে শপথ নিয়েছিলেন পাঁচ জন বিধায়ক। যার মধ্যে তুলসী সিলাওয়াত এবং গোবিন্দ সিং রাজপুত ছিলেন জ্যোতিরাদিত্য ঘনিষ্ঠ।
এরপর জুনমাসে বিরোধী দলের চাপে দু’বার মন্ত্রীসভা গঠন করতে বাধ্য হন শিবরাজ সিং চৌহান। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি।
সুত্রের খবর, মন্ত্রীসভা ঠিক করতে দিল্লি উড়ে যান শিবরাজ। সেখানে অমিত শাহ এবং জেপি নাড্ডার সঙ্গে এবিষয়ে বৈঠক করেন তিনি।
তিন মাস পর সরকার পুনর্গঠনের সময় নতুন সরকারে জায়গা পেলেন বিশহু লাল সিং, আইদাল সিং কানসানা এবং হরদ্বীপ সিং ডং সহ ছয় সিন্ধিয়া অনুগামী বিধায়ক।
যে ২২ জন কংগ্রেস বিধায়ক কমলনাথের সরকার থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বিশহু লাল সিং এবং আইদাল সিং কানসানা।
১৯৯৮ সালে দ্বিগ্বিজয় সিংয়ের সরকারে দুজনেই মন্ত্রী পদ পেয়েছিলেন। কিন্তু কমলনাথের সরকারে তা না মেলায় সরে দাঁড়ান দুই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ।
আপাতত ২২ জনের মধ্যে যাদের শিকে ছিঁড়ল না তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, গৌরি শঙ্কর বিসেন, প্রকাশ জৈন, রামপাল সিং, জলম সিং প্যাটেল, রাজেন্দ্র শুক্লা এবং সুরেন্দ্র পটোয়া।
সেনাপ্রধানের সঙ্গে লাদাখে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
এই মুহুর্তে ২৩০ জন বিধায়কের মধ্যে ১৫ শতাংশ মন্ত্রী রয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ সিন্ধিয়া ঘনিষ্ঠ। এতে কিছুটা হলেও ব্যক্তিগত জায়গা হারিয়েছেন শিবরাজ সিং। বুধবার তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তা প্রকাশ পায়।
তিনি বলেন, “মন্থন সে তো অমৃত হি নিকালতা হেয়, বিষ তো শিব পি যাতে হেয়”। তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই তিনি অনেকটা পরিষ্কার করে দেন তিনি আদতে কি বোঝাতে চাইছেন।