করোনার করালগ্রাস, সংগঠিত সেক্টরে জুলাই থেকে অগাস্টে কাজ হারিয়েছেন ১.৮৯ কোটি মানুষ

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ লকডাউনের পরবর্তী সময়ে প্রচুর মানুষকে কাজ হারাতে হতে পারে। এমনটা শুরু থেকে আঁচ করা হচ্ছিল। সেই ছবি ক্রমাগত স্পষ্ট হতে শুরু করে যখন অসংগঠিত অর্থাৎ আনঅরগানাইজড সেক্টরগুলিতে প্রচুর মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েন।

জুলাই মাসে সংগঠিত সেক্টরে কর্মরত বেতনভোগী কর্মীরাও কাজ হারালেন। যার সংখ্যা রীতিমতো আশঙ্কার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমির রিপোর্ট অনুযায়ী সংগঠিত সেক্টরে জুলাই থেকে অগাস্টে কাজ হারিয়েছেন ১.৮৯ কোটি মানুষ। যার মধ্যে শুধুমাত্র জুলাই মাসেই সেই সংখ্যা ৫০ লক্ষ৷

সম্প্রতি এনডিটি প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনা আতঙ্কে দেশের পর্যটন বিভাগগুলির অবস্থা শোচনীয়। গত কয়েক বছর ধরে ট্যুর এন্ড ট্র‍্যাভেলের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৪ কোটি কর্মী কর্মহারা হয়ে পড়েছেন।

শুধুমাত্র তাই-ই নয়, চলতি মাসের শেষে এমএসএমই সেক্টরে প্রায় ৪ কোটি কর্মহীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানানো হয়।

গত মার্চ মাস থেকে শুরু হয় লকডাউন। তখন থেকেই মুষড়ে পড়া অর্থনীতি নিয়ে একাধিক চর্চা শুরু হয়। যা এখনও অবধি জারি রয়েছে।

ক্রমশ ধুকতে থাকা অর্থনীতির জেরে প্রচুর মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বেন এটাও আশঙ্কা করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সিএমআইই এর নতুন রিপোর্ট সেই চিত্র তুলে ধরল।

সম্প্রতি এডিবি-আইএলও প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়, কোভিডের পর ভারতে এমন প্রভাব পড়তে চলেছে, যা থেকে মুক্ত হওয়া কঠিন।

ভারতে অসংগঠিত সেক্টরের তুলনায় সংগঠিত সেক্টরগুলিতে কর্মরত মানুষের সংখ্যা কম। মাত্র ২১ শতাংশ শ্রমিক এই সংগঠিত সেক্টর গুলিতে কাজ করে বেতন পান।

বিশেষজ্ঞদের মতে সংগঠিত সেক্টর গুলিতে কর্মসংস্থান না বাড়লে অসংগঠিত সেক্টর গুলিতে কর্মসংস্থান জোগানো সম্ভব নয়। অতিমারি ভারতীয় অর্থনীতিতে যে ক্ষতের সৃষ্টি করেছে তা সারিয়ে ওঠা এই মুহুর্তে সম্ভব নয়।

আগামীকাল ও পরশু লকডাউন, বাতিল একাধিক ট্রেন

কোভিড সংক্রমণের জেরে এবং লকডাউনের কারণে বহু মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে রওনা দিয়েছেন। আনলক পর্বে যে পরিমাণ কর্মসংস্থান গড়ে ওঠার কথা ছিল তা আতঙ্কের কারণে ভরপাই হয়নি।

যদিও গ্রামীণ এলাকাগুলিতে কিছু অসংগঠিত সেক্টরে কর্মসংস্থান হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও সেই সংখ্যা তুলনামূলক কম।

দেশজুড়ে বেকারত্ব ইস্যুতে সরব হয়েছে বিরোধীরা। গত কয়েক বছরে যে সমস্ত সরকারী ক্ষেত্রে চাকরির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল সেখানে নতুন করে নিয়োগ হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন আবেদনকারীরা।

এরই মধ্যে চাকরীর পরীক্ষা পদ্ধতিতে বদল আনতে ন্যাশনাল রিকুটমেন্ট এজেন্সি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর জানিয়েছেন, কমন এলিজেবল টেস্টের মাধ্যমে সমস্ত বিভাগে পরীক্ষা দিতে পারবে আবেদনকারীরা।

চাকরী পরীক্ষার বোঝা হাল্কা করতেই সরকার এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবী করেন তিনি। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে বেতনভোগ কর্মীদের এভাবে চাকরি হারানো মোটেই দেশের অর্থনীতির জন্য সুখকর নয়। বরং এতে অর্থনৈতিক মন্দা আরও দীর্ঘমেয়াদি হবে বলে দাবী অনেকের।

সম্পর্কিত পোস্ট