করোনার করাল গ্রাসঃ ভাঁড়ারে টান, স্থগিত সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ লকডাউনের জেরে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই তার প্রভাব পড়েছে রাজ্যের ভাঁড়ারে।এই পরিস্থিতিতে তাই নতুন নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। একইসঙ্গে স্থগিত করে দেওয়া হল নতুন প্রকল্পও।
অর্থ দফতর সূত্রে জানান হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বাজার থেকে বাড়তি অন্তত ২৫ হাজার কোটি ঋণ নিতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অতিরিক্ত ৪৩০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার অনুমোদন এসেছে। তাই ব্যয়সঙ্কোচ করা হচ্ছে।
অর্থ দফতরের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে-
এই পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রান্ত চিকিৎসা, বেতন-পেনশন, সরকারি ভাতা দেওয়ার প্রকল্প ছাড়া আর কোনও খাতেই খরচ করা যাবে না।
২০১৯-২০ আর্থিক বছরের যে টাকা ৫২টি দফতরের হাতে পড়ে রয়েছে, তা-ও অবিলম্বে অর্থ দফতরে ফেরাতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও, পূর্ত, সেচ, ক্ষুদ্র সেচের মতো পাঁচটি দফতরের স্বাধীন ভাবে খরচ করার ক্ষমতা ১০ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ১ কোটি টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুনঃ #FighAgainstCorona করোনা মোকাবিলায় ফেস-শিল্ড নিয়ে হাজির অ্যাপেল]
বাকি ৪৫টি দফতর, যারা এত দিন নিজেরা ১ কোটি টাকা খরচ করতে পারত, তাদের খরচের সীমা ১০ লক্ষে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এর চেয়ে বেশি খরচ করতে গেলে অর্থ দফতরের অনুমোদন নিতে হবে।
এমনকি সরকারি দফতরের জন্য গাড়ি, কম্পিউটার, আসবাবপত্র, টিভি, এসি মেশিন, ওয়াটার কুলার কেনা যাবে না।
কোনও বাড়ির সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া যাবে না। সরকারি খরচে খাওয়াদাওয়া, অতিথি আপ্যায়নও কার্যত বন্ধ রাখতে বলেছে নবান্ন।
নবান্নের তরফে গৃহীত সিদ্ধান্ত-
কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প, বিদেশি অর্থ সাহায্যে চলা প্রকল্পের সঙ্গে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, খাদ্যশ্রী, জয় বাংলা পেনশন প্রকল্প, সামাজিক সুরক্ষা যোজনা, শিক্ষাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, বাংলা ফসল বিমা যোজনা চালু থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর উল্লেখ-
২৫ হাজার কোটি টাকা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী যে চিঠি দিয়েছিলেন তাতে লিখেছিলেন, ‘অনেক রাজ্য করোনা পরিস্থিতির জেরে একই রকম আর্থিক সঙ্কটের শিকার।
লকডাউনে ব্যবসা বন্ধ। প্রভাব পড়েছে রাজ্যের রাজস্ব আদায়ে। এর মধ্যে আমরা সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও পেনশন দিয়েছি।’
রাজ্য সরকার কী কী সামাজিক খাতে বিপুল অর্থ ব্যয় করে থাকে মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তা-ও।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: শিশুকন্যা, ছাত্র, অসংগঠিত শ্রমিক, গরিব মানুষ, সংখ্যালঘু, তফসিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষের সামাজিক প্রকল্প। এছাড়াও আছে নয় কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা।
আরও পড়ুনঃ#Coronaupdate লকডাউন সত্ত্বেও দেশে ৪ হাজারেরও বেশি আক্রান্ত
তিনি চিঠিতে আরও লিখেছেন যে, “আপনার কাছে আবেদন জানাচ্ছি, কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের রাজ্যকে ২৫ হাজার কোটি টাকা দিক।”
শেষে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর মর্যাদা রক্ষার জন্য আমাদের এই সাহায্য করা উচিত। করোনাভাইরাস অতি মহামারীর সময় আমরা এই সাহায্য আশা করতেই পারি।”
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য-
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক রাজ্যে বেতন হয়নি। কিছু রাজ্য অর্ধেক, কিছু রাজ্য ৬০ শতাংশ বেতন দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গরিবের সংসার হয়েও সবাইকে মাইনে দিয়েছি। আমাদের সমস্যা রয়েছে। বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকা দেনা শোধ করতে হচ্ছে।’