শয্যাশায়ী বুদ্ধবাবু শুনলেন স্নেহের ‘কমরেড’ অজন্তার মমতা ‘স্তুতি’, এড়িয়েছে নন্দীগ্রাম পর্ব
নন্দীগ্রামে পুলিশ গুলি চালায়নি বলেছেন মমতা নিজেই
দ্য কোয়ারি ডেস্ক: তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর স্তুতি করেই বিতর্কিত ধারাবাহিকের শেষ পর্বে ‘কুর্নিস’ জানালেন প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের কন্যা সিপিআইএম সদস্যা ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্নেহ পাওয়া অজন্তা বিশ্বাস।প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শয্যাশায়ী। তিনি শুনেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের দৈনিক মুখপত্রে বের হচ্ছে অজন্তা বিশ্বাসের ধারাবাহিক।
শনিবার এই ধারাবাহিকের শেষ পর্ব প্রকাশিত হয়েছে। অজন্তা বিশ্বাসের লেখা ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ তে বঙ্গ মহিলা রাজনীতিকদের পরপর বিবরণে সর্বশেষে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাৎপর্যপূর্ণ, মমতাকে নিয়ে লেখায় (বলা হচ্ছে গবেষণা প্রবন্ধ) অজন্তা উল্লেখ করেছেন সিঙ্গুর কৃষক আন্দোলন পর্ব। তবে সযত্নে এড়িয়ে গিয়েছেন নন্দীগ্রাম পর্বটি। সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামে দুটি আন্দোলন ছিল বামফ্রন্ট শাসনে তথা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় বিরোধী শক্তির আস্ফালন।
নন্দীগ্রাম আন্দোলন হয়েছিল রক্তাক্ত। গুলিতে মৃত্যুর ঘটনায় দেশ তো বটেই বিশ্বজোড়া আলোচনা হয়েছিল। এই ঘটনায় বুদ্ধবাবুর সরকার তথা সিপিআইএমের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ উঠেছিল। তবে বুদ্ধবাবু এই অভিযোগ মেনে নেননি। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ধাক্কায় বামফ্রন্ট সরকার পড়ে যায়। সম্প্রতি বিধানসভায় ভোটে নন্দীগ্রামে নির্বাচনী প্রচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়, বুদ্ধবাবুর সরকারের উপর অভিযোগ ভিত্তিহীন। এর পরেই সিপিআইএম লাগাতার মমতাকে মিথ্যে আন্দোলন চালানোর বিষয়ে কটাক্ষ করতে থাকে। নন্দীগ্রামে বিজেপির কাছে পরাজিত হন মমতা। তবে ত়ৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে সরকার গড়েন। আর সিপিআইএম সহ বামেরা মুছে যায় রাজ্য থেকে।
সিপিআইএম অধ্যাপক শাখার সদস্যা অজন্তা বিশ্বাস সযত্নে যেমন নন্দীগ্রাম পর্ব এড়িয়েছেন, তেমনই লিখেছেন মমতার সঙ্গে বারবার এনডিএ তথা বিজেপি সংযোগ ও বিচ্ছেদ মুহূর্ত। তাঁর এই ধারাবাহিক ঘিরে রাজ্য জুড়ে প্রবল আলোড়ন। সূত্রের খবর, তৃণমূল মুখপত্রে অজন্তার লেখা শেষ কিস্তি বের হওয়ার পরেই তাঁর সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনা করবে সিপিআইএম রাজ্য কমিটি। আর অজন্তা তৈরি জবাব দিতে।
তবে অজন্তা বিশ্বাস ‘বিশ্বাসভঙ্গ’ করেছেন। তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হোক। এমনই বার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন বামপন্থীরা। সিপিআইএম নেতাদের কাছে প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা এখন আতঙ্কের আরেক নাম।
কী করে একজন পার্টি সদস্য দলের অনুমতি না নিয়ে সরাসরি অন্য রাজনৈতিক দলের মুখপত্রে লিখছেন? এই প্রশ্ন রেখে সদুত্তর চাওয়া হবে অধ্যাপিকা অজন্তা বিশ্বাসের কাছে। এই বিতর্কে কোনও সিপিআইএম নেতা মুখ খুলছেন না।
পরিস্থিতির ঘোরালো বুঝে অজন্তা বিশ্বাস নীরব। কৈফিয়ত চাওয়ার বিষয়টি নিয়েও কোনও বাম নেতা প্রকাশ্যে জানাতে চাইছেন না। তবে ইঙ্গিতে অনেকে বলেছেন, অজন্তা অনেক ভেবে চিন্তে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্রে লিখেছেন।