‘আদালতের পর্যবেক্ষণের রিপোর্ট প্রকাশ করা উচিত সংবাদমাধ্যমে’, মাদ্রাজ হাইকোর্টের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জবাব সুপ্রিম কোর্টের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ দেশে হুহু করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় নির্বাচন কমিশনকে খুনীর সঙ্গে তুলনা করে তীব্র তিরস্কার করে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। মাদ্রাজ হাইকোর্টের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করে মামলা রুজু করে কমিশন। সেই মামলারই রায় ছিল সোমবার।
সুপ্রিম কোর্টের রায়েও ধাক্কা কমিশনের। সর্বোচ্চ আদালতের তরফে জানানো হয়েছে হাইকোর্টের সমালোচনাকে ডাক্তারের কড়া ওষুধ হিসাবে ভেবে দেখা উচিত। ডাক্তার তেতো ওষুধ দেয় ভালোর জন্যই।
চলতি বছরর ২৬ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনকে তুলনা করেছিলেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঞ্জীব বন্দোপাধ্যায়। তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রতিষ্ঠানের মত কাজ করেছে। করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণ একমাত্র নির্বাচন কমিশন। শুধু তাই নয় সঠিক পদক্ষেপ অবিলম্বে গ্রহণ না করলে ভোট গণনা বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার শীর্ষ আদালতের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আদালতের বিচারপতিদের মৌখিক পর্যবেক্ষণ সংবাদমাধ্যমে অবশ্যই প্রকাশ করা উচিত। কারণ আদালতে যে কোনো আলোচনা জনস্বার্থে করা হয়। কিভাবে বিচারপতি এবং আবেদনকারীর মধ্যে কথোপকথন এগোচ্ছে, বিচারপ্রক্রিয়ার গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে সে কথা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে গেলে সংবাদমাধ্যমে তা প্রকাশ করতেই হবে। এতে বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে আমজনতার।
এদিন মাদ্রাজ হাইকোর্টের বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে শুনানিতে কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী বলেন অতিমারির মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন করার সবরকম প্রচেষ্টা চালিয়েছে কমিশন। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী যদি দু লক্ষ লোকের সমাবেশ করেন তবে কমিশন জনতার দিকে আঙুল তুলতে পারে না। এই দিকটা খতিয়ে দেখার কাজ বিপর্যয় মোকাবিলা কমিটির।
বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চ সেদিন জানিয়েছিলেন কোভিড পরিস্থিতিতে ভোটের মধ্যেও সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত জনস্বাস্থ্যকে। দুঃখের বিষয় কোন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান কে সেই গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি আমরা।নাগরিকরা সুরক্ষিতভাবে বেঁচে থাকলেই গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সুরক্ষিত নেই নাগরিকরা। আগে জীবন পরে সবকিছু।
করোনার শৃঙ্খল ভাঙতে লকডাউনের পথে কেন্দ্র ! সোমবারই সম্ভবত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
অবশেষে এদিন দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানান, আমরা হাইকোর্টকে নিরুৎসাহ করতে চাইনা। কোভিড পরিস্থিতিতে নিরন্তর কাজ করছে। তাই এই পরিস্থিতিতে হাইকোর্ট খুব কাছ থেকে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
মাদ্রাজ হাইকোর্টের বক্তব্যকে সমর্থন না করলেও, সেই পক্ষ টেনেই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ জানায় রাগ এবং হতাশা থেকেই এই ধরনের মন্তব্য বেরিয়ে আসে।আর অনেক সময় তা তেতো ওষুধের মতো কাজ করে।
প্রসঙ্গত, এদিনই দেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্ততপক্ষে দু সপ্তাহ লকডাউনের কথা কেন্দ্র সরকারকে ভাবনা চিন্তা করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সম্ভবত এই বিষয়ে সোমবারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে এখনো পর্যন্ত জানা গিয়েছে।