করোনা রোগীরা সাবধান, দুর্বল শরীরে বাসা বাঁধছে মারণরোগ মিউকরমাইকোসিস
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ করোনাভাইরাসের মধ্যেই মহারাষ্ট্রে নতুন আতঙ্ক মিউকরমাইকোসিস। ইতিমধ্যেই প্রাণ গিয়েছে আটজনের। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে প্রায় ২০০-র বেশি রোগী।
দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন গত দুদিন ধরে অন্তত ১০ জন রোগী এই রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। ২০২০ সালের শেষের দিকে বহু করোনা রোগী মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
গুজরাট হাসপাতালেও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের এই সংক্রমণ দেখা গিয়েছে। আমেদাবাদের হাসপাতালে ৬৭ জন কোভিড রোগীর শরীরে মিলেছে এই মারণ রোগের ছত্রাকের উপস্থিতি।
বিশিষ্ট চিকিৎসক পালমোনোলজিস্ট ডক্টর বিকাশ মৌর্য জানাচ্ছেন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস এক ধরনের বিরল ছত্রাকের সংক্রমণ। আরেক নাম মিউকরমাইকোসিস।
কিভাবে ছড়াতে পারে মিউকরমাইকোসিস?
- ডাক্তাররা বলছেন নিঃশ্বাসের সঙ্গে এর রেনু শরীরে ঢুকে যেতে পারে।
- শুধু তাই নয় নাক, মুখ এবং ত্বকের ছিদ্র দিয়ে সহজেই ঢুকে পড়তে পারে মানবদেহে।
- এরপর সংক্রমিত করে দেহ কোষগুলিকে।
- পচে যাওয়া গাছের পাতা, নোংরা-আবর্জনা, কোন প্রাণীর মৃতদেহ, মলমূত্র ইত্যাদি থেকে এই ছত্রাকের জন্ম নেয়।
- শরীর যদি দুর্বল হয় এবং রোগ প্রতিরোধ শক্তি ক্রমশ কমতে থাকে তাহলে এই ছত্রাকের রেনু শরীরে ঢুকলে তা মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
- মূলত ফুসফুস , চোখ , কিডনি এবং মস্তিষ্কের সংক্রমণ ছড়ায় এই ছত্রাক।
মিউকরমাইকোসিসে কাদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে?
- ডায়াবেটিস মেলিটাস ,ক্যান্সার এবং কিডনির রোগে আক্রান্তদের এই ছত্রাকজনিত সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি।
- এছাড়াও অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে এমন রোগী, দীর্ঘদিন সিরোসিসে ভুগছেন এমন রোগী ,অপুষ্টিতে ভোগা রোগীদের মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত সম্ভাবনা প্রবল।
- যাদের ফুসফুসের ক্রনিক রোগ রয়েছে তারাও আক্রান্ত হতে পারেন এই রোগে।
- আক্রান্ত হতে পারেন করোনা রোগীরাও।
এর লক্ষণ কি কি?
- শরীরে কোথাও কোনো ক্ষত থাকলে সেখানে এই ছত্রাক বাসা বাঁধে।
- ত্বকের কোষ, খাদ্যনালী সংক্রমিত করে রক্ত প্রবাহ বন্ধ করে দেয় নানা অঙ্গে।
- মুখ এবং চোয়াল ক্রমশ অসাড় হয়ে যায়।
- ত্বকে কালো কালো ছোপ পড়তে পারে।
- তৈরি হতে পারে জ্বালাপোড়ার মত ক্ষত।
- নাক বন্ধ হয়ে যায়।
- চোখ ফোলা ভাব এবং যন্ত্রনা।
- পালমোনারি মিউকর মাইকোসিসের ক্ষেত্রে জ্বর সর্দি কাশি বুকে ব্যথা এবং শ্বাসকষ্ট।
মিউকরমাইকোসিসের চিকিৎসা কি?
- মিউকরমাইকোসিসের ক্ষেত্রে নমুনা পরীক্ষা করলে সব সময় ধরা পড়ে না।
- rt-pcr টেস্ট এবং বায়োপসি প্রয়োজনীয়।
- সাধারণত অ্যাম্পোটেরিসিন বি থেরাপি করা হয়।
- চার থেকে ছয় সপ্তাহ ধরে চলে এই থেরাপি।
- কিছু ক্ষেত্রে সার্জিক্যাল থেরাপির প্রয়োজন পড়ে।
- মস্তিষ্কের কোষে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে সার্জিক্যাল থেরাপির মাধ্যমে একমাত্র এর প্রতিকার সম্ভব।