করোনা আতঙ্ক, সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে নয়া টোটকায় মাতলেন বিষ্ণুপুরের আমজনতা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ইতিমধ্যেই দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ থেকে দেশবাসীকে বাঁচাতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার।
একইসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও গ্রহণ করেছেন একাধিক কড়া পদক্ষেপ। বারবার প্রশাসনের তরফে গুজব না ছড়ানোর জন্য আবেদন জানানো হচ্ছে।
আবেদন জানানো হচ্ছে অন্ধবিশ্বাস বা কুসংস্কারের উপর ভরসা না করে অসুস্থ বোধ হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে।
তবে সরকারের ঘোষণাই সার। যতক্ষণ পর্যন্ত নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি না পাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো রোগই নির্মূল করা সম্ভব নয়, তার প্রমাণ পাওয়া গেল আবারও।
এবার করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে মুক্তি পাবেন কী করে সেই নিদানেরই দেখা মিলল বাঁকুড়ার অন্যতম প্রাচীন শহর বিষ্ণুপুরে।
শনিবার সকাল থেকে শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার গোপালপুর বাগদী পাড়ার বাসিন্দারা বাড়ির তুলসী তলা, দরজার সামনে এমনকি হরিমন্দির সংলগ্ন এলাকার মাটি খুঁড়ে পোড়া কয়লা নিয়ে তাতে গঙ্গাজল মিশিয়ে কপালে টিপ লাগাচ্ছেন।
এরপরে তুলসী আর থানকুনি পাতা খাচ্ছেন অনেকে। এতেই নাকি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা মিলবে!
রাতারাতি এমন টোটকা কোথায় পাওয়া গেল?
জানা গিয়েছে কেউ নাকি এই স্বপ্নাদেশ পেয়েছেন। কিন্তু কে সেই ব্যক্তি যিনি স্বপ্নাদেশ পেয়েছেন? তার সদুত্তর কিন্ত মেলেনি।বলা ভাল উত্তর দিতে পারেননি ওই এলাকার কেউই।
স্থানীয় বাসিন্দা মাম্পি বাগদী, টুম্পা বাগদীরা বলেন, “কেউ এবিষয়ে স্বপ্নাদেশ পেয়েছে শুনে আমরাও নির্দিষ্ট জায়গার কয়লা খুঁড়ে তাতে গঙ্গাজল মিশিয়ে কপালে টিপ নিয়েছি।”
বিষ্ণুপুর পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল মমতা কুণ্ডুকে এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। পুরোটাই মানুষের অন্ধবিশ্বাস বলে তিনি জানান।
এই বিষয়টি নিয়ে দ্য কোয়ারি ফোনে যোগাযোগ করে বাঁকুড়া জেলার তৃণমূল সভাপতি শুভাশিষ বটব্যালের সঙ্গে। তিনি জানান, এই বিষয়ে কোনো খবর তিনি পাননি। যদি পান তবে কুসংস্কার ও গুজব রুখতে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন। পাশাপাশি তিনি রাজ্যবাসীকে সতর্ক ও সচেতন থাকারও আবেদন জানান।
বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষার কান্তি ভট্টাচার্য বলেন, করোনা প্রতিষেধক এর আবিষ্কার এখনো পর্যন্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে এই বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে না দিয়ে তিনি বলেন, ক্রমশ মহামারীর আকার নিচ্ছে করোনা। তাই এর হাত থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন রকম পন্থা অবলম্বন করছেন আমজনতা। যদি এই টোটকা কোনো ভাবে কাজে লেগে যায় তাতে প্রাণে বাঁচবেন সকলেই।
বিষ্ণুপুর পুরসভার চেয়ারম্যান শ্যাম মুখোপাধ্যায় বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে করোনার কোনো সম্পর্ক নেই। এমনিই টিপ লাগানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও গুজব ছড়ানো হয়েছিল গোমূত্র পান করলেই করোনা থেকে মিলবে মুক্তি। সেই দাওয়াই মানতে গিয়েই আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকেই। এরপর বিষয় টি আরও কড়া হতে দমন করতে একাধিক ব্যবস্থা নেয় রাজ্য।