করোনা মানেই মৃত্যু নয়, ক্রমেই সুস্থ অশোক ভট্টাচার্যের বার্তা রাজ্যের মানুষকে

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ এখনও হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাননি তিনি। শেষ করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে তাঁর। খুব শীঘ্রই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। হাসপাতালে বসেই রাজ্যের সাধারণ মানুষের জন্য বার্তা দিলেন শিলিগুড়ি পুর নিগমের মুখ্য প্রশাসক তথা প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য।

ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ এই সিপিএম নেতা ভয়কে জয় করার বার্তা এ দিন দিয়েছেন। কোনও সন্দেহ নেই তাঁর অভিজ্ঞতা সাধারণ মানুষের সাহস বাড়ানোর ক্ষেত্রে কাজে আসবে।

এ দিন কোভিড হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে অশোক ভট্টাচার্য বলেন, আমার করোনা আক্রমণের প্রায় ২০ দিন হল। কয়েকদিন আগে আমার লাস্ট টেস্টে নেগেটিভ এসেছে। এখন সুস্থ বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় রয়েছি।

তাঁর কথায়, কোভিড নিয়ে অনেক রকম প্রচারের কথা শুনে আসছি। আমার কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা হল, এই ক’দিনে। প্রথম অভিজ্ঞতা হল করোনা হলেই মৃত্যু নয়। মরার আগেই মরবো কেন? লড়াই করার মানসিকতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এটা নির্ভর করে আর্লি ডিটেকশন এবং আর্লি ট্রিটমেন্ট-এর ওপর। দেখা যাচ্ছে এটা সঠিক ভাবে হচ্ছে না। আমার ক্ষেত্রেও বিলম্ব হয়েছিল।

কোভ্যাক্সিন নিয়ে শোরগোল, উদ্বিগ্ন চিকিৎসক থেকে বিশেষজ্ঞরা

তিনি আরও বলেন, অনেক করোনা রোগী সেভাবে কোনও শারীরিক অসুবিধেটা বুঝতেই পারেনা। অনেক ডাক্তার এই সমস্ত রোগীদের উপেক্ষা করে থাকেন। তখন তাঁকে একের পর এক ডাক্তারের কাছে ছুটে বেড়াতে হয়। এই সময়ে রোগীর যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে যায়। বিশেষ করে তার রক্তে অক্সিজেন কমে যায়। অনেক ক্ষেত্রে এই অবস্থায় রোগীর মৃত্যু হচ্ছে।

বয়স্কদের নিয়ে তিনি বলেন, এতদিন শুনতাম বেশী বয়স্ক দের ঝুকি বেশী। শিলিগুড়িতে দেখলাম ৩০ বছরের নিচের কয়েক জনেরও মৃত্যু হয়েছে। যদিও অল্প দিনের মধ্যে অনেক রোগী নেগেটিভ হয়েছেন। এরকম উদাহরণও আছে। আমার আর একটি বিষয় মনে হয়েছে, তা হল একটু আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসা কর্মীদের সাহসিকতার সঙ্গে সেবা করা। আমি দেখেছি এদের ডেডিকেশনও সাহস। এদের জন্যেই আমার মতো অনেকে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। কিন্ত ওরাই বলছিল, সমাজের যে সন্মান বা মর্যাদা এদের পাওয়া উচিত তা কিন্তু তারা পায় না, তাঁদের সবসময় থাকতে হয় আতঙ্কের মধ্যে। এখানেই পশ্চিমবঙ্গের মতো একটি প্রগেসিভ রাজ্যের লজ্জা।

তিনি আরও বলেন, এটা ঠিক গত দু’মাসে আমি এবং আমার সহকর্মীরা বহু আক্রান্ত রোগীদের কাছে গেছি তার কারণ এদের একটু সাহস দেওয়া, আর প্রচুর তরুণ প্রজন্ম যারা সাহস নিয়ে এদের খাবারের ব্যবস্থা করছে তাঁদের কিছুটা উৎসাহিত করা। যে দিন আমার জ্বর হল সেদিনও তিনটি স্থানে গেছিলাম। তবে এক ফল ওয়ালার সঙ্গে কথা বলে দেখেছি ওর মধ্যে কখনোই মৃত্যু ভয়ের অনুভব ছিলোনা। সত্যি কথা বলতে কি এই ফল ওয়ালাই আমাকে এই বাঁচার লড়াইতে সাহস দিয়েছে। সতর্কতা ও সাবধানতার কোনো বিকল্প নেই। তবে মানুষ কী সামাজিক দায়িত্ব থেকে দূরে থাকতে পারে? আমার মনে হয়েছে এতো বাধার মধ্যেও এই রোগ মানেই মৃত্যু নয়, এরও চিকিৎসা আছে, ফ্রন্ট লাইনে থেকেও ফুল প্রটেকশন নিয়ে তা সম্ভব।

সম্পর্কিত পোস্ট