“আগে মানবিক হও পরে কমিউনিস্ট হবে”…
|| নয়ন রায় ||
৭৮-এ পা দিয়েছেন কান্তি গাঙ্গুলি। ‘ঝড়ের আগে কান্তি আসে..’-নিরুপায় হয়ে এত ভালো ক্যাপশনের লোভ সামলাতে পারলাম না। আয়লা, ফনী, বুলবুল, আমফান, বর্তমানে ইয়াস্ ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড দীঘা ও সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। তাই ৭৮-র যুবক কান্তি হল সুন্দরবন এলাকার মানুষের ভরসা।
বামপন্থী ও ডানপন্থী নিন্দুকেরা বলে থাকেন ‘হেরো কান্তি’। তাতে কিছু যায় আসে না। কারণ বাম জামানায় সুন্দরবন উন্নয়ন দপ্তর নিজের মত করে সাজিয়ে ছিলেন। কোন মাটিতে ম্যানগ্রোভ হয়, কোন জলে মাছ হতে পারে বা আজকে দক্ষিনের বাতাস হাওয়া হলে ঝড় হবে কিনা এটা তো কান্তি বলতে পারে।
কি দরকার বলুন তো ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর? প্রাক্তন বিধায়ক হয়ে একটা পেনশন পান। আসলে কি জানেন ৭৮ –এর কান্তি যেকোনো সিস্টেমের কাছে বড় সম্পদ। এই সমাজে সুন্দরবনে আরও যদি ১০০ কান্তি থাকতো তাহলে মানুষগুলো বাঁচত।
তাঁর সামাজিক কাজকর্ম নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ও দলের বিধায়কদের হিম্মত নেই কান্তিকে কাদায় নামাবে। বরং শাসকদলের অনেক বিধায়কের কান্তি গাঙ্গুলি হল পরামর্শদাতা। কান্তি গাঙ্গুলির একটা বিখ্যাত লাইন যেকোনো কমিউনিস্ট নেতাকে লজ্জায় ফেলে দেবে। লাইনটা সময়ের সঙ্গে বর্তমান। “আগে মানবিক হও পরে কমিউনিস্ট হবে..” ।
কি দারুন কথা বলুন তো শরীরের শিরা-উপশিরা দিয়ে রক্ত ধমনীতে যেন ঠান্ডা বাতাস বয়ে যায়। জবাদি অনেকদিন কান্তি দাকে ছেড়ে চলে গেছেন। সুন্দরবনের বাদাবনের কান্তিকে নিয়ে কেউ কটু কথা বললে একেবারেই ভাল লাগেনা। এটা আমাদের প্রতিবেদন নয়।কিছুটা ভালোবাসা ও এক বুক শুদ্ধ বাতাস বলতে পারেন। এই কলিযুগে এরকম কান্তিকে তো মিউজিয়ামে রাখা উচিত।
অনেকে বলেন জ্যোতি বসুর মস্তিষ্কে অন্য কোন সেল আছে। আবার কিছু কমিউনিস্ট নেতা বলে থাকেন, কান্তি গাঙ্গুলির মস্তিষ্কে নাকি ম্যানগ্রোভ কিভাবে বেড়ে ওঠে তার ছক আছে। শুনে বেশ হাসিও আসে। কি অদ্ভুত সরল ব্যাখ্যা।
করোনা ও ইয়াসে বিপন্ন জনজীবন, কেন্দ্র-রাজ্য তরজায় জাঁতাকলে পিষছে আমজনতা
কান্তি দা, অপরাধ নেবেন না। বাম জমানা থেকে আপনাকে দেখছি। একজন রাজনৈতিক পাহারাদার হলেও সুন্দরবনের আপনি রাতের রানার। নিঝুম রাতে সুন্দরবনের আকাশ অন্ধকারাচ্ছন্ন হলেও আপনার কর্মনিষ্ঠার ছটা দিনের ঊষার মতো।আপনি ভাববেন বাড়তি কথা বলছি। না বলছি না, নিজের শিরদাঁড়াকে শক্ত করে বর্তমান সময়ের উপর ভর করে এই প্রতিবেদন।
সুন্দরবন বলতে আমরা বুঝি নদীমাতৃক দেশ। বেলে ও দোয়াঁশ মাটি। একদিকে সমুদ্রের নোনা জল। অন্যদিকে মিষ্টি জল। এইসব প্রাকৃতিক চরিত্র। কিন্তু যদি বলি সুন্দরবন মানে ৭৮-র কান্তি বুড়ো তাহলে আপনি কি রেগে যাবেন? না না রাগবেন না। যেটা বাস্তব তাই তো লিখলাম।
এত বেশি বুড়ো বুড়ো বলছি আমার পিঠের চামড়া কেউ তুলে না নেয়। বুড়ো বলছি বলে রেগে যাবেন না। তাহলে বলি ৭৮-র যুবক কান্তি গাঙ্গুলি। বামপন্থী আন্দোলনে সুন্দরবনের বাদাবন থেকে আসা এই নেতার বাংলায় আবির্ভাব হয়েছিল। আমার মনে হয় এটা ঠিক ব্যাখ্যা।
কান্তি বুড়ো কি এনার্জি মাইরি আপনার। এসব লিখছি মানে অনেকে বলবেন দুদিনের দুধের সাংবাদিক কান্তি গাঙ্গুলিকে নিয়ে মশকরা করছেন। আমি বলব বেশ করছি। তাই কান্তি বুড়ো আগামী সোনালী দিনের সূর্যের মতো।